মনুষ্য জাতির কলঙ্কের কারণে বিলুপ্ত জাভান বাঘ

মনুষ্য জাতির কলঙ্কের কারণে বিলুপ্ত জাভান বাঘ

বাংলাদেশর সুন্দরবনে বসবাসকারী বেঙ্গল টাইগার তার গায়ের ডোরা কাটা দাগের জন্য পৃথিবী খ্যাত। এই বাঘের মতোই দেখতে বর্তমানে বিলুপ্ত প্রাণী হলো জাভান বাঘ। মনুষ্য জাতির কলঙ্কটার কারণে পৃথিবী থেকে টিকে থাকার লড়াইয়ে হেরে যায় এই প্রাণীটি। ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে বসবাসকারি বাঘের উপ-প্রজাতি হলো জাভান বাঘ। বিশ্ব উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৭০ সালে প্রচুর পরিমানে বন উজাড় করা হতো তখন প্রচুর পরিমানে খাদ্য সংকট বাসস্থান না থাকার কারণে বহু প্রাণী কমে যেতে শুরু করে তখনই জাভান বাঘের বিলুপ্তর যাত্রা শুরু হয়। তাছাড়া এটির চামড়ার উদ্দেশে শিকারির সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে থাকে।  

ইন্দোনেশিয়া ১৯ শতকের মধ্য সময়ে জাভা দ্বীপে মানুষের বসবাস দিন দিন বৃদ্ধি পাচছিলো সেই সাথে বৃদ্ধি পাই ফসলি জমির সংখ্যাও। তখন সেইখানকার বন্য প্রাণীদের বাসস্থান সঙ্কটযুক্ত হয়, দিন দিন কমে যেতে থাকে তাদের সংখ্যা, খাদ্য ও বাসস্থান। জাভান বাঘ স্থানীয় জনগণের ফসলি জমিতে বসবাস করতে চাইলে সেখানকার স্থানীয় ফসললি জমি বাঁচাতে তারা বাঘের শিকার, হত্যা শুরু করে। এইভাবে সেখানকার জীববৈচিত্র্যের পরিবর্তন হতে থাকে।  

বিনা নিয়মে বৃক্ষ রোধনের কারণে জাভান বাঘের আবাসস্থলের এবং প্রিয় খাবার বন্য শুয়োর ও রুসা হরিনের সংঘ্যা দিন দিন কমতে থাকে ফলে খাবার ও বাসস্থলের জন্যে তারা নতুন আবাস ও খাদ্য খুঁজতে থাকে। তখন তাদের সামনে প্রধান খাদ্যের তালিকায় আসে জাভান বানর। কিন্তু এই বানর শিকারের জন্য তাদের নিয়মিত জাভান চিতার সাথে যুদ্ধ করতে হতো। এই ভাবেই চলতে চলতে জীবন যুদ্ধে হেরে যাই জাভান বাঘ। ১৯৭৬ সালে সর্বশেষ তাদের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। খাদ্য সংকট, নিম্ন আবাসস্থল এবং লোভী শিকারিদের জন্য পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় বাঘের এই উপ-প্রজাতিটি।   

জাভান বাঘ দেখতে অনেকটা আমাদের দেশের সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো দেখতে। গাজীপুর মধুপুরেও এই বাঘ দেখা যেত। কিন্তু শিকারের কারণে বর্তমানে বাংলাদেশে সুন্দরবনের প্রায় ৪৫০টির মতো রয়েছে। সুন্দরবনই এই প্রাণীর সবচেয়ে বড় ও শেষ আবাসস্থল। বেঙ্গল টাইগারের চামড়া খুব দামি হওয়ায় এটিও প্রচুর হারে শিকার হচ্ছে। তাছাড়া বন উজাড়ের কারণে এটি এখন বিলুপ্তির পথে তাই বাংলাদেশ সরকার ২০১২ সাল থেকে প্রজাতিটি সংরক্ষিত করার দায়িত্ব নিয়েছে।