14 Jul, 2025
বর্তমানে অনেকেই চুল পড়া ও পাতলা হয়ে যাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন। দূষণ, স্ট্রেস, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং ভুল হেয়ার কেয়ার রুটিনের কারণে চুল দুর্বল হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেরই প্রশ্ন—“১ মাসে চুল ঘন করার উপায় কী?” এই লেখায় আমরা ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপায়ে কীভাবে মাত্র এক মাসে চুল ঘন ও মজবুত করা যায়, তা জানব।
চুল পড়া খুব সাধারণ একটি সমস্যা। প্রতিদিন ৫০–১০০টা চুল পড়া স্বাভাবিক হলেও এর চেয়ে বেশি চুল পড়া চিন্তার বিষয়। পাতলা চুল আপনার আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দিতে পারে। এর পেছনে কারণ হতে পারে—
পুষ্টির অভাব
মানসিক চাপ
হরমোনের পরিবর্তন
অতিরিক্ত হিটিং বা কেমিক্যাল প্রোডাক্ট ব্যবহার
জেনেটিক সমস্যা
ঘন, শক্ত ও স্বাস্থ্যবান চুল শুধু সৌন্দর্য নয়, এটি ভালো স্বাস্থ্যের পরিচায়কও। চুল ঘন করলে—
আত্মবিশ্বাস বাড়ে
অল্প বয়সে টাক পড়ার সম্ভাবনা কমে
চুলে স্টাইল সহজ হয়
মাথার ত্বক ভালো থাকে
নিচে কিছু প্রাকৃতিক ও সহজ উপায় দেওয়া হলো, যা নিয়মিত ব্যবহার করলে ১ মাসের মধ্যেই চুল ঘন হওয়া শুরু করবে:
কেন কাজ করে:
পেঁয়াজে থাকে সালফার, যা চুলের ফলিকল মজবুত করে এবং রক্ত চলাচল বাড়ায়। এটি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
ব্যবহার পদ্ধতি:
১টি পেঁয়াজ ভালো করে ব্লেন্ড করে রস বের করে নিন
স্ক্যাল্পে সরাসরি লাগান
৩০ মিনিট রেখে দিন
তারপর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করুন
কেন কাজ করে:
নারকেল তেল চুলের গোড়া পুষ্টি দেয়, আর মেথিতে আছে লেকটিন যা চুল পড়া কমিয়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
ব্যবহার পদ্ধতি:
২ টেবিল চামচ নারকেল তেলে ১ চা চামচ মেথি বীজ দিন
১ রাত ভিজিয়ে রাখুন
পরদিন হালকা গরম করে স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন
১ ঘণ্টা পরে ধুয়ে ফেলুন
সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করুন
কেন কাজ করে:
এই তিনটি প্রাকৃতিক উপাদান বহু প্রাচীনকাল ধরে চুলের যত্নে ব্যবহৃত হচ্ছে। আমলকি চুলের রঙ বজায় রাখে, রীঠা পরিষ্কার করে, আর শিকাকাই চুলের গোড়া মজবুত করে।
ব্যবহার পদ্ধতি:
সমপরিমাণ আমলকি, রীঠা, শিকাকাই গুঁড়া নিয়ে পানিতে ১ রাত ভিজিয়ে রাখুন
সকালে সেটা ফুটিয়ে পেস্ট বানান
পেস্টটা চুলে ও স্ক্যাল্পে ৩০-৪০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন
পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
সপ্তাহে ১-২ বার
কেন কাজ করে:
ডিমে আছে প্রোটিন ও বায়োটিন, যা চুল গঠনের জন্য দরকারি। অলিভ অয়েল চুলে নরমতা ও ময়েশ্চার আনতে সাহায্য করে।
ব্যবহার পদ্ধতি:
১টি ডিমের সাদা অংশ নিন
তাতে ১ চা চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে দিন
চুলে ও মাথার ত্বকে লাগান
৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন
সপ্তাহে ১ বার ব্যবহার করুন
প্রাকৃতিক উপায়ে চুল ঘন করতে চাইলে ধৈর্য ও নিয়মিত চর্চা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। "১ মাসে চুল ঘন করার উপায়" অনুসরণ করলে আপনি স্পষ্ট পরিবর্তন দেখতে পাবেন। তবে ভালো ফল পেতে হলে ঘুম, খাদ্য ও মানসিক চাপের দিকেও নজর দিন।
চুল ঘন ও মজবুত রাখতে শুধু বাইরের যত্নই নয়, ভেতর থেকেও পুষ্টি জোগানো জরুরি। প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন এনে আপনি এক মাসের মধ্যে চুলে দৃশ্যমান উন্নতি আনতে পারেন।
চুল ভালো রাখতে যেসব ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণ:
ভিটামিন A: চুলের গোড়ায় প্রাকৃতিক তেল তৈরি করে স্ক্যাল্পকে সজীব রাখে।
ভিটামিন B7 (বায়োটিন): চুল পড়া কমায় এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
ভিটামিন C: রক্তসঞ্চালন বাড়ায় এবং কোলাজেন তৈরি করে চুলের গঠন মজবুত করে।
ভিটামিন E: চুলের কোষকে সুরক্ষা দেয় এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ভিটামিন D: হেয়ার ফলিকলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ।
এ ভিটামিনসমূহ ফল, সবজি, বাদাম, দুধ, ডিম ইত্যাদি প্রাকৃতিক খাদ্য থেকেই পাওয়া যায়।
চুল মূলত প্রোটিনের তৈরি। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত।
প্রাকৃতিক প্রোটিনের উৎস:
ডাল
শিমজাতীয় খাবার
ডিম
দুধ ও দই
বাদাম
বীজ (তিল, সূর্যমুখী বীজ)
প্রতিদিনের খাবারে এ উপাদানগুলো রাখলে চুলের বৃদ্ধি দ্রুত হবে।
শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো চুলও পানির উপর নির্ভরশীল। পানিশূন্যতা চুল শুষ্ক, দুর্বল ও ভঙ্গুর করে তোলে।
দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করুন
ফলমূল বা তরল খাবার বেশি খান
ডিহাইড্রেশন থেকে দূরে থাকুন
শরীর হাইড্রেটেড থাকলে স্ক্যাল্পেও রক্ত চলাচল ভালো হবে, যা চুল ঘন করতে সাহায্য করবে।
চুলে ঘনত্ব আনতে ঘরোয়া যত্ন ও নিয়মিত রুটিন অনুসরণ করাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সপ্তাহে ২–৩ বার গরম তেল ম্যাসাজ করুন
মাথার ত্বকে আঙুলের ডগায় হালকা করে ম্যাসাজ করুন
তেল দিয়ে ১–২ ঘণ্টা রেখে হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
তেল চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং চুলের গঠন মজবুত করে।
কোনো কেমিক্যাল নাম না নিয়ে কিছু প্রাকৃতিক পরামর্শ:
সালফেট ও পারাবেনমুক্ত হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করুন
শ্যাম্পু করার পর চুলে ঘরোয়া উপায়ে লেবুর রস ও পানির মিশ্রণ লাগাতে পারেন
কন্ডিশনার হিসেবে দই, অ্যালোভেরা জেল অথবা কলার পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন
চুলকে প্রাকৃতিকভাবে পরিষ্কার ও নরম রাখার জন্য এসবই যথেষ্ট।
প্রাকৃতিক হেয়ার মাস্ক আইডিয়া:
ডিম ও দই মাস্ক: প্রোটিন ও ময়েশ্চার বজায় রাখে
অ্যালোভেরা ও নারকেল তেল মাস্ক: স্ক্যাল্প ঠান্ডা রাখে ও চুল ঘন করে
মেথি বীজ পেস্ট মাস্ক: নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে
ব্যবহার পদ্ধতি:
সপ্তাহে ১ বার মাস্ক ব্যবহার করুন
৩০–৪৫ মিনিট চুলে রেখে হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
নিয়মিত ব্যবহারে ১ মাসের মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ করা যাবে
“১ মাসে চুল ঘন করার উপায়” যদি প্রাকৃতিক ও নিয়মিতভাবে অনুসরণ করা যায়, তাহলে তা বাস্তবিক ফল দিতে পারে। বাইরের যত্নের পাশাপাশি ভেতর থেকে শরীরকে পুষ্টি জোগালে চুল হবে ঘন, মজবুত ও উজ্জ্বল।
যদি প্রাকৃতিক উপায়ে ফল না পাওয়া যায়, তবে কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি আছে যেগুলো চুল ঘন করতে সহায়ক হতে পারে। তবে এসব পদ্ধতি গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
কি কাজ করে:
মিনোক্সিডিল একটি ঔষধি উপাদান, যা চুলের গোড়ায় রক্ত চলাচল বাড়িয়ে চুলের ফলিকল সক্রিয় করে তোলে। এটি সাধারণত সেরাম বা স্প্রে আকারে ব্যবহৃত হয়।
ব্যবহার:
প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে স্ক্যাল্পে ব্যবহার করতে হয়
পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা মাত্রা হতে পারে
ফল পেতে হলে নিয়মিত ও ধৈর্য সহকারে ব্যবহার করতে হয়
সতর্কতা:
সাইড ইফেক্ট হতে পারে, যেমন স্ক্যাল্পে চুলকানি
বন্ধ করলেই ফল উল্টো হতে পারে
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার না করাই ভালো
কি কাজ করে:
PRP থেরাপিতে নিজের শরীরের রক্ত থেকে প্লাজমা বের করে মাথার স্ক্যাল্পে ইনজেকশন দেওয়া হয়, যা চুলের ফলিকল জাগিয়ে তোলে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
কেন কার্যকর:
এটি প্রাকৃতিক কারণেই নিরাপদ
দাগ বা ক্ষত ছাড়াই চিকিৎসা সম্ভব
নিয়মিত সেশনে ভালো ফল পাওয়া যায়
দ্রষ্টব্য:
এটি তুলনামূলক ব্যয়বহুল
একজন দক্ষ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে করানো উচিত
“১ মাসে চুল ঘন করার উপায়” খুঁজতে গিয়ে অনেকেই ভুল প্রোডাক্ট বা কেমিক্যাল ব্যবহার করে চুল আরও নষ্ট করে ফেলেন। এজন্য একজন অভিজ্ঞ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বা হেয়ার কনসালটেন্টের সঙ্গে দেখা করা জরুরি।
চিকিৎসকের সাহায্যে আপনি জানতে পারবেন:
আপনার চুল পড়ার আসল কারণ
চুলের ধরণ অনুযায়ী উপযুক্ত চিকিৎসা
খাবার, লাইফস্টাইল ও হেয়ার কেয়ার পরিকল্পনা
চুল ঘন করার পাশাপাশি যেসব অভ্যাস চুল পড়া রোধে সাহায্য করে:
চুল পড়ার বড় একটি কারণ হচ্ছে স্ট্রেস বা টেনশন। স্ট্রেস হরমোন চুলের ফলিকল দুর্বল করে তোলে।
কি করবেন:
প্রতিদিন ১০–১৫ মিনিট মেডিটেশন বা প্রার্থনা
পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও পরিবার-বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো
সোশ্যাল মিডিয়া ও অতিরিক্ত কাজ থেকে দূরে থাকা
ঘুম না হলে শরীর রিকভারি করতে পারে না। এতে চুল দুর্বল হয়।
পরামর্শ:
প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমানো
রাত ১১টার আগেই ঘুমিয়ে পড়া
ঘুমানোর আগে মোবাইল বা টিভি এড়ানো
চুলে অতিরিক্ত স্টাইলিং, কালারিং বা হেয়ার ড্রায়ার/স্ট্রেইটনার ব্যবহার করলে চুল ভেঙে পড়ে।
কি করবেন না:
কেমিক্যাল রঙ বা পার্মিং
নিয়মিত হেয়ার স্ট্রেইটনার বা কার্লার
অতি গরম পানি দিয়ে মাথা ধোয়া
পরিবর্তে ব্যবহার করুন:
ঠান্ডা বা কুসুম গরম পানি
হেয়ার শুকানোর জন্য তোয়ালে ব্যবহার
প্রাকৃতিক উপাদানে হেয়ার মাস্ক ও অয়েলিং
যদি আপনি প্রাকৃতিক যত্নের পাশাপাশি প্রয়োজনে চিকিৎসা পরামর্শ নেন, তবে "১ মাসে চুল ঘন করার উপায়" বাস্তবেই সম্ভব হতে পারে। তবে যেকোনো ওষুধ বা চিকিৎসা শুরুর আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। আর সব সময় মাথায় রাখুন, নিয়মিততা ও ধৈর্যই সাফল্যের চাবিকাঠি।
চুল পড়ার কারণ ও সমাধান নারী ও পুরুষের মধ্যে ভিন্ন হতে পারে। তাই সবার জন্য কিছু নির্দিষ্ট পরামর্শ জানা দরকার।
স্ক্যাল্প ম্যাসাজ: সপ্তাহে ২–৩ দিন গরম তেল দিয়ে স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে ও চুল ঘন হয়।
চুল ছোট রাখুন: অতিরিক্ত লম্বা চুল পড়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। মাঝারি বা ছোট করে কাটা ভালো।
হেলমেট ব্যবহারে সতর্কতা: প্রতিদিন হেলমেট পরলে মাথা ঘামে ও চুলের গোড়া দুর্বল হয়। সুতরাং হেলমেট পরিষ্কার রাখুন এবং সুতির কাপড় ব্যবহার করুন।
জেল বা ওয়্যাক্স কম ব্যবহার করুন: এসব প্রোডাক্ট চুল শুকিয়ে দেয়, ফলিকল বন্ধ হয়ে যায় এবং নতুন চুল গজানো কমে যায়।
টাইট হেয়ার স্টাইল এড়ান: টাইট চুল বাঁধা (যেমন পনিটেল, বেণি) চুলের গোড়ায় চাপ ফেলে ও চুল পড়ে।
হেয়ার ব্রাশিং ধীরে করুন: ভেজা চুল ব্রাশ করবেন না। নরম দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন।
প্রাকৃতিক মাস্ক ব্যবহার করুন: ডিম, দই, মেথি, অ্যালোভেরা ইত্যাদি ব্যবহার করলে চুল ঘন হয়।
পিরিয়ড বা হরমোনজনিত সমস্যায় সচেতন থাকুন: পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত চুল পড়া হলে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন ও প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
অনেকে জানতে চান—“১ মাসে কি সত্যিই চুল ঘন হয়?” উত্তর হলো—হ্যাঁ, তবে তা বাস্তবসম্মত হওয়া উচিত।
এক মাসে চুল পড়া কমা শুরু করে
স্ক্যাল্পে নতুন চুল গজাতে শুরু করে, যা হাত দিলে টের পাওয়া যায়
চুল কম শুষ্ক বা রুক্ষ হয়ে ওঠে
চুলের ঘনত্ব ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে, তবে পুরোপুরি ঘন হতে সময় লাগে
চুল ঘন করার কাজটি রাতারাতি হয় না। প্রাকৃতিক ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অনুসরণ করলে ফল পেতে একটু সময় লাগে।
প্রতিদিন নিয়ম মেনে যত্ন নেওয়া
হাল ছেড়ে না দেওয়া
স্বাস্থ্যকর খাদ্য ও ঘুম বজায় রাখা
এগুলো মেনে চললে এক মাসে ভালো পরিবর্তন দেখা যাবে এবং দীর্ঘমেয়াদে দারুণ ফল পাওয়া সম্ভব।
“১ মাসে চুল ঘন করার উপায়” বাস্তবে সম্ভব — যদি আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে যত্ন নেন এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চলেন।
চুল ঘন করার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার যেমন পেঁয়াজের রস, নারকেল তেল, ডিম মাস্ক ইত্যাদি কার্যকর; তেমনি মেডিকেল দৃষ্টিকোণ থেকেও কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি উপকারী হতে পারে। তবে কেমিক্যাল এড়িয়ে চলাই ভালো।
চুলের যত্নে ধৈর্য ও নিয়মিততা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একদিন-দুইদিন করে ফল পাওয়া যাবে না, তবে আপনি যদি অন্তত ৩০ দিন নিয়ম মেনে সব কিছু করেন—তাহলে পরিবর্তন আপনি নিজেই টের পাবেন।
শেষ কথা:
চুল পড়া বা পাতলা চুল নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে আজ থেকেই যত্ন শুরু করুন। প্রকৃতি ও নিজের অভ্যাসই আপনাকে আবার ঘন, স্বাস্থ্যবান চুল ফিরিয়ে দেবে।
সাধারণভাবে প্রতি মাসে চুল গড়ে ১–১.৫ সেন্টিমিটার (প্রায় ০.৫ ইঞ্চি) পর্যন্ত বাড়ে। তবে খাবার, ঘুম, যত্ন ইত্যাদির উপর তা নির্ভর করে।
পেঁয়াজের রস, নারকেল তেল, মেথি বীজ, ডিম, আমলকি ও ভালো খাদ্যাভ্যাস চুল ঘন করতে সাহায্য করে।
মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রতি মাসে সাধারণত ০.৫ থেকে ০.৭ ইঞ্চি চুল বাড়ে, যদি যত্ন ঠিকমতো নেওয়া হয়।
প্রতিদিন সুষম খাদ্য গ্রহণ, স্ক্যাল্প ম্যাসাজ, পর্যাপ্ত পানি পান ও ঘরোয়া মাস্ক ব্যবহার করলে চুল দ্রুত বাড়ে।
৩০ দিনে গড়ে ১.২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত চুল গজাতে পারে। কারও ক্ষেত্রে একটু কম-বেশি হতে পারে।
দই, কলা, অ্যালোভেরা, নারকেল দুধ প্রাকৃতিকভাবে চুল কিছুটা মসৃণ করতে পারে। তবে স্থায়ীভাবে সোজা করতে কেমিক্যালের প্রয়োজন পড়ে।
ভালো ঘুম, স্ট্রেসমুক্ত থাকা, পুষ্টিকর খাবার, নিয়মিত তেল ম্যাসাজ ও মাসে ১-২ বার প্রাকৃতিক হেয়ার মাস্ক ব্যবহার।
চুল সাধারণত ৫০-৬০ বছর বয়স পর্যন্ত নিয়মিত গজায়, তবে জেনেটিক ও হরমোনের কারণে আগে বন্ধও হতে পারে।
লেবু স্ক্যাল্প পরিষ্কার করে ও খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহারে চুল শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
একটি চুলের আয়ু সাধারণত ২–৭ বছর হয়। এই সময়ের মধ্যে একটি চুল ৩-৪ ফুট পর্যন্ত বাড়তে পারে।
১ সেন্টিমিটার চুল প্রায় ০.39 ইঞ্চি বা চোখের পাতার দৈর্ঘ্যর সমান হয়।
প্রাকৃতিকভাবে না। সাধারণ বৃদ্ধি ০.৫–০.৭ ইঞ্চি। বিশেষ যত্নে ১ ইঞ্চির কাছাকাছি হতে পারে, কিন্তু ২ ইঞ্চি নয়।
না। সেলাই বা ইনজুরি করার ফলে চুল গজানোর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। বরং ক্ষত হলে উল্টো চুল উঠতে পারে না।
গড়ে চুল দিনে ০.৩ থেকে ০.৪ মিমি বাড়ে, অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ০.০১-০.০২ ইঞ্চি।
স্ট্রেস
ঘুমের অভাব
অনিয়মিত জীবনযাপন
ফাস্টফুড
হরমোনের পরিবর্তন
হস্তমৈথুন, স্মার্টফোন আসক্তি
বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ নেই, তবে অতিরিক্ত হস্তমৈথুন মানসিক চাপ তৈরি করে, যা চুল পড়ার কারণ হতে পারে।
হ্যাঁ, ঘুমের অভাব এবং রাত জাগা হরমোন ভারসাম্য নষ্ট করে চুল পড়ার কারণ হতে পারে।
অতিরিক্ত সফ্ট ড্রিংকস শরীরের হরমোন ব্যালেন্স ও লিভারের উপর চাপ ফেলে, যা চুল পড়ায় প্রভাব ফেলতে পারে।
মাথা ও মুখমণ্ডলে তুলনামূলকভাবে দ্রুত চুল গজায়, বিশেষ করে পুরুষদের দাড়ি-গোঁফে।
সাধারণত ১–২ ঘণ্টা রাখা ভালো। রাতভর রাখলে স্ক্যাল্প বেশি অয়েলি হয়ে যেতে পারে।
হ্যাঁ, এতে সালফার থাকে যা রক্ত চলাচল বাড়িয়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
পেঁয়াজের রস, নারকেল তেল, মেথি, ডিম, দই, আমলকি, সঠিক খাবার ও নিয়মিত ঘুম—সব মিলিয়ে ঘন চুল পেতে সাহায্য করে।
প্রাকৃতিক নারকেল তেল, অলিভ অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল চুল ঘন ও মজবুত করতে কার্যকর।
সাধারণত ১৫–৩০ বছর বয়সের মধ্যে চুল সবচেয়ে ঘন থাকে। এর পর ধীরে ধীরে পাতলা হতে থাকে।
প্রাকৃতিক হারে (প্রতি মাসে ০.৫ ইঞ্চি ধরলে) ৩ ইঞ্চি চুল বাড়তে প্রায় ৬ মাস সময় লাগে।
যখন আপনি স্বাস্থ্যকর খাবার, ঘুম ও প্রাকৃতিক যত্ন একসাথে করেন, তখন স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল বাড়ে, চুলের ফলিকল সক্রিয় হয় এবং চুল দ্রুত বাড়ে।