নদীর রাজা দ্যা জায়েন্ট ফিস

নদীর রাজা দ্যা জায়েন্ট ফিস

কুমির হলো জলের সিংহ। কুমির নদীর মাছ খায় এবং সুযোগ পেলে অন্য যেকোনো প্রাণীকে ধরে খায়। কিন্তু কুমিরও কিছু প্রাণীর খাদ্য। আজকে আমরা সে ধরনের একটি প্রাণীর নাম জানব। এক ধরনের ভয়ঙ্কর মাছ আছে যা আসলে কুমিরও প্রাণ বাঁচাতে এদিক ওদিক ছুটে বেড়া তে থাকে। কারণ এই মাছগুলো খুবই ভীতিকর বড় বড় চুয়াল ওয়ালা। সময়ে সময়ে এরা বহু কুমির খেয়েছে। এই মাছটি এতটাই ভয়ঙ্কর যে সুযোগ পেলে মানুষকে ছেড়ে যাবেন না। এই মাছটিকে টাইগার ফিশ নামে ডাকা হয়। 

মূলত গভীর সমুদ্রে এদের জন্ম কিন্তু সাগরের সঙ্গে মিলিত হওয়া নদীগুলোতে ভেসে এসে নদীর গভীরেই বাসস্থান গড়ে তুলে। আফ্রিকার কঙ্গো নদীতে এই টাইগার ফিশকে দেখে ছিলেন এক জেলে। তিনি শখের বশতো আফ্রিকার কঙ্গো নদীতে বড়শি ফেলায়েন। তখনি ধরা পড়েছিল এই দৈত্যাকার মাছটি যা তখনকার সময়ে ভাইরাল ছিল সংবাদটি। টাইগারফিশটিকে ধরা হয়েছিলো বেশ কষ্ট করেই। একে সহজে কাবু করা যায়নি। প্রচুর ক্ষিপ্র, দ্রুতগতির এবং শক্তিশালী এ মাছটি তাকে ধরতে ৩ জন মানুষ এসে ছিল। মাছটি শিকারকে টার্গেট করা মাত্রই ধরে ফেলে। এরা নদীর যে অংশে বাস করে সে অংশটি ভয়ঙ্কর হয়ে থাকে। বাঘ মানে বাঘ। আর বাঘের আচরণ তো জানেনই। 

এই মাছগুলো ঠিক পানির বাঘের মতো। এই টাইগারফিশ আবার অনেকটা হাঙরের মতো। এই বাঘ মাছ আকারের দিক থেকে অন্যান্য মাছের চেয়ে অনেক বড়। ৩২ টি ধারালো দাঁত আছে এই মাছের। টাইগারফিশ পানির দানব। দৈত্যাকার এই মাছ, শরীর এবং দাঁত বাঘের আচরণ করে বলেই একে স্থানীয়রা টাইগারফিশ নাম দিয়েছে। এই মাছের ফুর্তি শক্তি দেখেই এর একটি রাজকীয় নাম দেওয়া হয়েছে সব মিলিয়ে। টাইগার ফিশের দাঁত উপরের ও নিচে সমানভাবে সাজানো এবং রেজারের মতো ধারালো। একটি প্রাপ্ত সম্পূর্ণ কুমির সহজেই দাঁত দিয়ে ছিড়ে ছিড়ে খেয়ে ফেলতে পারে। 

এই মাছ গুলো জঙ্গলের বুনো জংলী প্রাণীর মতো হয়ে থাকে। পানিতে কোনো কিছু নড়াচড়া দেখলেই সাথে সাথে দাঁত বসিয়ে দেয়। এসব মাছ যেখানে থাকে কুমির সেখানে মৃত্যুর ভয়ে ভুলেও যাই না। মাছগুলো ছোট অবস্তায় দল বেঁধে শিকার করে। মাছ গুলো তাদের মায়েদের সাথেই ঘুরে বেড়াই এবং তাদের কিভাবে শিকার করতে হয় তা শিখাই। আর মাছ গুলো বড় হলে আস্ত দানবে পরিণত হয়। শুধু তাই নয, পরে তারা নিজেদের মধ্যেই মারামারি করে একজন আরেকজনকে খেয়ে ফেলে। তবে অনেক সময় চার-পাঁচটি বাঘ মাছ একসঙ্গে খাবারের খোঁজ করে। শিকার ধরা পাওয়া মাত্রই শুরু হয়ে যায় খাদ্য প্রতিযোগিতা কে বেশি খেতে পারে। এরা খাবার এক সঙ্গে ধরলেও খাবার ভাগাভাগি করতে এর পছন্দ করে না। 

এরা পারলে একাই সব খেয়ে ফেলে। পরে খাবার ভাগাভাগি নিয়ে একে অপরকে কামড়াতে থাকে এবং লেজ খেয়ে ফেলে। কিছু টাইগারফিশ সম্পূর্ণ ধূসর রঙের এবং শরীরের চারপাশে কালো রেখা থাকে। আবার অনেক টাইগারফিশের  সাদা, বাদামী বা ধূসর দাগ থাকে। এরা ৬ থেকে ৭ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। এদের ওজনও কম নয়। এক একটি প্রাপ্ত টাইগারফিশ ৫০ কেজি ওজনের  বেশি হতে পারে। এদের শিকার ধরার বৈচিত্র্য বাঘের মতো। বাঘ তার শিকারকে টার্গেট করে পিছন থেকে দ্রুত গতিতে যেয়ে শিকার ধরে, টিক তেমনি টাইগারফিশ শিকার কে একই ভাবে ধরে। টাইগার ফিশের এক ধরনের গ্যাসে ভরা থলি থাকে। এই থলির মাধ্যমে তারা শিকারের অবস্থান চিহ্নিত করে। ছোট মাছ গুলো শিকারের সময় সাবধানে নিরাপদ দূরত থেকেই আক্রমণ করে। আর বড় প্রাপ্ত বয়স্ক মাছ গুলো কোনো বাচ বিচার মানে না সরাসরি আক্রমণ করে বসে। সমুদ্রে থাকাকালীন এরা হাঙ্গরকেও ছেড়ে কথা বলে না। সমুদ্রে যাকে পায় তাকেই খেতে চাই। কাউকেই ছেড়ে দেয় না তবে এরা কুমির এবং নদীর মাছ খেতে ভালোবাসে বলে নদীতে চলে আসে।