সূর্যের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পৃথিবীতে আমাদের কাছে আর কিছুই নেই। পৃথিবী বরফ পাথরের প্রাণহীন হয়ে যেত। সূর্য হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম দিয়ে তৈরি একটি নক্ষত্র। পারমাণবিক ফিউশন থেকে এর তাপ এবং আলো আসে। পৃথিবীর ব্যাসের প্রায় ১০৯ গুণ বড় সূর্য। ১০ লক্ষ পৃথিবী সূর্যের ভিতরে বসানো যাবে। সূর্য প্রায় ৩৩৩,০০০ গুণ বেশি ভারী পৃথিবীর চেয়ে এবং এর শক্তিশালী মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবী সহ আটটি গ্রহকে তার কক্ষপথে আটকিয়ে রাখে। সূর্য প্রতি ১ সেকেন্ডে প্রায় ১০০ বিলিয়ন হাইড্রোজেন বোমা তৈরি করতে সক্ষম। পৃথিবী সূর্যের সাথে সংযোগ শক্তি থাকে যেরূপ আমরা যখন গ্যাসকে গরম করি তখন সাথে সাথে পরমাণুগুলি চার্জযুক্ত কণাতে ভেঙ্গে প্লাজমাতে রূপান্তরিত হয়। টিক তেমনি সূর্যের প্লাজমা এবং পৃথিবীর মধ্যে চুম্বকমণ্ডলের কারণে এরা মহা আকর্ষণবলে সংযোগ আকৃষ্ট হয়।
সূর্য আমাদের বায়ুমণ্ডল, মহাসাগরকে উষ্ণ করে আমাদের আবহাওয়াকে পরিবর্তন করে কখনো গ্রীষ্ম ,বর্ষা, শীত এবং নানা রকম আবহাওয়া তৈরী করে। সূর্য গাছ-পালাকে শক্তি দেয় যা থেকে বাকি সকল জীব খাদ্য এবং অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে। তাহলে চিন্তা করুন পিথিবীতে সূর্যের গুরুত্বপূর্ণতা কত। সূর্যের আলো ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসকে মেরে ফেলে। যদি সূর্যের আলো না থাকে তাহলে পৃথিবীতে মানুষ বিভিন্ন রকম ভাইরাসের শিকার হবে। সূর্যের আলো মানুষসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। তাছাড়া সূর্যের আলো ব্লাড প্রেসার কমায়, হাড় মজবুত করে।
সৃস্টিকর্তা সূর্য তৈরী না করলে সৌরজগতের সব গ্রহ, নক্ষত্র মহাশূন্যে হারিয়ে যেত। সূর্য না থাকলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটতো এবং আস্তে আস্তে সম্পূর্ণ গ্রহ, নক্ষত্র মহাশূন্য থেকে অদৃশ্য হয়ে যেত। আমাদের পৃথিবীর আলোর প্রধান উৎস হলো সূর্য। সূর্য প্রায় ২০০ কিলোমিটার পার সেকেন্ড গতিতে গুরতে থাকে এবং পৃথিবীতে আলো পোঁছাতে তার সময় লাগে ৮ মিনিট। সুতরাং হটাৎ যদি সূর্য অদৃশ্য হয়ে যায় তাহলে কিন্তু আমরা কিন্তু সাথে সাথে বুজবো না আমাদের বুজতেও সময় লাগবে ৮ মিনিট। কিন্তু এই ৮ মিনিটের ভিতরেই সব গ্রহ, নক্ষত্র মহাশূন্যে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে একে ওপরের সাথে ধাক্কা খাবে এবং একরকম মহা অশান্তি ঘটনা ঘটবে।
সৌভাগ্যবশত যদি পৃথিবী কোনো গ্রহের সাথে ধাক্কা না খাই তাহলেও সমস্যা পরবে তবে তাৎক্ষণিক সমস্যা হবে না। তখনও আগুন আর বিদ্যুৎ থাকবে। এবং আকাশের তারা গুলো তখনও আলো দেবে। সমস্যা সৃষ্টি হবে ৮ মিনিট পর পরিবেশ ঠান্ডা হতে শুরু করবে আবার সূর্যের আলো ছাড়া উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রস্তুত করতে পারবে না। ছোট গাছগুলো কয়েকদিনের মধ্যেই খাবারের অভাবে মারা যাবে। আর বড় ছোট গুলো কিছুদিন স্থায়ী হবে।
সূর্য না থাকলে, পৃথিবী দ্রুত ঠান্ডা জায়গায় পরিণত হতে থাকবে। যেহুতু পৃথিবী তাপ ধরে রাখার ক্ষমতা রাখে তাই মানুষ সাথে সাথে হিমায়িত বা বরফে রূপান্তরিত হবে না। সূর্যের তাপ ছাড়া পৃথিবী এক সপ্তাহের মধ্যে তাপমাত্রা মাইনাস শুন্যে ডিগ্রি সেলসিয়াসের এর নিচে চলে আসবে। এবং বছরের শেষে পৃথিবীর তাপমাত্রা মাইনাস ৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর নিচে চলে আসবে। সকল প্রাণীর জীবন কঠিন হয়ে পরবে। পৃথিবীর মহাসাগরের পানি বরফে পরিণত হবে চার দিকে শুধু বরফ আর বরফ। তখন যদি আমরা পৃথিবীর মধ্যবর্তি অভ্যন্তরের কোর অঞ্চলে যায় তাহলে আমরা শান্তি অনুভব করবো। কিন্তু সেখানে আমাদের খাদ্যের অভাবে আমাদের মারা যেতে হবে। সূর্যের অভাবে মহাকর্ষ বলহীন পৃথিবী মহাকাশে ভাসতে থাকবে যদি পৃথিবীর ভাগ্য ভালো থাকে তাহলে সূর্যের মতো আরেকটি নক্ষত্র আকর্ষণ করে তারদিকে নিয়ে নিবে। সূর্যের মতো নক্ষত্র মহাবিশ্বে কোটি কোটি আছে এবং পৃথিবী তার সামঞ্জস্যপূর্ণ আবার ফিরে পাবে কিন্তু যদি ব্ল্যাক হলের সামনে পরে তাহলে কি হবে তা কারোর জানা নেই।