মধু খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম Modhu Khawar Upokarita Niom

মধু খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম Modhu Khawar Upokarita Niom

মৌমাছি থেকে আগত প্রাকৃতিক মধু আমাদের জন্য প্রচুর উপকারী। যা মহান আল্লাহু তালার অশেষ নিয়ামত আমাদের প্রতি। এক টেবিল চামচ মধুতে ৬০ ক্যালরি থাকে তাছাড়া ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, দস্তা, নিয়াসিন, রিবোফ্লাভিন, এনজাইম, অ্যামিনো অ্যাসিড, এবং প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড রয়েছে যা আমাদের সম্পূর্ণ শরীরকে সুস্থ রাখে। নিম্নে মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :


রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় 
মধুতে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাক জাতীয় রোগ বালাই থেকে আমাদের মুক্ত করে। যারা দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন রোগে ভুগছেন তারা প্রতিদিন মধু খেলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর সাথে সাথে শরীরের অঙ্গ গুলি চাঙ্গা থাকে। ওয়ার্কআউট ট্রেইনারের তাদের ট্রেইনারদের মধু খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন কারণ দীর্ঘক্ষন ব্যায়াম করতে মধু সাহায্য করে। দুর্বল শিশুদের মধু খাওয়ানো হয় যাতে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাই এবং শক্তিশালী হয়। যেকোনো রোগের চিকিৎসায় আপনি মধু ব্যবহৃত করতে পারেন কারণ এতে প্রোপোলিসে অ্যান্টিফাঙ্গাল রয়েছে যা বেশির ভাগ ঔষুধের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান ক্যান্সার প্রতিরোধী হিসাবে কার্যকর। 

স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায়
মধুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, পলিফেনল এবং থেরাপিউটিক রয়েছে যা মস্তিষ্কের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান কে সঞ্চালিত করে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নতি করে তাছাড়া মস্তিষ্কের ভিতরে ব্যথা থাকলেও তা দূর করে।   

ত্বকের যত্ন
ত্বকের মধ্যে মধু দিয়ে ম্যাসেজ করলে ত্বক ময়শ্চারাইজিং এবং সতেজ থাকে। শুষ্ক ত্বকের ব্যক্তিরা মধু দিয়ে ম্যাসেজ করলে ৭ দিনের মধ্যে তাদের ত্বক প্রাকৃতিক উপায়ে ময়েশ্চারাইজার হবে। আপনি শীতকালে তত ফাটা নিয়ে চিন্তিত থাকলে আপনি লিপি জেলের বদলে প্রাকৃতিক জেল মধু ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া ত্বকের টান টান ভাব দূর করতে আপনি আপনার ত্বকে মধু লাগাতে পারেন। মধুতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রয়েছে যা শরীরের কাটা ছিড়া, ক্ষত, পোড়া এবং সংক্রমণের চিকিৎসায় আক্রান্ত স্থানে মধু প্রয়োগ করতে পারেন। আজকাল বিউটি পাল্লারে ত্বক ফর্সা করতে মধু ব্যবহার হয়ে থাকে। 

ঠান্ডা কাশি গলা ব্যথা দূর করার উপায় 
আদিম কাল থেকে ঠান্ডা কাশি গলা ব্যথা থেকে বিস্তার পাওয়ার জন্য মধু ব্যবহার করে আসছে। প্রথমে হালকা গরম পানিতে লেবু ও এক চা চামুচ মধু মিশিয়ে খাওয়ালে দুই দিনের ভিতরে ঠান্ডা কাশি গলা ব্যথা ভালো হয়ে যাবে। গলায় সংক্রামণের কারণে ঠান্ডা লাগে তাই এক চা  চামুচ মধু প্রতিদিন তিন বেলা মধু খান আপনার ঠান্ডা দূর হয়ে যাবে। 

ওজন কমানোর উপায় 
সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানির সাথে সামান্য মধু খেলে আপনার শরীরে অতিরিক্ত চর্বি ধ্বংস হয়ে যাবে। আপনি যদি ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ নিয়মিত এ পদ্ধতি অবলম্বন করেন তাহলেই আপনি দেখতে পাবেন আপনার শরীরের জায়গায় জায়গায় ভরা অতিরিক্ত চর্বি পুড়ে গেছে। তাছাড়া বিপাক ক্রিয়া উন্নতও হয়ে থাকে। ওজন কমাতে অসাধারন ভূমিকা রাখে এই মধু। অতিরিক্ত মোটা মানুষদের ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদরা সবসময় বলে থাকেন ঘুমানোর আগে মধু খেতে কারণ তখন তা অধিক পরিমানে কার্যকর হয়ে থাকে। 

এ উপকারগুলি ছাড়াও মধুর আরো বেশ উপরি রয়েছে যেমন খুশকি দূর করতে, ঘুম আসতে, মাথার সাইনাসের সমস্যা দূর করতে, দাঁত সুস্থ রাখতে, একজিমা রোগ নিরাময় ক্ষেত্রে, হজম সমস্যা দূর করতে ইত্যাদি ছাড়াও মধুর বেশ উপকারিতা রয়েছে মানব ঢের জন্য।  

মধু খাওয়ার নিয়ম:
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে সূরা ফাতিহা পাঠ করে এক গ্লাস পানিতে ১ চা চামুচ মধু, দুই ফোটা লেবুর রস ও কালিজিরার সাথে মিশিয়ে হালকা গরম পানি দিয়ে খেলে বেশ উপকার হবে।