chakri pawar dua চাকরি পাওয়ার দোয়া

05 Aug, 2025

chakri pawar dua চাকরি পাওয়ার দোয়া

চাকরি পাওয়ার দোয়া আজকের দিনে অনেক মুসলমানের আগ্রহ ও অনুসন্ধানের বিষয় হয়ে উঠেছে। কারণ বর্তমান সময়ের চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা তীব্র এবং চাকরির সুযোগ সীমিত। শুধু ডিগ্রি বা অভিজ্ঞতা থাকলেই চাকরি মিলছে না—সেইসাথে প্রয়োজন হচ্ছে আল্লাহর রহমত ও সাহায্য। ইসলামে দোয়ার গুরুত্ব অপরিসীম, বিশেষ করে রিজিক ও জীবিকার জন্য। কোরআনুল কারিমে এমন একটি দোয়ার উল্লেখ আছে, যা আল্লাহর এক প্রিয় নবী করেছিলেন কঠিন মুহূর্তে। আজ আমরা সেই চাকরি পাওয়ার দোয়া ও তার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানবো, যা আপনার জীবনের পথে আলোকবর্তিকা হয়ে উঠতে পারে ইনশাআল্লাহ।


ভালো চাকরি পাওয়ার জন্য কোরআনি দোয়া ও তাসবিহ

বর্তমান যুগে একটি মানসম্মত চাকরি পাওয়া অনেকের কাছেই বড় একটি চ্যালেঞ্জ। প্রতিযোগিতা প্রচণ্ড, আর সুযোগ সীমিত। এই কঠিন বাস্তবতায় শুধু ডিগ্রি বা অভিজ্ঞতাই নয়, আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। কোরআনে এমন একটি দোয়ার উল্লেখ আছে, যা নবী মুসা (আ.) উচ্চারণ করেছিলেন কঠিন মুহূর্তে। সেই দোয়াই হতে পারে আমাদের চাকরির দুয়ার খুলে দেওয়ার চাবিকাঠি।


দোয়া

আরবি:

رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ

উচ্চারণ:  

'রাব্বি ইন্নি লিমা আংযালতা ইলাইয়্যা মিন খাইরিং ফাক্বির। '

অর্থ:  

‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার প্রতি যে কল্যাণ নাজিল করবে, নিশ্চয় আমি তার মুখাপেক্ষী।’

(সূরা আল-কাসাস: আয়াত ২৪)


ভালো চাকরির নিয়তে যিকির

تَسْبِيح (তাসবিহ):
يَا وَهَّابُ
উচ্চারণ: ইয়া ওয়াহ্‌হাবু
অর্থ: “হে কোনোরূপ প্রতিদান ছাড়া অধিক দানকারী।”

এই গুণবাচক নামটি বেশি বেশি পাঠ করুন, বিশেষ করে চাশতের নামাজের পর সিজদায় গিয়ে ৫০ অথবা ১০০ বার। এটি হজরত শাহ আবদুল আজিজ (রহ.)-এর বর্ণনায় রিজিক প্রশস্তির জন্য অত্যন্ত কার্যকর আমল হিসেবে বিবেচিত।


এই দোয়ার পেছনের ঘটনা (সংক্ষেপে)

নবী মুসা (আ.) এক সময় ফেরাউনের রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করে মাদইয়ান শহরে আশ্রয় নেন। সেসময় তার কোনো থাকার জায়গা, খাদ্য বা কাজ কিছুই ছিল না। এক কূপের ধারে দুই নারীকে পশু আগলে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি তাদের সহায়তা করেন। এরপর তিনি একটি ছায়াযুক্ত স্থানে গিয়ে আল্লাহর কাছে বলেন:

“হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ অবতীর্ণ করবে, আমি সেটার মুখাপেক্ষী।”
(সূরা কাসাস: আয়াত ২৪)

এই দোয়ার পরই একজন নারী তাকে তার বাবার কাছে নিয়ে যায়, এবং তিনি মুসা (আ.)-কে চাকরির প্রস্তাব দেন।
এ থেকে বোঝা যায়, আল্লাহর প্রতি দৃঢ় ভরসা ও দোয়া—একজন মুসলমানের জন্য জীবনের প্রতিটি সংকটে সবচেয়ে বড় আশ্রয়।


দোয়ার গুরুত্ব ও আমাদের করণীয়

আজকের সমাজে হারাম উপার্জন, প্রতারণা, ঘুষ ইত্যাদি অনেকের জীবিকা হয়ে উঠেছে। কিন্তু একজন মুসলমানের উচিত হালাল রিজিকের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করা। শুধু চাকরি খুঁজে বেড়ানোই নয়, বরং আল্লাহর কাছে সঠিক পথের চাকরি চাওয়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

"তোমরা আমার কাছে দোয়া করো। আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব।"
(সূরা মুমিন: আয়াত ৬০)


যারা চাকরির জন্য চেষ্টা করছেন, তাদের প্রতি পরামর্শ হলো— পরিশ্রম, চেষ্টা, দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি এই কোরআনি দোয়া ও তাসবিহ নিয়মিত পাঠ করুন। আল্লাহর কাছে একাগ্রচিত্তে দোয়া করুন যেন তিনি উত্তম রিজিক ও হালাল কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেন।


শেষ দোয়া

আল্লাহ তাআলা মুসলিম ভাই-বোনদের জন্য উত্তম রিজিক ও হালাল চাকরির ব্যবস্থা করুন। যারা বেকার, তাদের কর্মসংস্থান সহজ করে দিন। আমিন।

আজকের আলোচনায় আমরা যে দোয়া ও তাসবিহ সম্পর্কে জানলাম, তা শুধু একটি চাকরি পাওয়ার মাধ্যম নয়—বরং হালাল রিজিক, প্রশান্ত মন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ। বর্তমান সমাজে চাকরি পাওয়ার দোয়া অনুসন্ধানকারীর সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি ভুল ও ভিত্তিহীন দোয়ার ছড়াছড়িও কম নয়। তাই সহিহ কোরআনি দোয়া ও আল্লাহর গুণবাচক নামের ওপর নির্ভর করে আমল করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। আল্লাহ আমাদের প্রত্যেককে হালাল ও বরকতময় রিজিক দান করুন, উত্তম চাকরি ও কর্মসংস্থানের তাওফিক দিন। আমিন।