27 Jul, 2025
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায় জানতে হলে প্রথমে বুঝতে হবে তৈলাক্ত ত্বক আসলে কী এবং এর সঙ্গে ব্রণের সম্পর্ক কীভাবে তৈরি হয়। তৈলাক্ত ত্বকে সেবাসিয়াস গ্রন্থি অতিরিক্ত তেল (সিবাম) উৎপন্ন করে, যা ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করে দিতে পারে। ফলে ব্যাকটেরিয়া জমে গিয়ে তৈরি হয় ব্রণ। বিশেষ করে মুখ, কপাল, নাক ও চিবুক অংশে এটি বেশি দেখা যায়। তাই তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন না নিলে ব্রণের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়ে।
তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হওয়ার প্রধান কিছু কারণ হলো:
অতিরিক্ত সিবাম উৎপাদন – সিবাম লোমকূপে জমে লোমের ছিদ্র বন্ধ করে দেয়, যা ব্রণের সৃষ্টি করে।
ডেড স্কিন জমে থাকা – মৃত কোষ ঠিকভাবে পরিষ্কার না হলে তা সিবামের সঙ্গে মিশে ব্রণ তৈরি করে।
ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি – তৈলাক্ত ত্বকে Propionibacterium acnes নামক ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বাড়ে, যা ব্রণ সৃষ্টি করে।
হরমোনের প্রভাব – বয়ঃসন্ধিকাল, পিরিয়ড, গর্ভাবস্থা বা মানসিক চাপের সময় হরমোন পরিবর্তনের কারণে সিবাম বেড়ে যায়।
ভুল স্কিন কেয়ার পণ্য ব্যবহার – তৈলাক্ত ত্বকে অতিরিক্ত তেলযুক্ত বা কমেডোজেনিক পণ্য ব্রণ বাড়িয়ে তোলে।
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায় বেছে নিতে হলে আগে এর ধরণ ও লক্ষণ বুঝে নিতে হয়। সাধারণত দেখা যায়:
হোয়াইটহেডস (Whiteheads): বন্ধ লোমকূপে সাদা মাথাযুক্ত ছোট ব্রণ।
ব্ল্যাকহেডস (Blackheads): খোলা লোমকূপে জমে থাকা কালো বর্ণের ব্রণ।
পাপুলস (Papules): লালচে, নরম, ব্যথাযুক্ত ছোট ফোঁড়া।
পুসটুলস (Pustules): মাথায় পুঁজযুক্ত ব্রণ।
নোডিউলস ও সিস্টস (Nodules/Cysts): গভীর ও যন্ত্রণাদায়ক বড় ব্রণ, যা অনেক সময় দাগ ফেলে।
ত্বক সবসময় তেলতেলে দেখায়
নাক ও কপালে ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস বেশি
ত্বকে লালচে ফুসকুড়ি ও ব্যথাযুক্ত ফোঁড়া
ব্রণের দাগ বা গর্ত পড়ে যেতে পারে
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায় হিসেবে ঘরোয়া পদ্ধতি খুবই জনপ্রিয়, নিরাপদ ও ব্যয় সাশ্রয়ী। নিচে কিছু কার্যকর ও সহজে ঘরে বানানো প্যাক বা উপায় আলোচনা করা হলো:
কেন উপকারী?
বেসন অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং ত্বককে এক্সফোলিয়েট করে। অন্যদিকে, গোলাপজল ত্বককে ঠান্ডা ও সতেজ রাখে।
ব্যবহারবিধি:
২ চামচ বেসনের সঙ্গে পরিমাণমতো গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
মুখে মাখুন ও ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন।
শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সপ্তাহে ৩ বার ব্যবহার করুন।
ফলাফল:
ত্বক তেলমুক্ত ও পরিষ্কার থাকবে, ব্রণ কমে যাবে।
কেন উপকারী?
মুলতানি মাটি প্রাকৃতিক ক্লে, যা ত্বকের গভীর থেকে ময়লা ও তেল শোষণ করে। এতে ব্রণ কমে যায় এবং লোমকূপ সংকুচিত হয়।
ব্যবহারবিধি:
১ চামচ মুলতানি মাটি ও ১ চামচ গোলাপজল বা পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন।
শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করুন।
ফলাফল:
ত্বক মসৃণ ও তেলমুক্ত হবে, ব্রণের ঝুঁকি কমবে।
কেন উপকারী?
অ্যালোভেরা ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে। এটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য একদম উপযোগী।
ব্যবহারবিধি:
একটি তাজা অ্যালোভেরা পাতার জেল বের করে নিন।
প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে মুখে লাগান।
সকালে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ফলাফল:
ত্বক ঠাণ্ডা থাকবে, ব্রণ ও দাগ কমবে।
কেন উপকারী?
লেবুর রসে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যাসিড, যা ব্যাকটেরিয়া নষ্ট করে এবং ত্বক ফর্সা করে। মধু অ্যান্টিসেপটিক ও ময়েশ্চারাইজিং উপাদান।
ব্যবহারবিধি:
১ চামচ লেবুর রস ও ১ চামচ মধু মিশিয়ে নিন।
মুখে মাখিয়ে ১০-১৫ মিনিট রাখুন।
তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করুন।
ফলাফল:
ব্রণ কমবে, ত্বক হবে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর।
কেন উপকারী?
টক দইয়ে থাকে ল্যাকটিক অ্যাসিড, যা ত্বকের মরা কোষ সরিয়ে দিয়ে ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। মধু জীবাণুনাশক।
ব্যবহারবিধি:
১ চামচ টক দই ও ১ চামচ মধু মিশিয়ে পেস্ট বানান।
মুখে মাখিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন।
ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করুন।
কেন উপকারী?
টী ট্রি অয়েলে থাকে শক্তিশালী অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ব্রণের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।
ব্যবহারবিধি:
১ ফোঁটা টী ট্রি অয়েল ২-৩ ফোঁটা পানি বা অ্যালোভেরার সঙ্গে মিশিয়ে শুধু ব্রণের ওপর লাগান।
দিনে ১-২ বার ব্যবহার করুন।
সরাসরি লাগাবেন না, ত্বক পুড়ে যেতে পারে।
কেন উপকারী?
শসা ত্বক ঠাণ্ডা রাখে এবং অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করে।
ব্যবহারবিধি:
শসা ব্লেন্ড করে রস বের করুন।
তুলার সাহায্যে মুখে লাগান।
১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
প্রতিদিন ব্যবহার করা যায়।
কেন উপকারী?
চন্দনের গুঁড়ো ত্বকের লালচে ভাব ও ব্রণ দূর করে। গোলাপজল স্কিন টোন ঠিক রাখে।
ব্যবহারবিধি:
১ চামচ চন্দনের গুঁড়া ও পরিমাণমতো গোলাপজল মিশিয়ে প্যাক বানান।
মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করুন।
কেন উপকারী?
নিমে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান, যা ব্রণ কমাতে দারুণ কাজ করে।
ব্যবহারবিধি:
তাজা নিমপাতা বেটে সামান্য পানি মিশিয়ে মুখে লাগান।
১০-১৫ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সপ্তাহে ২ দিন করলেই উপকার পাবেন।
কেন উপকারী?
টি ট্রি অয়েল অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানে সমৃদ্ধ, যা ব্রণের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।
ব্যবহারবিধি:
১ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল ২ ফোঁটা পানি বা অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে তুলো দিয়ে লাগান।
দিনে ১–২ বার ব্যবহার করুন।
ফলাফল:
ব্রণের ফোলাভাব ও লালচে ভাব কমে যাবে।
কেন উপকারী?
দই ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণ করে এবং বেসন স্কিন ক্লিনজ করে।
ব্যবহারবিধি:
১ চামচ দই + ১ চামচ বেসন মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন।
মুখে মাখিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন, তারপর ধুয়ে ফেলুন।
সপ্তাহে ২–৩ বার ব্যবহার করুন।
ফলাফল:
ত্বক হবে মসৃণ ও পরিষ্কার, ব্রণ কমবে।
কেন উপকারী?
পেঁয়াজ অ্যান্টিসেপটিক এবং হলুদ অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, যা ব্রণ শুকাতে সাহায্য করে।
ব্যবহারবিধি:
১ চামচ পেঁয়াজের রসে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান।
১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
ফলাফল:
ব্রণ দ্রুত শুকাবে এবং ত্বক পরিষ্কার থাকবে।
কেন উপকারী?
তুলসীতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে যা ব্রণের ব্যাকটেরিয়া দূর করে।
ব্যবহারবিধি:
কয়েকটি তাজা তুলসী পাতা বেটে ব্রণের স্থানে লাগান।
১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
ফলাফল:
ত্বকের ইনফেকশন কমবে ও ব্রণ দূর হবে।
কেন উপকারী?
শসা ত্বক ঠান্ডা রাখে, তেল নিয়ন্ত্রণ করে এবং লোমকূপ সংকুচিত করে।
ব্যবহারবিধি:
শসা ব্লেন্ড করে রস বের করে মুখে তুলো দিয়ে লাগান।
১৫-২০ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ফলাফল:
ত্বক টানটান ও তাজা দেখাবে, ব্রণ কমবে।
নোট: উপরের সব উপায় ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট করুন। যাদের ত্বক অতিমাত্রায় সংবেদনশীল, তারা ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিতে পারেন।
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায় শুধু ঘরোয়া প্রতিকারেই সীমাবদ্ধ নয়, বাজারে এমন অনেক স্কিন কেয়ার পণ্য আছে যেগুলো নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে।
কেন দরকার?
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য তেলমুক্ত ফেসওয়াশ অপরিহার্য। এটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত সিবাম ও ধুলাবালি পরিষ্কার করে।
বাজারে পাওয়া কিছু জনপ্রিয় অয়েল ফ্রি ফেসওয়াশ:
Clean & Clear Foaming Face Wash
Neutrogena Oil-Free Acne Wash
Himalaya Purifying Neem Face Wash
ব্যবহার:
দিনে ২ বার (সকাল-রাত) ব্যবহার করুন।
কেন উপকারী?
স্যালিসাইলিক অ্যাসিড লোমকূপের ভেতরে প্রবেশ করে তেল ও মৃত কোষ পরিষ্কার করে। এটি ব্রণ শুকাতে ও নতুন ব্রণ প্রতিরোধে কার্যকর।
বাজারে জনপ্রিয় কিছু পণ্য:
The Ordinary Salicylic Acid 2% Solution
La Roche-Posay Effaclar Duo
CeraVe SA Cleanser
ব্যবহার:
দিনে ১ বার ব্যবহারের মাধ্যমে শুরু করুন, ত্বক সহ্য করলে দিনে ২ বার।
কেন দরকার?
অনেকে মনে করেন তৈলাক্ত ত্বকে ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এটি ভুল। ত্বক হাইড্রেট না থাকলে আরও বেশি তেল তৈরি করে। তাই নন-কমেডোজেনিক, অর্থাৎ লোমকূপ বন্ধ না করে এমন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
জনপ্রিয় পণ্য:
Neutrogena Hydro Boost Water Gel
Cetaphil Oil-Free Moisturizer
Simple Hydrating Light Moisturizer
ব্যবহার:
ফেসওয়াশের পর হালকা করে পুরো মুখে লাগান।
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায় জানতে হলে শুধু প্রোডাক্ট ব্যবহার করলেই হবে না, কিছু বাজে অভ্যাস বাদ দিতেও হবে। নিচে এমন কিছু অভ্যাস বলা হলো:
হাতের ব্যাকটেরিয়া মুখে চলে যায়, ফলে ব্রণ হয়।
তৈলাক্ত ত্বকে হেভি মেকআপ বা অয়েল বেসড প্রোডাক্ট ব্রণ বাড়ায়।
রাতে ত্বক পরিষ্কার না করলে লোমকূপ বন্ধ হয়ে ব্রণ হয়।
অতিরিক্ত স্ক্রাব করলে ত্বক উত্তেজিত হয় এবং ব্রণ আরও বেড়ে যায়।
ফাস্টফুড, চকলেট, বা ভাজাভুজি অতিরিক্ত খেলে ত্বকে তেল বেড়ে যায়।
পানি কম খেলে শরীরের টক্সিন ঠিকভাবে বের হয় না, যার প্রভাব পড়ে ত্বকে।
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায় বলতে শুধু বাহ্যিক যত্ন নয়, ভেতর থেকেও যত্ন নিতে হয়। আপনার খাবার ও পানি খাওয়ার অভ্যাস ত্বকের স্বাস্থ্যের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত।
শাকসবজি ও ফলমূল: ভিটামিন A, C, E যুক্ত খাবার ত্বক সুস্থ রাখে।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: যেমন – বাদাম, চিয়া সিড, মেথি বীজ – প্রদাহ কমায়।
জিঙ্কযুক্ত খাবার: ব্রণ প্রতিরোধে সহায়তা করে (যেমন – ডাল, বীজ, দুধ)।
ভাজা-পোড়া খাবার
বেশি চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার
সফট ড্রিংক ও জাঙ্ক ফুড
ডেইরি (কিছু ক্ষেত্রে) ব্রণ বাড়াতে পারে
প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
পানি ত্বক পরিষ্কার রাখে এবং টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
যদি ঘরোয়া উপায় ও বাজারের পণ্য ব্যবহার করেও তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায় কার্যকর না হয়, তাহলে ডার্মাটোলজিস্টের সাহায্য নেওয়া জরুরি।
ব্রণ অনেক দিন ধরে রয়েছে ও কমছে না
নোডিউল বা সিস্ট টাইপ ব্রণ হচ্ছে (ব্যথাযুক্ত ও গভীর)
মুখে দাগ ও গর্ত পড়ে যাচ্ছে
বারবার ব্রণ ওঠে এবং নিজে থেকেই ছড়িয়ে পড়ে
ত্বক খুব বেশি সংবেদনশীল ও ঘরে কিছুই সহ্য হয় না
ওষুধ (মুখে খাওয়া বা স্কিনে লাগানোর)
মেডিকেল ফেসিয়াল বা ক্লিনিকাল ট্রিটমেন্ট
হরমোন চেকআপ (বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে)
অ্যান্টিবায়োটিক বা রেটিনয়েড থেরাপি
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায় হল নিয়মিত যত্ন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পরিচ্ছন্নতা এবং সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ। প্রতিদিনের সাধারণ অভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন আনলেই আপনি ব্রণমুক্ত, মসৃণ ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে পারেন।
মুখে বারবার হাত না দেওয়া, পরিষ্কার তোয়ালে ব্যবহার, ঘুম ঠিক রাখা এবং মানসিক চাপ কমানো — এগুলো ছোট ছোট অভ্যাস হলেও ব্রণ প্রতিরোধে বড় ভূমিকা রাখে।
শেষ কথা — প্রাকৃতিক যত্ন, সঠিক পণ্য, এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন — এই তিনে মিলেই আপনি পেতে পারেন একটানা ব্রণমুক্ত ত্বক।
প্রশ্ন ১: তৈলাক্ত ত্বক কেন হয়?
অতিরিক্ত সিবাম উৎপাদনের কারণে ত্বক তৈলাক্ত হয়। হরমোন, জিনগত কারণ, খাদ্যাভ্যাস এবং স্ট্রেস এ ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে।
প্রশ্ন ২: তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ কত বছর পর্যন্ত থাকে?
সাধারণত বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু হয়ে ২০–৩০ বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। তবে কারো ক্ষেত্রে ৪০ বছর পর্যন্তও ব্রণ দেখা যায়।
প্রশ্ন ৩: মুখের ব্রণ সমস্যার সমাধান কী?
নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার রাখা, অয়েল ফ্রি প্রোডাক্ট ব্যবহার করা, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োজনে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া।
প্রশ্ন ৪: মুখের তৈলাক্ততা দূর করব কিভাবে?
দিনে ২ বার অয়েল ফ্রি ফেসওয়াশ ব্যবহার, টোনার লাগানো এবং হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
প্রশ্ন ৫: ব্রণের জন্য কোন ফেসওয়াশ ভালো?
স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা নিয়ামাসিনযুক্ত অয়েল ফ্রি ফেসওয়াশ ভালো, যেমন Neutrogena Oil-Free Acne Wash, Himalaya Neem Face Wash।
প্রশ্ন ৬: তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কোন ৫টি স্ক্রাব কার্যকরী?
মুলতানি মাটি ও গোলাপজল স্ক্রাব
ওটমিল ও মধুর স্ক্রাব
কফি ও দই মিশ্রণ
লেবু ও চিনি স্ক্রাব
বেসন ও হলুদ স্ক্রাব
প্রশ্ন ৭: তৈলাক্ত ত্বকে লেবু দিলে কি হয়?
লেবুর অ্যাসিড ব্রণ কমাতে সাহায্য করে, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারে ত্বক রুক্ষ বা জ্বালাপোড়া হতে পারে।
প্রশ্ন ৮: প্রতিদিন মুখে বরফ দিলে কি হয়?
লোমকূপ সংকুচিত হয়, তেল নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ব্রণের ফোলাভাব কমে যায়।
প্রশ্ন ৯: মুখে লেবু দিলে কি ক্ষতি হয়?
লেবু সরাসরি মুখে দিলে সানবার্ন, লালচে ভাব, বা ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে, তাই গোলাপজল বা মধুর সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করাই ভালো।
প্রশ্ন ১০: কি করলে ব্রণ ভালো হয়?
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, সঠিক পণ্য ব্যবহার, ঘরোয়া যত্ন ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন।
প্রশ্ন ১১: ব্রণে লেবুর রস দিলে কি হয়?
এটি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ও দাগ হালকা করতে সাহায্য করে, তবে সংবেদনশীল ত্বকে জ্বালাপোড়া দিতে পারে।
প্রশ্ন ১২: তৈলাক্ত ত্বকের কি কি উপকারিতা রয়েছে?
এই ত্বক সহজে শুকায় না, বয়সের ছাপ দেরিতে পড়ে এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত উজ্জ্বল থাকে।
প্রশ্ন ১৩: প্রতিদিন মুখে মধু দিলে কি হয়?
মধু ত্বক হাইড্রেট করে, ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে এবং ত্বককে নরম ও ব্রণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।