ফ্রিল্যান্সিং কি ও ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

ফ্রিল্যান্সিং কি ও ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

বাংলাদেশে বেকারের হার দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই বেশির ভাগ বেকার সমাজ ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে বেশি ঝুঁকছে। আমরা এখানে শিখতে পারবো ফ্রিল্যান্সিং কি ( freelancing কি ), freelancer কি, ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো, অনলাইনে আয় ইনকাম করার উপায়, ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি ও ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করা যায়, ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার, অনলাইনে কি কি কাজ করা যায় এবং ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট এর তালিকা। আশা করি আপনারা উপকৃত হবে। ফ্রিল্যান্সিং বিষয় সম্পর্কে কোনো সমস্যা পড়লে বা আরো কিছু জানতে চাইলে আপনারা আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ করতে পারেন। 

ফ্রিল্যান্সিং কি (Freelancing in Bangla)

ফ্রিল্যান্সার এবং ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় (freelancing কি  এবং freelancer কি)

যে সকল শ্রমিক স্বাধীনভাবে কাজ করে ও কাজ ভিত্তিক মজুরি নেন তাকে ফ্রীলান্সার বলে। আর ফ্রীলান্সারদের কাজ করার প্রক্রিয়াকে ফ্রিল্যান্সিং বলে। 

ফ্রিল্যান্সিং মানে কি? ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি

ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি মাধ্যম সেখানে অনলাইন বা অফলাইনে আপনি কাজ করতে পারবেন। এখানে আপনি যখন ইচ্ছা ক্লাইন্টদের কাছ থেকে কাজ নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যখন ইচ্ছা তখন কাজ করে ডেলিভারি দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। আপনি একটি অফিসে চাকুরী করলে আপনাকে সেখানকার মালিকদের কথা মতো কাজ করতে হবে এবং আপনার কাজের ধারা যা আয় হবে তা বেশির ভাগই সেখানকার মালিকরা নিবে। কিন্তু আপনি নিজে ফ্রিল্যান্সিং করলে আয়ের সমগ্র লাভ আপনিই ভোগ করবেন। ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ গুলো সাধারণত ঘন্টায়, রোজ, সপ্তাহিক, মাস কিংবা মাসের অধিক হিসাবে ধরে চুক্তি ভিত্তিক করতে হয়। ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে অবশ্যই নিদিষ্ট কোনো কাজের উপর বিশেষ দক্ষতা থাকতে হবে। নিজে কাজ করার মন মানুষিকতা ও সাহস থাকতে হবে। বর্তমানে ইন্টারনেট দুনিয়াতে অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং ব্যাপক জনপ্রিয়তা হয়ে উঠেছে। অনলাইনে ইনকামের জন্য বিভিন্ন রকম অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মস রয়েছে সেখানে আপনি লেখালেখি, ডিজাইন, কেনা-বেচা, ডিজিটাল সেবা, ডাটা এন্ট্রি, ডেভেলপমেন্ট সহ আরো বিভিন্ন রকম কাজ সেখানে করা যায়। এ সকল কাজ আপনি কোনো কোম্পানির দায়িত্বে কাজ করলে দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা কাজ করলে আপনি হয়তো ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন কিন্তু যদি আপনি নিজেই ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে এ সকল দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা কাজ করেন আপনি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং দুনিয়াতে যে বেশি দক্ষ বিশ্বস্ত সেই সবচেয়ে বেশি কাজ পেয়ে থাকে। যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং এ নতুন হয়ে থাকেন এবং যে কাজটি নিয়েছেন তা ঠিকমতো করতে না পারলে তখন ক্লায়ন্ট আপনাকে নেগেটিভ মার্কিং করবে যা পরবর্তীতে আপনার ঐ একাউন্ট থেকে কাজ পেতে কষ্টকর হয়ে উঠবে। ফ্রিল্যান্সিং দুনিয়াতে প্রবেশের পূর্বে অবশ্যই আপনাকে দক্ষ জ্ঞানী হতে হবে কোনো বিশেষ কাজের উপর নইলে আপনি শুরু হওয়ার আগেই ফ্রিল্যান্সিং দুনিয়াতে পিছিয়ে পড়বেন। অনেকেই আছে পায়ের মাটি শক্ত না করেই ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে একাউন্ট খুলেন এবং কাজ নেওয়ার পর তারা ঠিকমতো ডেলিভারি দিতে পারে না তখন ক্লায়েন্টরা তাকে সহ ঐ দেশের লোকজনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে পারেনা। তাই ক্লাইন্টের কাজ নেওয়ার আগে বুজে শুনে কাজের জন্য আবেদন করতে করতে হয়। 

ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা সমূহ :

  • চাকুরীর অপেক্ষায় ফ্রিল্যান্সিং থেকে কয়েকগুন বেশি টাকা যায় করা যায়। 
  • ফ্রিল্যান্সিং করতে বিশেষ কোনো জায়গা বা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হয় না, আপনি যেখানে ইচ্ছা সেখানেই করতে পারেন। 
  • ফ্রিল্যান্সিং আপনার যখন ইচ্ছা তখনই করতে পারেন। আপনি চাইলে দিনে চাকরি করে রাতে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন। তাছাড়া রাতেই ক্লাইন্টরা বেশি একটিভ থাকে কারণ ইউরোপ দেশগুলোতে তখন দিন থাকে। 
  • ফ্রিল্যান্সিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনি নিজেই একটি কোম্পানি খুলতে পারেন। 
  • ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি নিজে নিজের দেশকে স্বাবলম্বী করতে পারেন। 
  • ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি বেশি টাকার আয়ের পাশাপাশি পরিবারের সাথে বেশি সময় কাটাতে পারবেন। 
  • ফ্রিল্যান্সিং এর সম্পূর্ণ কাজ আপনি ঘরে বসেই করতে পারেন শুধুমাত্র ল্যাপটপ বা পিসি এবং ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে।  

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কি কি প্রয়োজন?

ফিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে বেসিক ডিভাইসের প্রয়োজন হয় যখন যা প্রয়োজন তাই দরকার হয়। ফিল্যান্সিং করতে অবশ্যই আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকতে হবে। কিন্তু সাথে স্মার্ট এন্ড্রোইড মোবাইল ফোন থাকলে ব্যাপক সুবিধা হয়। মোবাইলে অ্যাপ নামিয়ে যখন ক্লাইন্টের আপনাকে দরকার তখনই তিনি আপনার সাথে হোয়াটস্যাপ, ইমো দিয়ে যোগাযোগ করতে পারবেন। তাছাড়া কিছু কিছু কাজ মোবাইল দিয়েও সম্পূর্ণ করা যায়। আপনার কম্পিউটারে গতি সম্পূর্ণ ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে তবে তা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট হোক মোবাইলের সিমের ইন্টারনেট হোক। ইন্টারনেট ধীর গতি হলে কখনই ক্লাইন্টের করণীয় কাজ সময় মতো ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব নয়। আর সবচেয়ে মূল বিষয় হলো আপনাকে কাজের প্রতি দক্ষতা থাকতে হবে। আপনি ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে যেসকল কাজ নিয়ে কাজ করতে চান সে সব বিষয়ে আপনাকে খবই দক্ষতাসীল হতে হবে। ক্লাইন্টের কাছ থেকে যে কাজ নিবেন সে কাজের প্রতি আপনাকে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। এবং আপনার কমিউনিকেশন স্কিল থাকতে ক্লাইন্টের কাছ থেকে কাজ নেয়ার জন্য যাতে তিনি আপনাকে বিশ্বাস করে আপনাকে কাজ দেয়। তাছাড়া মাইক্রোফোন, ক্যামেরা এবং হেডফোন ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।   
  
তাই আমরা বলতে পারি ফিল্যান্সিং করতে বিশেষ প্রয়োজন হলো :
  • কম্পিউটার বা ল্যাপটপ
  • ইন্টারনেট কানেকশন
  • কমিউনিকেশন স্কিল
  • ইংলিশে কথা বলা ও বুঝা
  • দক্ষতা এবং 
  • কাজের প্রতি শ্রদ্ধা থাকতে হবে। 
যা থাকলে ভালো হয় তবে না থাকলেও ফিল্যান্সিং করা যায় তা হলো:
  • এন্ড্রোইড মোবাইল
  • মাইক্রোফোন
  • ক্যামেরা এবং 
  • হেডফোন। 
 নতুনরা কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন - ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার
  • ফ্রিল্যান্সিং শুরুর জন্য আপনাকে সর্ব প্রথম একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ কিনতে হবে আর যদি বাসায় থাকে তাহলে তো কোনো সমস্যায় নেই। 
  • বর্তমান সময়ে দিন দিন ইন্টারনেট ব্যবহারের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া বর্তমানে পড়াশুনা থেকে অফিসের সকল কাজকর্ম ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। তাছাড়া অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য সকল কাজকর্ম ইন্টারনেটের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। আপনার ক্লায়েন্ট থেকে কাজ নিতে, কাজ করা শেষ হলে তা আবার জমা দিতে এবং ক্লায়েন্ট থেকে টাকা  নিতেও ইন্টারনেটের প্রয়োজন হয়। 
  • আপনার কাজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ইন্টারনেটের ব্লগ বা ভিডিও দেখে আপনাকে বিশেষ করে একটি করে করে একাধিক কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। ইংরেজি ভাষা নিজের আয়ত্তে আন্তে হবে। 
  • নিজের দক্ষতা গুলো বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করতে হবে। প্রচার করার মাধ্যমেই মানুষ আপনার দক্ষতা সম্পর্কে অবগত হবে। আপনার কাজ পাওয়ার সম্ববনা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। আপনি যদি কোনো ভালো ওয়েব ডেভেলপার হন তাহলে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে আপনি যদি আপনার দক্ষতা প্রচার করেন তাহলে আপনার কাজ পাওয়ার সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। 
  • আপনার নিজের দক্ষতা প্রচারের জন্য আগে সোশ্যাল মিডিয়াতে সুন্দর নামে একটি পেজ খুলবেন। সেখানে আপনার দক্ষতার কথা প্রকাশ করে পোস্টটি বুস্ট বা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ কিংবা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে শেয়ার করতে পারেন। আপনার পরিচিতেই আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে সাহায্য করবে। 
  • আপনাকে ভালো একটি ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে হবে যাতে ক্লাইন্টের টাকা আপনি সহজেই পেতে পারেন। ব্যাংকে একাউন্ট খোলার আগে জেনে নিবেন ব্যাংটি থেকে রেমিট্যান্সের টাকা উত্তেলন করা যায় কিনা, ব্যাংকের সুইফট কোড কি? এবং ব্যাংকের ব্রাঞ্চের ঠিকানা ইত্যাদি। তবে সরকারি ব্যাংকে একাউন্ট না খুলে বেসরকারি মানসম্মত ব্যাংকে একাউন্ট  খুলবেন। 

অনলাইনে ইনকাম করার উপায় -  ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো -  অনলাইন থেকে আয় করার উপায় 

অনলাইন থেকে আয় করার উপায় আয় করতে হলে আপনাকে নিচের বিষয় সম্পর্কে বেশ গুরুত্ব দিতে হবে।

সঠিক সময়ের লক্ষ্য নির্বাচন করুন 

  • ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার আগে আপনাকে একটি লক্ষ্য টিক করতে হবে যে আপনি কতটুকু সময় এর পিছনে দিতে চান। এবং নিশ্চিত হন যে যতটুকু সময় দিতে চান তা টিক মতো দিতে পারবেন কিনা। আপনি যদি কোনো চাকরি করেন তাহলে দিনে চাকরি করে রাতে ফ্রিল্যান্সিং করবেন এই ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অনেকেই আছে যারা কথা বলার সময় ঠিকই বলে কিন্তু সারা দিন কাজ করার পর আর তারা রাতে কাজ করতে পারে না। আবার আপনি যে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করবেন সেটি ফুল টাইম করবেন নাকি পার্ট-টাইম তাও ভালো মতো আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে তবেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে যোগ দিতে পারবেন। 

কোন ধরণের কাজ করতে আপনি আগ্রহী তা নির্বাচন করুন 

  • এখানে আপনাকে ভাবতে হবে আপনি কোন কোন কাজে আপনি পারদর্শী। এবং যে কাজটি নিবেন বা করবেন তা ১০০% সাফল্যের সাথে কাজটি ডেলিভারি দিতে পারবেন কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিংয়ে ক্যারিয়ার তৈরী করতে আপনি একটি কাজের উপর দক্ষতা থাকলেও আপনি বেশ সাফল্য অর্জন করতে পারবেন। যা হলো ডেভলপার, মার্কেটিং প্রফেশনাল, কনটেন্ট রাইটিং, ট্রান্সলেটর, লগো ডিজাইনিং, এসইও সার্ভিসে, ভিডিওগ্রাফার, এইচআর ম্যানেজার, কনটেন্ট মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইনিং, ভিডিও তৈরী বা এডিট করা, ডাটা এন্ট্রি ইত্যাদি ছাড়াও আপনি আরো অনেক কাজ রয়েছে তা দিয়েও আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। 
  1. আপনি যে বিষয়ে কাজ নিতে চান সে সম্পর্কে অবশ্যই সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং জ্ঞান থাকতে হবে। 
  2. আপনার বেছে নেওয়া কাজটি সম্পর্কে আপনার আগ্রহ থাকতে হবে এবং মনে বিশ্বাস থাকতে হবে যে এ কাজটির উপর যেকোনো সমস্যা আমি সমাধান করতে পারবো। 
  3. আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ে ক্যারিয়ার তৈরির আগে দেখতে হবে আপনি যে বিষয়ে দক্ষ বা অভিজ্ঞতা রয়েছে তা ফ্রিল্যান্সিং ফ্লাটফর্মে কতটা চাহিদা বা প্রয়োজন রয়েছে তার সে সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকতে হবে। যদি আপনি এমন কাজ পারেন যা সচারচর সবাই করতে পারে তাহলে আপনার কাজ পেতে বিলম্ব হতে পারে আবার এপানি এমন কাজ পারেন যা যা সচারচর কেউ করতে পারে না তাহলে আপনি কাজ দ্রুত পাবেন এবং সাথে টাকাও বেশি পাবেন। 
  4. আপনাকে অবশ্যই দৈর্য্য ধারণ করতে হবে। ভাগ্য ভালো থাকলে ফ্রিল্যান্সিং ফ্লাটফর্মে শুরুতেই কাজ পেয়ে যাবেন অনথাই ২ থেকে ৩ মাস হয়ে গিয়েছে আপনি কোনো কাজ পাচ্ছেন না এরকমই হতে পারে। তাই এ ব্যাপারটি আপনাকে মনে রাখতে হবে।  
যে বিষয়টি নিজে কাজ করতে আগ্রহী তা নিয়ে অবশ্যই উপরের পয়েন্ট গুলির ব্যাপারে মনে রাখবেন।  
  • আপনার দক্ষতা থাকলে এবার বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে একাউন্ট খুলুন। তারপর আকর্ষণীয় ভাবে আপনার প্রফাইলটি সাজান। 
  • ছোটো ছোটো কাজ নিয়ে বড় বড় কাজ নেয়ার চেষ্টা করবেন শুরুতে বড় কাজ নিলে তা পাওয়ার সম্বনা কম থাকে। ছোটো কাজ নিয়ে নিজের রেটিং বাড়ানোর চেষ্টা  করুন।  
  • ফ্রিল্যান্সিং দুনিয়াতে ব্যাপক পরিমানে আয় করতে চাইলে নিজের নেটওয়ার্ক বড় করার চেষ্টা করুন। 


সেরা ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট
ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলোতে বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টেরা তাদের ছোটা কাজের জন্য  বিভিন্ন দেশের ফ্রীলান্সারদের  খুজেঁন। ক্লায়েন্টেরা তাদেরকেই কাজে নেন যাদের প্রোফাইল দেখে বিশস্ত মনে হয় যাদের এপ্লিকেশন দেখে মনে হয় যে তিনি কাজ তা করতে পারবেন এবং যাদের ফ্রিল্যান্সিং রেটিং বেশি। নতুন  ফ্রীলান্সারদের ছোট ছোট কাজ কম টাকায় নিয়েই তাদের ক্লায়েন্টদের সন্তুষ্ট করলেই তারা ভালো রেটিং দেয়, যা পরবর্তীতে ফ্রীলান্সারদের ভবিষৎ উজ্জ্বল করে। মনে রাখতে হবে ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম গুলিতে প্রচুর ফ্রীলান্সারা কাজ করে তাই কাজ পাওয়ার জন্য অনেক অপেক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। নিচে ফ্রিল্যান্সিং করার সেরা তালিকা গুলি দেওয়া হলো : 

  • ফাইভার : ২০১০ সালে ফাইভার ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে যোগ দেয়। প্রচুর পরিমানে ফ্রিল্যান্সাররা এখানে একাউন্ট খুলে কারণ এখানে একাউন্ট খুলে সবচেয়ে সহজ। প্রত্যেকটি কাজ সর্বনিম্ন ৫ ডলার থেকে শুরু  করে বিশাল অংকের টাকা উপার্জন করতে পারে ফ্রিল্যান্সাররা। এখানে  গ্রাফিক্স বা লোগো ডিজাইন, ডিজিটাল  মার্কেটিং ,  কনটেন্ট রাইটিং, ভিডিও এনিমেশনের কাজ এখানে ফ্রিল্যান্সাররা বেশি করে থাকে। ফ্রিল্যান্সাররা গিগ পোস্ট করে সেখান থেকে বায়াররা তাদের হায়ার করে। ফাইভার থেকে অর্জিত অর্থ  পেপাল, পেওনিয়ার এবং ব্যাংক ট্র্যান্সফার এর মাধ্যমে উত্তোলন করা যাই।   
  • আপওয়ার্ক : আপওয়ার্ক বায়াররা প্রথমে কাজ পোস্ট করে তখন ফ্রিল্যান্সাররা কাজটি নেয়ার জন্য এপলাই করে। বায়ার যাকে প্রচন্ড করে তাকেই তিনি সিলেক্ট করেন। প্রতি বছর ৩ -৪ মিলিয়নের অধিক কাজ বায়াররা এই প্লাটফর্মে জব পোস্ট করেন। যেকোন ক্যাটাগরির ফ্রিল্যান্সার এখানে পাওয়া যায়। আপওয়ার্ক থেকে অর্জিত অর্থ পেপাল, পেওনিয়ার এবং ব্যাংক ট্র্যান্সফার এর মাধ্যমে উত্তোলন করা যাই। 
  • ফ্রিল্যান্সার ডট কমফ্রিল্যান্সার ডট কম থেকে সবচেয়ে বেশি ফ্রিল্যান্সার ও বায়ারের দেখা মিলে। ১৩৫০ টি আলাদা আলাদা ক্যাটাগরি রয়েছে কাজের জন্য।  কাজভিত্তিক ও ঘন্টাভিত্তিক উভয় রকমের কাজ পেতে পারেন ফ্রিল্যান্সাররা। ফ্রিল্যান্সার ডট কম থেকে অর্জিত অর্থ স্ক্রিল, পেপাল, পেওনিয়ার এবং ব্যাংক ট্র্যান্সফার এর মাধ্যমে উত্তোলন করা যাই। 
  • গুরু ডট কমএখানে ফ্রীলান্সারদের খুজেঁন বায়াররা। শুধুমাত্র ফ্রীলান্সাররা তাদের প্রোফাইলে কাজের অভিজ্ঞতা ও কাজের উদাহরণ প্রমান সহ দিলেই ক্লায়েন্টরা তাদের হায়ার করে। গুরু ডট  কম থেকে অর্জিত অর্থ পেপাল, পেওনিয়ার এবং ব্যাংক ট্র্যান্সফার এর মাধ্যমে উত্তোলন করা যাই। 
 

ফ্রিল্যান্সিং সাইটে একাউন্ট খোলার পর যা করবেন 

ফ্রিল্যান্সিং সাইটে একাউন্ট খেলোযাড় পর সেখানে নিজের একটি প্রফেশনাল ছবি দিতে হবে। তারপর আপনার যে কাজের ওপর অভিজ্ঞতা রয়েছে তা সুন্দর করে লিখতে হবে। এবং আপনি যা যা কাজ অতীতে করেছেন তার একটি পোর্টফিল তৈরী করতে হবে। আপনি কোথায় কোথায় চাকরি করেছেন সে সম্পর্কে লিখতে হবে পাশাপাশি আপনার শিক্ষাজীবনের প্রতিষ্টান গুলোর নাম ডিগ্রি সহ লিখতে হবে। সর্বশেষ সুন্দর করে একটি ছোট করে বায়োডাটা লিখতে হবে মনে রাখতে হবে বায়োডাটা যত সুন্দর হবে কাজ পাওয়ার চান্স তত বাড়বে। আপনার বায়োডাটাটি হবে আপনি যে কাজের উপর অভিজ্ঞতা দক্ষতা রয়েছে সে গুলোর ওপর নির্বর করে। এটি বেশি ছোট বা বড় হলে চলবে না। 
 

ফ্রিল্যান্সিং থেকে কত টাকা অনলাইনে আয় করা যাবে?

আসলে ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয় করার ব্যাপারতা সম্পূর্ণ নিজের ওপর। আপনি যত কষ্ট করবেন তত বেশি আয় করতে পারবেন। তাছাড়া আপনার দক্ষতা যদি দুর্লভ হয়ে থাকে তাহলে আপনি অধিক পরিমানে টাকা আয় করতে পারবেন। আমি শুরুতে ডাটা এন্ট্রি দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেছিলাম প্রথম মাসে আমার ইনকাম হয়েছিল ৯০০০ টাকার মতো। টাকা ইনকাম এর ব্যাপারটা সম্পূর্ণ নিজের ওপর এক তো আপনার ভাগ্য ভালো থাকতে হবে কাজ পাওয়ার জন্য দ্বিতীয়ত আপনাকে কাজের প্রতি সময় দিতে হবে। পেপাল ভারতীয় ফ্রীলান্সারদের ওপর একটি জরিপ করেছিল সেখানে গড়ে প্রতি ১০০ জন ফ্রীলান্সারদের মধ্যে ১৯ জন ৬০ লক্ষ টাকা,  ২৩ জন ২ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা টাকা এবং বাকি ৫৮ জন ২ লক্ষ টাকার নিচে প্রতি বছর আয় করছে। বাংলাদেশে দিন দিন বেকার সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই অধিকাংশ মানুষ ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে ঝুঁকছে। 


কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবো - ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করা যায়- অনলাইনে কি কি কাজ করা যায়

কোন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স শিখতে হবে ? 

এখন আমরা জানবো ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করা যায় বা অনলাইনে কি কি কাজ করা যায় এ সম্পর্কে। অনলাইন প্রচুর ধরণের কাজ করা যাই তা বলে শেষ করা যাবে না। অফলাইনে যে সকল কাজ করা যাই তার ৯০ শতাংশ কাজই আপনি অনলাইন করতে পারেন। অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইলে কাজ শিখতে হবে কোর্স করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং কোর্স শিখতে আপনি কোনো ভালো মানের  কোচিং  সেন্টারে যেতে পারেন তাছাড়া ভালো মানের সিডি ক্যাসেড বাজারে পাওয়া যায় ফ্রিল্যান্সিং কোর্স শিখার জন্য। বর্তমানে হাজার হাজার ভালো মানের ভিডিও রয়েছে ইউটুবে ফ্রিল্যান্সিং শিখার জন্য। আমি নিজেই ইউটুব গুগল থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পেরেছি এখানে অনেক ভালো মানের ভিডিও পাওয়া যায়। ফ্রিল্যান্সিং কোর্স বলতে আসলে তেমন কিছু না আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম থেকে কিভাবে কাজ করে আয় করতে হয় সেটা দেখাবে। এখানে মূল বিষয় হলো কাজ তাই আপনাকে আগে কাজ শিখতে হবে। কাজ ছাড়া আপনি ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে কিছুই করতে পারবেন না। চলুন আপনাদেরকে কিছু কাজের কথা বলি যা আপনারা শিখতে পারেন :-
  • ওয়েব ডেভেলপিং : বর্তমান বিশ্বে চাহিদা সম্পূর্ণ কাজ হলো ওয়েব ডেভেলপমেন্ট। আপনি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করে মাসে লাখ খানিক টাকা ঘরে বসেই আয় করতে পারেন। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখে আপনি সুন্দর সুন্দর ওয়েব সাইট তৈরী করতে পারেন। আপনি যদি কোডিং এ ইন্টারেস্ট থাকে তাহলে এইচটিএমএল, সি এস এস, জাভাস্ক্রিপ্ট, পিএইচপি, জাভা বা পাইথন দিয়ে আপনি অসাধারণ ওয়েব সাইট তৈরী করতে পারেন। আর যদি  কোডিং কঠিন লাগে ইন্টারেস্ট না পান তাহলে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়েও সুন্দর ওয়েব সাইট তৈরী করতে পারেন।  
  • ট্রান্সলেটিং :  আপনি একাধিক ভাষা শিখে ট্রান্সলেটিং এর কাজ করতে পারেন। অবশ্যই মেশিন ট্রান্সলেটর দিয়ে ট্রান্সলেটিং করলে কিন্তু চলবে না।  
  • আর্টিকেল লেখালেখি : আপনি যদি আর্টিকেল লেখালেখি করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনি এই কাজটি করতে পারেন মার্কেটে চাহিদা রয়েছে। 
  • গ্রাফিক ডিজাইন : বর্তমানে আজকাল সবচেয়ে বেশি চাহিদা হলো গ্রাফিক ডিজাইনারদের। ফ্রীলান্সাররা লগো ডিজাইন করে মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজারের অধিক টাকা আয় করতে পারে। 
  • ভিডিও এডিট : বিভিন্ন কোম্পানি বা সিনেমার ভিডিও ট্রেইলার এডিট করে ফ্রীলান্সাররা ভালো একটি টাকা ইনকাম করতে পারে। 
  • অ্যাপ তৈরীকরণ : আপনি অ্যাপ ডেভেলপার হলে যেকোন ফ্রীল্যান্কিং প্লাটফর্মে আপনার চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে যেকোনো বড় বড় কোম্পানি গুলোতে অ্যাপ ডেভেলপার দের অনেক টাকা দিয়ে তারা হায়ার করে। প্রতি  অ্যাপ তৈরীতে আপনি ১ লক্ষ টাকা করেও আয় করতে পারেন। 
  • এসইও : আপনি এসইও শিখেও মাসে ১৮ থেকে ২৫ হাজার টাকার অধিক আয় করতে পারেন। এসইও খুব সহজেই শিখতে পারেন মাত্র ১ সপ্তাহের মধ্যেই আপনি এর ফুল কোর্সটি কমপ্লিট করতে পারেন। 
  • ডাটা এন্ট্রি : আপনি ডাটা এন্ট্রি কাজ শিখে ফ্রীল্যান্কিং প্লাটফর্ম গুলোতে এপলাই করতে পারেন। সবচেয়ে বেশি কাজ পাওয়া যায় ডাটা এন্ট্রিতে। 

এগুলো ছাড়াও আরো অনলাইনে কাজ রয়েছে। আস্তে আস্তে এগিয়েই আপনাকে ভবিষতে সাবলম্ভী হতে হবে।