প্রথম অন্য বৈশিষ্ট্যের ব্ল্যাক হোলের দেখা মিললো বিজ্ঞানীদের

প্রথম অন্য বৈশিষ্ট্যের ব্ল্যাক হোলের দেখা মিললো বিজ্ঞানীদের

এবার প্রথম এক ভিন্ন রাক্ষসী ব্ল্যাক হোল সনাক্ত নিজ চোখে দেখতে পেরেছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। সেটি সৌরজগতে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। ব্ল্যাক হোলটি তখনই দেখা যাই যখন এর সামনে কোনো তারা আসে, এর অতিরিক্ত মাধ্যাকর্ষণ তারার আলোকে বাঁকিয়ে দেওয়ার সময় এটির জায়গা নিদিষ্ট করা যায়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা কস-মসের ভিতরে কিছু ব্ল্যাক হোল দেখতে পেয়েছে। এর মধ্যে এমন কিছু ব্ল্যাক হলের আশা করছে যেগুলো কাউন্টার এট্যাক করতে পারে। কিন্তু এই ধরনের ব্ল্যাক হোল মহা বিশ্বে রয়েছে তা আছে করা যেতেই পারে কারণ এগুলো হচ্ছে সবচেয়ে অন্ধকার গ্রহ এটি আলো শূন্য একটি জায়গা।  ব্ল্যাক হোল বিভিন্ন উপায়ে তার উপস্থিতি জানান দিয়ে থাকে, যেমন ব্ল্যাক হোলকে ঘিরে অন্য কোনো গ্রহ বা নক্ষরত্র ঘোরা ফেরা করলে, মহাকর্ষীয় তরঙ্গ সংঘর্ষের উজ্জ্বল আলো দেবার সময় এবং তারা গুলো যখন গড়িয়ে পরে তখন যে আলোর ঝলকানি দেয় তখন ব্ল্যাক হোল দেখতে পাওয়া যায়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা অনেক আগের থেকেই ধারণা করছেন যে ব্ল্যাক হলের আরো অনেক প্রজাতি আছে যা অদৃশ্য অবস্থায় এখনও রয়েছে। কোনো সুপারনোভা ধ্বংস হওয়ার পর কোনো বড় তারকা বিশেষ অংশ থেকে ব্ল্যাক হলের সৃস্টি হয়। পরে ছোট ছোট নক্ষত্র যখন ঘন নিউট্রন নক্ষত্রে পরিবর্তন হয় তখনোও তা ব্ল্যাক হোল হয়ে যায়। এর মধ্যে খানে প্রচন্ড ঘন অন্ধকার রয়েছে যেখানে আলোও ফিরে আসে না। এর সামনে যেই আসে তাই সেই অন্ধকারের মধ্যে চিরতরে হারিয়ে যায়। ব্ল্যাক হোলে কেউ প্রবেশ করলে সে আর কখনও বেঁচে ফিরে আস্তে পারবে না। এর মাধ্যাকর্ষণ এতটা শক্তিশালী যে আপনি গলেও যেতে পারেন। 

মহাকর্ষীয় লেন্সিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মহা আকাশে বিচ্ছিন্ন এদিক ওদিক ছোটাছুটি করা ব্ল্যাক হোলগুলি দেখতে পাওয়া যাবে। প্রক্রিয়াটি হলো যখন ব্ল্যাক হোলগুলি ঘুরতে ঘুরতে কোনো আলোর উৎসের সামনে যায় ঠিক তখনই তীব্র মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে সামান্য সেকেন্ডের জন্য উজ্জলিত এবং স্থানান্তরিত হলেই এটি দেখা যাবে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা প্রায় ৩০ বছর ধরে মহাকর্ষীয় লেন্সিং এর অপেক্ষায় রয়েছে এবং যার ওপর এখনও খোঁজ চলছে। ধারণা করা হয় যে এখনও অনেক গ্রহ, নক্ষত্র, গ্যালাক্সি রয়েছে যা ব্ল্যাক হলের কারণে আমরা এখনও দেখতে পাচ্ছি না। 

নিউজিল্যান্ডে মাইক্রোলেন্সিং অবসেরভেশনস ইন অস্ট্রোফিজিক্স এবং চিলিতে অপটিক্যাল গ্রাভিটেশনাল লেন্সিং এক্সপেরিমেন্ট ২০১০ সালে আলাদা ভাবে একটি প্রজেক্ট শুরু করেছিল কোনো এক ক্ষুদ্র নক্ষত্রের উপর। পরবর্তী এক যুগ পার করে ২০২২ সালে পর্যায়ক্রমে তারা হাবল ব্যবহার করে নক্ষত্রের উপর পর্যবেক্ষণ করেন দেখেন আলো কিভাবে পরিবর্তন হয়। পরে মাইক্রোলেন্সিং অবসেরভেশনস ইন অস্ট্রোফিজিক্স বলেন নক্ষত্রটি শুধুমাত্র আলোর উজ্জ্বলতা পরিবর্তন করেনি বরং তার অবস্থানেরও পরিবর্তন ঘটিয়েছে। নক্ষত্রটি পর্যায় ক্রমে আলোর উজ্জ্জ্বলতা বাড়া কমার মধ্যেই সেটি আস্থে আস্থে তার জায়গার পরিবর্তন করছিলো। পরবর্তীতে দুই দল গভেষকরা পদক্ষেপ নিয়েছিল যে তাদের পর্যবেক্ষন বস্তুটি কি কোনো পুরানো তারা নাকি বস্তুটি একটি ব্ল্যাক হোল। বিভিন্ন গবেষণার উপর বিশ্লেষণ ভিত্তি করে দেখা গেছে বস্তুটির  নিজস্ব কোনো আলো নেই এবং আলোও দিচ্ছে না। বস্তুটি আমাদের সূর্যের চেয়ে প্রায় সাতগুণ বেশি ভারী যা পুরোনো তারকা বা নিউট্রন তারকা অপেক্ষায় বেশি ভারী। তার মানে এটি বুঝা যাচ্ছে এই সকল গুন ব্ল্যাক হোল বহন করে। তাই এটিই হচ্ছে ছিল অজানা ব্ল্যাক হোল। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এটিও বলেছেন যে পৃথিবী থেকে প্রায় পাঁচ হাজার আলোকবর্ষ থেকে দূরে এই ব্ল্যাক হোল। এটির ভ্রমণ বেগ ঘন্টায় ৪৫ কিমি। সুপারনোভার থেকে সংঘর্ষের মাধ্যমে হয়তো এই ব্ল্যাক হলের জম্ম হয়েছে। গ্যালাক্সির মধ্য একাকী বিশাল গতিতে যাত্রা করছে। এটিই তাদের প্রথম ভিন্ন এক আবিষ্কারক ব্ল্যাক হোল যেটি বিচ্ছিন্ন ভাবে রয়েছে।