ড্রাগন ফলের অজানা ১৪টি উপকারিতা - Bangla Dragon Fruit Health Benefit

ড্রাগন ফলের অজানা ১৪টি উপকারিতা - Bangla Dragon Fruit Health Benefit

ড্রাগন ফল ফণীমনসা প্রজাতির এক ধরণের ফল। এক এক দেশে এই ফল এক এক নামে পরিচিতি। ভিয়েতনামে এর নাম মিষ্টি ড্রাগন ফল, থাইল্যান্ডে এর নাম স্ফটিক, চিনে এর নাম ড্রাগন মুক্তার ফল বা আগুনে ড্রাগন ফল এবং বাকি বিশ্বের বাকি দেশ গুলো ড্রাগন ফল নামেই সবচয়ে বেশি পরিচিত। খেতে সুস্বাধু অনেকটা লিচুর মতো। ভিটামিনে ভরপুর থাকায় একে সুপারফুড হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এই ফল খেলে আপনি পাবেন ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার, ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, প্রোবায়োটিক এবং ওমেগা-৩। নিচে ড্রাগন ফলের কিছু উপকারিতা সম্পর্কে বলা হলো :-


ওজন কমাতে আদর্শ খাবার ড্রাগন ফল-
ড্রাগন ফলে কম পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে। যার ফলে আপনার শরীলে চর্বি বাড়ে না, আপনাকে সুস্থ ও স্বাস্থবান রাখে। ড্রাগন ফল আপনার সঠিক ওজন বজায় রাখে। এটি আপনার দাঁতকে শক্তিশালী ও সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। 


হার্টকে সুস্থ রাখতে ড্রাগন ফল-
বর্তমানে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো কার্ডিওভাসকুলার রুগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সমস্যা দূর করতে ড্রাগন ফল ব্যাপক উপকারী। ফলটির মধ্যে আশ্চর্যজনক শক্তি রয়েছে যা মানুষের পুরোনো খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং নতুন ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। হার্টকে ভালো অবস্থায় রাখতে এর মনোস্যাচুরেটেড সাহায্য করে, আর মনোস্যাচুরেটেড উপাদান সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ড্রাগন ফলে। ড্রাগন ফলে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৯ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা হার্টের জন্য স্বাস্থ্যকর। তাছাড়া এটি হৃদরোগ, জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা এবং বিষণ্নতা ভাব দূর করতে সাহায্য করে। 

ড্রাগন ফল হজম শক্তি কে আরো শক্তিশালী করে-
ড্রাগন ফল আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি এবং পাকস্থলীর প্রক্রিয়া পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এটিতে অতিরিক্ত ফাইবার থাকে দুর্বল হজম শক্তিকে শক্তিশালী করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যে থেকে মুক্তি লাভ করে। শরীরকে শক্তিশালী করতে বেশি বেশি ড্রাগন ফল এবং মাংস খান এতে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন থাকে ।  


ক্যান্সার প্রতিরোধক খাবার ড্রাগন ফল-
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত খাবার আপনাকে রাডিক্যালস মুক্ত এবং ক্যান্সার উৎপাদনকারী উপাদান হ্রাস করে। ড্রাগন ফল ৯০% অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত ফল। 


ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আর্দশ খাবার ড্রাগন ফল-
ড্রাগন ফলে অতিরিক্ত পরিমাণে ফাইবার যা আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ড্রাগন ফল রক্তে চিনির মাত্রা কমায় এবং শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করে। ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিয়মিত ড্রাগন ফল খান। 


ত্বকের ছিদ্র ছিদ্র গর্ত দূর করতে ড্রাগন ফল-
ড্রাগন ফলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক টানটান রাখে এবং তরুণতা ভাব মুখে বজায় রাখে। তাছাড়া আপনি ইচ্ছা করলে ফেস মাস্ক তৈরি করতে মধুর সাথে ড্রাগন ফলের টুকরো মিশিয়ে প্রাকৃতিক মুখের অ্যান্টি এজিং মাস্ক তৈরি করতে পারেন।


চুল পরা রোধে ড্রাগন ফল-
পাকা চুল রোধ চিকিত্সা করতে ড্রাগন ফল একটি চমৎকার এজেন্ট। ড্রাগন ফলের রস মাথার ত্বকে ৩০ মিনিট লাগিয়ে যেকোনো শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন এটি আপনার পাকা চুল রোধ করবে চুলকে সুস্থ রাখবে। এটি চুলের কোষ গুলো কে পুনরাবৃত্তি করবে ফলে আপনার চুলগুলি অক্সিজেন পাবে এবং মসৃণ ও স্বাস্থ্যকর হবে। 


হাড়ের জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যাথা হলে ড্রাগন ফল-
ড্রাগন ফল আর্থ্রাইটিস সমস্যা থেকে বিস্তার লাভ করে। আর্থ্রাইটিস হলে শরীরের জয়েন্টগুলিতে প্রচুন্ড ব্যথা এবং অচলতা সৃষ্টি হয়। আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ড্রাগন ফল যোগ করুন এটি আর্থ্রাইটিস সমস্যার সাথে লড়াই করতে আপনাকে সহায়তা করবে। ড্রাগন ফল আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ব্যথা কমায় বলে ডক্টররা এর উপকারিতা দেখে এটিকে প্রদাহবিরোধী ফল বলে উপাধি দিয়েছেন। 


মুখের ব্রণের সমস্যা দূর করতে ড্রাগন ফল-
ব্রণ সমস্যা দূর করতে ড্রাগন ফল ব্যাপক কাৰ্যকর।  ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি থাকায় এটি টপিকাল মলম হিসাবে কাজ করে। এই মলম তৈরী করতে প্রথমে ড্রাগন ফলের ছোট টুকরো নিয়ে বেল্যান্ডের এ পেস্ট তৈরী করুন পরে মুখের আক্রান্ত অ্যাস্থানে লাগান। প্রতিদিন সকালে ও রাতে ব্যবহার করলে সেরা ফলাফল পাওয়া যাবে।


রোদে পোড়া ত্বক সুস্থ করতে ড্রাগন ফল-
মুখে রোদে পোড়া ত্বক দূর করতে শসার রস, মধু এবং ড্রাগন ফলের টুকরো এক সাথে মিক্সড করে ব্লেন্ডারে পেস্ট তৈরী করে মুখে লাগালে ত্বকে দাগ প্রশমিত হবে। ড্রাগন ফলে থাকা ভিটামিন বি৩ ত্বককে ময়শ্চারাইজ করে এবং রোদে পোড়া আক্রান্ত স্থানকে ঠান্ডা রাখে। 


হাড়কে মজবুত ড্রাগন ফল-
ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমানে ম্যাগনেসিয়াম থাকে অন্যানো ফল থেকে। এটি হাড়কে মজবুত করে এবং স্বাস্থ্য বান রাখে। ৩৫ বছর এর অধিক বয়সী মহিলাদের যারা পোস্টমেনোপজাল সমস্যায় ভুগছেন তাদের অধিক পরিমানে ড্রাগন ফলে খেতে হবে। 


চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে ড্রাগন ফল-
দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে বেগুনি ড্রাগন ফলে করতে চমৎকার বিটা ক্যারোটিন থাকে। গাজর এর সকল ভিটামিন বেগুনি ড্রাগন ফলে থাকে তাই আপনি গাজর পছন্দ না করলে বেগুনি ড্রাগন ফল খেতে পারেন। 


কিডনিকে সুস্থ রাখতে ড্রাগন ফল-
বেগুনি ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমানে পটাসিয়াম পাওয়া যায়। পটাসিয়াম কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং কিডনিতে পাথর জমতে দেয় না। তাই কিডনিকে সুস্থ রাখতে বেগুনি ড্রাগন ফল খান। 


অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধক ফল ড্রাগন ফল- 
আমাদের শরীরে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের অভাব হলে আমরা অস্টিওপোরোসিস রোগে ভোগী। অস্টিওপোরোসিস রোগ দূর করতে বেগুনি ড্রাগন ফল ব্যাপক কাযকরী। কারণ বেগুনি ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস রয়েছে। যেসব শিশুরা অস্টিওপোরোসিস রোগে বুগছে তাদের বেগুনি ড্রাগন ফল দারুন উপকারী। 


তাই পরিশেষে বলা যেতে পারে ড্রাগন ফল আমাদের জন্য খুবই উপকারী। তবে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে তাই অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খাওয়া ঠিক নয়।