নিজেই তৈরী করছে অক্সিজেন সমুদ্রে পৃষ্টে ঘটলো এক বিরল ঘটনা

নিজেই তৈরী করছে অক্সিজেন সমুদ্রে পৃষ্টে ঘটলো এক বিরল ঘটনা

মানুষের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য সূর্যের আলো অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন-ডি, হাড়কে মজবুত করা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সূর্যের আলো আমাদের দরকার। সূর্য পৃথিবীর প্ৰত্যেক জীবন্ত বস্তুকে জীবনের জন্য মৌলিক তিনটি প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে :  অক্সিজেন, পানি এবং খাদ্য। সূর্য নিউক্লিয়ার ফিউশনের মাধ্যমে সমস্ত উপাদানের পরমাণু তৈরী করতে পারে এমনকি অক্সিজেনও। পানি তৈরী করতে সূর্য অক্সিজেন এবং হাইড্রোজেনকে একত্রে তাপ দিলে পানি তৈরী হয়। কিছু বছর আগে বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীতে অক্সিজেন থাকার জন্য সূর্যের আলো খুবই প্রয়োজন, এটি ছাড়া অক্সিজেন উৎপাদন করা সম্ভবই না। কিন্তু ডেনমার্কের গবেষকরা আবিষ্কার করেছে সমুদ্রপৃষ্ঠের গভীরে সূর্যালোক ছাড়াই অক্সিজেন উৎপন্ন সম্ভব। তারা বলেছেন সমুদ্রপৃষ্ঠের গভীরে কিছু অণুজীব রয়েছে যারা সমুদ্রপৃষ্ঠে কোনো এক উপায়ে অক্সিজেন উৎপাদন করে। এই পৃথিবীতে অক্সিজেন উৎপাদনকারি একটি প্রতিষ্টান হলো উদ্ভিদ। উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে অক্সিজেন তৈরী করে এবং তার জন্য সাহায্য করে সূর্য। সূর্যের আলো ছাড়া পৃথিবীতে অক্সিজেন তৈরী হতে পারে না সে সম্পকে আমরা সবাই জানি। বিজ্ঞানীদের অবাক করে আবিষ্কার সূর্যের আলো ছাড়াই অক্সিজেন উৎপন্ন সম্ভব। তাও আবার গভীর সমুদ্রে পৃষ্টে। সেখানে কিছু অণুজীব পাওয়া গেছে যারা নিজেদের জীবন যাপনের জন্য নিজেরাই অক্সিজেন তৈরী করে। 

সমুদ্রপৃষ্ঠের একটি জায়গায় তাদের প্রচুর পরিমানে রয়েছে। মহাসাগরে অণুজীব গুলো নাইট্রোজেন চক্রের খুবই দরকারি। কিন্তু এর জন্য দরকার প্রচুর পরিমানে অক্সিজেন কারণ নাইট্রোজেন চক্রের জন্য প্রতিটি নাইট্রোজেনের জন্য দুই অনু অক্সিজেন দরকার। কিন্তু অন্ধকার এই গভিরে অক্সিজেন আসে কথা থেকে?। পরে বিজ্ঞানীরা মনে করে এগুলো কোনো অজীব কোষ এমনেই তারা একসাথে জড়ো হয়েছে। কিন্তু যখন তাদের স্যাম্পল পরীক্ষা গারে নিয়ে আনা হয় তখন আর বিজ্ঞানীদের কোনো কিছু বলার রইলো না। একটায় প্রশ্ন কিভাবে এই অণুজীব গুলো অক্সিজেন পাই সবার একই প্রশ্ন। 

খুব কমপরিমানের অণুজীব আছে পৃথিবীতে যারা সূর্যালোক ছাড়াই অক্সিজেন উৎপন্ন করতে সক্ষম এবং তাদের সমুদ্রপৃষ্ঠের গভীরে নির্দিষ্ট আস্তানায় কেবল তারা বসবাস করে। কিন্তু সমুদ্রের নাইট্রোসোপুমিলাস মেরিটিমাস এবং অ্যামোনিয়া অক্সিডাইজিং আর্কিয়া অণুজীব পরিবেশের নাইট্রোজেন চক্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই এই অণুজীব গুলোর অক্সিজেনের দরকার হয়। দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা জানেন যে জীবাণুগুলি অক্সিজেনের ছাড়াই সেখানে বেঁচে আছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বুজতে পারছিলেন না যে তারা সমুদ্রপৃষ্ঠের গভীরে কিভাবে অক্সিজেন পায়। অবশেষে গবেষনা করে পাওয়া গেছে আসলে এই অণুজীবগুলি তারা নিজেরাই অক্সিজেন উৎপন্ন করতে সক্ষম। 

ল্যাবে গবেষনা করে জানা গেছে, অন্ধকার ঘরে প্রথমে নাইট্রোসোপুমিলাস মেরিটিমাস এবং অ্যামোনিয়া অক্সিডাইজিং আর্কিয়া অণুজীব  পানিতে থাকা অক্সিজেন তারা তাদের জীবনের জন্য ব্যবহার করছে কিন্তু পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা কমার বদলে উল্টো অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ছেই। এতেই বুঝা যায় এই অণুজীব গুলি অক্সিজেন তৈরি করতে সক্ষম। কিন্তু এই অক্সিজেনের মাত্রা এতটাই কম যে পৃথিবীতে এর কোনো প্রভাব ফেলবে না কিন্তু অণুজীব গুলির নিজেদের জন্য এই পরিমান যথেষ্ট। কোনো প্রাণীজ যে অক্সিজেন উৎপাদন তৈরী করতে পারে এটাই প্রথম দেখলো বিশ্ব। তাই বিজ্ঞানীদের গবেষণা আরো বৃদ্ধি পেলো কিভাবে এই প্রক্রিয়া মানুষের সাথে জুড়ে দিয়ে তারাও এইভাবে অক্সিজেন তৈরী করবে এই প্রচেষ্টায় চালানো হচ্ছে। দিন দিন যেই হারে গাছ পালা নির্ধন হচ্ছে এবং পরিবেশ দূষিত হচ্ছে অতিশিগ্রই এ পৃথিবীতে অক্সিজেন শেষ হয়ে যাবে। অক্সিজেন উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এখনই নানা উদ্দেক নেয়া হয়েছে। বিলগেটস পরিবেশ থেকে কার্বনডাইঅক্সাইড অপসারণের জন্য যন্ত্রের প্রয়োগ এখনই শুরু করে দিয়েছে। এখন মানুষ যেহেতু কোনো প্রাণীজ থেকে অক্সিজেন উৎপাদন করা যাই সে সম্পকে জেনেছে তাই ভবিষতে এই প্রক্রিয়া মানুষের জন্যেও ব্যবহৃত হতে পারে।