রাতে ঘুমানোর সময় বুকে ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

রাতে ঘুমানোর সময় বুকে ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

রাতে ঘুমানোর সময় বুকে ব্যথার কারণ:

প্লুরাইটিস
প্লুরাইটিস রোগের যখন হলো বুকের ডান বা বামপাশে ব্যথা হওয়া। প্লুরাইটিস আক্রন্ত ব্যক্তির ফুসফুসের চারপাশে তরল পদার্থ উৎপন্ন হতে থাকে। তাতে ঘুমের সময় সমতল ভাবে ঘুমালে প্রদাহ সৃষ্ট হতে পারে। কিন্তু উপর ভাবে চিত হয়ে গুমালে ব্যাথা যন্ত্রনায় তীব্র হতে পারে।  

বুকে আঘাত পেলে 
যদি কোনো কারণে আপনি বুকের হাড়ে আঘাত পান তাহলে বুক লড়াচড়ার সময় আপনি ব্যথা অনুভব করতে পারেন। তাছাড়া তা ঘুমের সময় আরো বেশি ব্যথা অনুভব করতে পারেন, যদি আপনি ঘুমের মধ্যে লড়াচড়া বেশি করেন তাহলে ব্যথা আরো তীব্র হতে পারে। 

এনজিনা
এনজিনা পেক্টোরিস আক্রান্ত ব্যক্তির হৃৎপিণ্ডের রক্ত চলাচলের বাধা সৃষ্ট করে যার ফলে হার্ট অতিরিক্ত সংকুচিত বা প্রসারিত হতে থাকে। এর ফলে হৃৎপিণ্ডের পেশীতে অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে। ঘুমানোর সময় হৃৎপিণ্ডে আরো বেশি  সংকুচিত বা প্রসারিত হয় তাই তখন বেশি ব্যথা করে। 

অতিরিক্ত মোটা 
শরীর অতিরিক্ত মোটা কিন্তু হরমোন বা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে বুকে ব্যাথা হতে পারে, বুকে ব্যাথা সবসময় ঘুমানোর সময় বেশি হয়ে থাকে। টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাব হলেও বুকে ব্যাথা হতে পারে।   

অ্যাসিড রিফ্লাক্স 
যদি কেউ গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স রোগে ভুগেন তাহলেও রাতে বুকে ব্যথা হতে পারে। রিফ্লাক্স আক্রান্ত ব্যক্তির বুক  জ্বালাপুরা সৃষ্ট করে। কোনো ব্যক্তির পাকস্থলীর অ্যাসিড যদি খাদ্যনালীতে  সঠিক ভাবে না পরে তখন এই রোগের বিস্তার ঘটে। ঘুমের সময় সমস্ত অঙ্গ বিশ্রাম অবস্থায় থাকার কারণে এবং খাদ্যনালীতে  অ্যাসিড না পড়ার কারণে পাকস্থলীতে উৎপাদিত অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় ফলে বুকের ব্যথা আরো বেড়ে যাই।

রাতে ঘুমানোর সময় বুকে ব্যথার প্রতিকার

ঘুমের সময় বুকের ব্যথা বন্ধ করার ঘরোয়া পদ্ধতি :
বুকের ব্যথা কম বা বেশি থাকলে অবশ্যই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কার্ডিওলজিস্টস বিশেষজ্ঞ একজন ডাক্তার দেখাবেন এবং ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক নিচের পরামর্শ গুলি মেনে চলবেন। নিজের ইচ্ছা মতো বা ফার্মেসির ডাক্তার ধারা কোনো ওষুধ খাবেন না তাতে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকতে পারে। নিচের পরামর্শ গুলি সাথে সাথে আপনার বুকের ব্যথা ভালো করবে না তবে ধীরে ধীরে পরামর্শগুলি মেনে চললে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। যদি হঠাৎ ব্যাথা বেশি মনে হয় বা বেশি ব্যথা হতে পারে তাহলে জরুরী ডাক্তার দেখান।

শুয়ে বা দাঁড়িয়ে পড়ুন
হার্টে ব্যথা হলে তাৎক্ষণিক অনেক সময় শুয়ে বা দাঁড়িয়ে থাকলে ব্যথা কম হয়। রিফ্লাক্সের কারণে বুকে ব্যথা হলে দাঁড়িয়ে পড়ুন। 

অ্যাসপিরিন
বুকে ব্যথা থাকলে অ্যাসপিরিন খেতে পারেন তা ব্যথা উপশম করতে পারে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন। 

হলুদে দুধ
হলুদের সাথে দুধ মিশিয়ে খেলে বুকের ব্যথা কমে আসে কারণ হলুদের মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি থাকে যা বুকের প্রবাহ হ্রাস করে। 

রসুন
হার্টের ভিতরে ইনফেকশন দূর করতে রসুন বেশ উপকারী। এক গ্লাস গরম দুধের সাথে মিশিয়ে অথবা এমনেই চিবিয়ে রসুন খেতে পারেন। 

কাজুবাদাম
যারা অ্যাসিড রিফ্লাক্স রোগে ভুগছেন তাদের জন্য কাজুবাদাম বেশ উপকারী। কারণ কাজুবাদামে চর্বি থাকে। আমরা জানি চর্বি অ্যাসিডকে ধ্বংস করতে পারে। কয়েকটি বাদাম এক কাপ দুধের সাথে মিশিয়ে ঘুম থেকে উঠে খেতে পারেন। 

আদা
আদা অনেকটা ওষুধির মতো মানুষের উপকার করে থাকে। আদা খেলে বুকের ব্যথা, বমি, এবং পেটের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। 

বরফ প্যাক
যদি আপনার বুকে কোনো কিছুর আঘাতের কারণে ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে আপনি আপনার ব্যথার জায়গায় বরফ প্যাক লাগাতে পারেন।  আঘাতের কারণে টিস্যু গুলি ছিড়ে যাই যার ফলে ব্যথা অনুভব হতে পারে। আক্রান্ত স্থলে সরাসরি বরফ বা বরফের টুকরো একটি কাপড়ে বা পলিথিনে পেঁচিয়ে  আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন। 

গরম পানি
গরম পানি পেট ফোলা বা গ্যাস দূর করতে সাহায্য করে। অনেক সময় পেটে গ্যাস হলে বুকে জ্বালা পুড়া হতে পারে। তাছাড়া আপনি গরম পানির বদলে চাও খেতে পারেন। মনে রাখবেন গরম পানীয়  হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। 

রাতে অনেকসময় ঘুমানোর সময় বুকে ব্যথা হয় যার কারণ এবং বুকের ব্যথার প্রতিকার করার উপায় এখানে বণনা করা হলো।