বিলুপ্ত গোল্ডেন টোড - সোনালি টোড

বিলুপ্ত গোল্ডেন টোড - সোনালি টোড

প্রথমে ধারণা করা হয়ে ছিল গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য সোনালি টোড বিলুপ্তি হয়ে যায়। কিন্তু বর্তমানে গবেষকরা বলছেন গ্লোবাল ওয়ার্মিং ছাড়াও আরো দোষ আছে| ১৯৮৯ সালে মন্টেভার্ডের কোস্টা রিকান ক্লাউড ফরেস্টে শেষবার  সোনালি টোডটি দেখা যায়। গোল্ডেন টোড দেখতে অনেক সুন্দর। পুরুষ গোল্ডেন টোড কমলা রঙের হয়ে থাকে এবং মহিলারা হলুদের উপর কালো রঙের ছোপ ছোপ দাগ থাকে। পুরুষদের দৈর্ঘ্য ৪০- ৪৮ মি.মি এবং মহিলাদের দৈর্ঘ্য ৪৩-৫৬ মি.মি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাদের শারীরিক পার্থক্য চিনা যায় না। এরা ২০০০ থেকে ২১০০ মিটার উচ্চতায় উত্তর কোস্টারিকার বনের পাহাড়ী এলাকাতে তারা বসবাস করতো। তাদের খাদ্য অভ্যাস অন্যান্য প্রাণী থেকে ভিন্ন নয় তারা তাদের এলাকার ছোট ছোট অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের তারা খেত। 

১৯৮০ সালে অধিক পরিমানে কলকারখানা তৈরী হয় তখন প্রচুর পরিমানে কার্বনডাইঅক্সাইড এবং অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাস পরিবেশে নির্গত হয় এবং পরে যা পরিবেশের সাথেই মিশে যায়| তখনকার সময়ে কোস্টারিকান রেইনফরেস্টগুলিতে প্রচুর পরিমানে গরম পরে ফলে মাঠ ঘাট শুষ্ক হয়ে ওঠে| চারিদিকে পানিশূন্যতা দেখা যাই| যার একটি কারণ হলো সোনালী টোডের বিলুপ্ত| এছাড়া তখন উভচর প্রাণীর মধ্যে একটি রোগ দেখা গিয়েছিলো সেটি হলো কাইট্রিডিওমাইকোসিস| এই সংক্রমণ রোগটি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পরে| রোগটি হওয়ার পর উভচর প্রাণীর প্রথমে মারাত্মক চর্মরোগ হয় তখন ত্বকের ক্ষতির ফলে তাদের জ্বর হয় এবং একসময়  খিঁচুনি দিয়ে  মৃত্যু হয়| সমগ্র কোস্টারিকান রেইনফরেস্টে উভচর প্রাণীর সংখ্যা হ্রাস ওই সময়ে হ্রাস পেতে শুরু করেছিল, সোনালী টোড সংখ্যা লঘু এবং সীমিত আবাসস্থলের কারণে প্ররিবেশে টিকে থাকা এদের জন্য কষ্টকর হয়ে পরে |

কিন্তু সত্যি বলতে ১৯৭০ সালে সেই অঞ্চলে প্রচুর গরম পরে ছিল কিন্তু তখন উভচর প্রাণী দের মধ্যে তেমন কোনো বিবর্তন দেখা যাইনি তাছাড়া রোগ বালাই তো থাকেই প্রাণীদের মধ্যে| আর ১৯৮০ সালে কলকারখানার ধুয়া বাড়লেও তা সাথে সাথে পরিবেশে কোনো রূপ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে না, সেগুলো আপনাতেই পরিবেশে মিশে যায়| আসলে প্রকৃতির তাপমাত্রা প্রাকৃতিক চক্রের মাধ্যমেই হয়ে থাকে| গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলবায়ুর কারণে মন্টেভার্ডে গাছগুলি সাধারণত সময়ের সাথে তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার ধরণগুলি অধ্যয়নের জন্য ব্যবহৃত শরীরের কোনো পরিবর্তন করে না। জলবায়ু বিজ্ঞানী কেভিন আনচুকাইটি এবং প্যালিওক্লিম্যাটোলজিস্ট মাইকেল ইভান্স তারা দুইজন সেই অঞ্চলের দুটি গাছ থেকে নমুনা নেন| নমুনাগুলোকে টুকরো মানুষের চুলের সমান পুরু করেন| কী ধরনের অক্সিজেন আইসোটোপ রয়েছে তা বের করতে তারা স্পেকট্রোমিটারে রেখে বিশ্লেষণ করেন| শুষ্ক অবস্থার সাথে আইসোটোপের অনুপাত এবং আর্দ্র অবস্থার সাথে আইসোটোপের অনুপাত থেকে বিজ্ঞানীরা বার্ষিক আর্দ্রতা চক্র বের করতে পারেন| বিজ্ঞানীরা এক শতাব্দী বনের জলবায়ু দেখার জন্য আড়াই হাজার স্যাম্পল সংগ্রহ করেন| পরে সেগুলোর বণনা এন.এ.সি তে বননা করেন|
বিজ্ঞানী আনচুকাইটিস বলেন, "আমরা আশাবাদী যে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সাথে সম্পর্কিত তথ্য আমরা সম্পর্কে জানতে পারবো, পরেও পরীক্ষাটি করার সময় আমরা জেনেছিলাম গত ১০০ বছরে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা গিয়েছে"। উত্তর আমেরিকার উপকূলে প্রশান্ত মহাসাগরে প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং তাপমাত্রার আবহাওয়ার হটাৎ চক্রাকার পরিবর্তন হয়। তার ফলস্বরূপ অস্বাভাবিকভাবে তীব্র শুষ্ক মৌসুমের সৃষ্টি হয় মন্টেভার্ডে এবং সোনার টোডের বিলুপ্ত ঘটে। আরেকজন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফার স্টিল বলেন "তাদের পর্যবেক্ষণীয় অঞ্চলটি দীর্ঘমেয়াদী জলবায়ু এবং হাইড্রোক্লাইমেট ধারণা প্রধান করে। তারা ওই  অঞ্চল থেকে দুটি গাছের নমুনা সংগ্রহ করেছে কিন্তু সেখান থেকে গ্রীষ্মমন্ডলীয় সেলুলোজে গাছের অক্সিজেন আইসোটোপ ব্যাখ্যা করা তাদের কাছে চ্যালেন্জিং।"