প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ ১০ বছরে সীমাবদ্ধ করতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য

27 Jul, 2025

প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ ১০ বছরে সীমাবদ্ধ করতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বোচ্চ ১০ বছর নির্ধারণে ঐকমত্য, স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাব

দেশের রাজনৈতিক সংস্কারে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে, প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য একজন ব্যক্তির সর্বোচ্চ মেয়াদ ১০ বছর নির্ধারণে ঐকমত্যে পৌঁছেছে দেশের ৩০টি রাজনৈতিক দল। একইসঙ্গে একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে নীতিগত সমর্থন জানিয়েছে দলগুলো।

রোববার (২৭ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৯তম দিনে এই ঐতিহাসিক মতৈক্য গঠিত হয়।

বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ জানান, “প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর দায়িত্ব পালন করবেন—এই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে এবং এটি জাতীয় সনদের অংশ হিসেবে সংযুক্ত করা হবে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “১০ বছরের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকবেন না—এটি আমাদের দীর্ঘদিনের অবস্থান। তবে আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি, সংবিধান সংশোধনের পাশাপাশি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিশ্চিত না হলে এই শর্ত পুনর্বিবেচনা করতে হতে পারে।”

স্বাধীন পুলিশ কমিশনের খসড়া কাঠামো উপস্থাপন

এদিন আরও একটি উল্লেখযোগ্য আলোচনা হয় স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন নিয়ে। কমিশনের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবিত কাঠামো উপস্থাপন করা হয়, যা উপস্থিত রাজনৈতিক দলগুলো নীতিগতভাবে সমর্থন জানায়।

প্রস্তাব অনুযায়ী, এই কমিশনের নেতৃত্বে থাকবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত আপিল বিভাগের বিচারপতি (যার বয়স ৭২ বছরের নিচে)। সদস্য সচিব হবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি (৬২ বছরের নিচে)।

কমিশনে সরকার ও বিরোধী দলের প্রতিনিধি ছাড়াও থাকবেন স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, একজন মানবাধিকারকর্মী, একজন সিনিয়র আইনজীবী এবং অন্তত দুইজন নারী সদস্য। চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিব উভয়ই পূর্ণকালীন দায়িত্বে থাকবেন।

এই কমিশনের কার্যক্রম, জবাবদিহিতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতি নির্ধারিত হবে একটি স্বতন্ত্র আইন দ্বারা। এর মূল লক্ষ্য হবে পুলিশ বাহিনীর পেশাদারিত্ব, জবাবদিহিতা এবং জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপন।

জাতীয় সনদের খসড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে

ড. আলী রীয়াজ আরও জানান, সোমবারের মধ্যেই অংশগ্রহণকারী সব দলের কাছে জাতীয় সনদের খসড়া পাঠানো হবে। আগস্ট মাসের মধ্যেই একটি সমন্বিত গণতান্ত্রিক রোডম্যাপ প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে।