27 Jun, 2025
মানুষের জীবন চলার পথে ঋণ ও রিজিক (জীবিকা) দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রিজিক অর্থ শুধু টাকা-পয়সা নয়, বরং জীবনের প্রয়োজনীয় সব উপকরণ—খাদ্য, বস্তু, জ্ঞান, সুস্থতা, শান্তি—সবই রিজিকের অন্তর্ভুক্ত।
আর ঋণ হলো এমন একটি বোঝা যা কেবল আর্থিক সংকটই সৃষ্টি করে না, বরং মানসিক শান্তিও কেড়ে নেয়। ইসলাম ঋণ নেওয়া এবং তা সময়মতো শোধ করার বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"ঋণ একজন মুসলিমকে রাতে ঘুমাতে ও দিনে শান্তিতে থাকতে দেয় না।"
(মুসনাদে আহমাদ)
এছাড়া, রিজিক হালাল পথে অর্জনের উপর জোর দিয়ে ইসলাম আমাদের সততা, পরিশ্রম ও আল্লাহর উপর ভরসা করতে বলেছে। রিজিক শুধু আমাদের চেষ্টার ফল নয়, বরং এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। তাই আমরা দোয়া করি, যেন আল্লাহ আমাদের হালাল রিজিক বাড়িয়ে দেন এবং ঋণমুক্ত রাখেন।
দোয়া হল মুসলমানের সবচেয়ে বড় শক্তি। যখন আমরা নিজের চেষ্টার পরেও আর্থিক কষ্টে ভুগি বা ঋণের বোঝায় ভারাক্রান্ত হই, তখন আল্লাহর দরবারে হাত তুলে দোয়া করাই সবচেয়ে বড় ভরসা।
ঋণ থেকে মুক্তি ও রিজিক বৃদ্ধির জন্য রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন:
"হে আল্লাহ! আমি ঋণের ভার ও মানুষের চাপ থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই।"
(বুখারী ও মুসলিম)
1) «اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكِ عَمَّنْ سِوَاكَ».
(আল্লা-হুম্মাকফিনী বিহালা-লিকা ‘আন হারা-মিকা ওয়া আগনিনী বিফাদ্বলিকা ‘আম্মান সিওয়া-ক)।
১৩৬-(১) “হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আপনার হালাল দ্বারা পরিতুষ্ট করে আপনার হারাম থেকে ফিরিয়ে রাখুন এবং আপনার অনুগ্রহ দ্বারা আপনি ছাড়া অন্য সকলের থেকে আমাকে অমুখাপেক্ষী করে দিন।”[1]
(2) «اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَالْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ».
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘উযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিনাল-‘আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিনাল-বুখলি ওয়াল-জুবনি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন দ্বালা‘য়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজা-ল।
১৩৭-(২) “হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে।”[2]
[1] তিরমিযী ৫/৫৬০, নং ৩৫৬৩। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৮০।
[2] বুখারী, ৭/১৫৮, নং ২৮৯৩। তাছাড়া পূর্বে পৃষ্ঠায় ১২১ নং এ গত হয়েছে।
আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) দোয়া করতেন,
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল মা-ছামি ওয়াল মাগরামি।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে পাপ ও ঋণ থেকে আশ্রয় চাই।’
আবু উমামা (রা.) একবার নবী করিম (সা.)-কে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, ঋণের বোঝা ও দুশ্চিন্তা আমাকে ঘিরে ধরেছে।’ রাসুল (সা.) সকাল–সন্ধ্যায় তাঁকে এই দোয়া পড়তে বললেন—
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল আজজি ওয়াল কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া আউজু বিকা মিন দ্বালায়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষের দমন-পীড়ন থেকে।’
ঋণ থেকে মুক্তি পেতে আলি (রা.)-কে নবীজি (সা.) একটি দোয়া শিখিয়েছিলেন। দোয়াটি হলো—
‘আল্লাহুম্মাক ফিনি বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক।’
অর্থ: হে আল্লাহ, হারামের পরিবর্তে তোমার হালাল রুজি আমার জন্য যথেষ্ট করো। আর তোমাকে ছাড়া আমাকে কারও মুখাপেক্ষী করো না। তোমার অনুগ্রহে আমাকে সচ্ছলতা দান করো।’
(তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৬৩; মুসনাদে আহমদ: ১৩২১)
হাদিসে ঋণ থেকে মুক্তির আরও কয়েকটি দোয়া রয়েছে,
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল-আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল-বুখলি ওয়াল-জুবনি, ওয়া আউজুবিকা মিন দ্বালায়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’
অর্থাৎ হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন–পীড়ন থেকে। (বুখারি, হাদিস: ২৮৯৩)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলতেন,
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল কাসালি, ওয়াল হারামি, ওয়াল মাছামি, ওয়াল মাগরামি।’
হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অলসতা, অধিক বার্ধক্য, গুনাহ ও ঋণ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (বুখারি, হাদিস: ৬০০৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) পড়তেন,
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি, ওয়াল আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়াল বুখলি ওয়াল-জুবনি, ওয়া দ্বালায়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’
অর্থাৎ হে আল্লাহ, নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন–পীড়ন থেকে। (বুখারি, হাদিস: ২৮৯৩)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চিন্তাযুক্ত অবস্থায় এই দোয়া পড়তেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِن ضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
উচ্চারণ : 'আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল আজযি ওয়ালকাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া আউজুবিকা মিন দ্বালায়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিঝাল।'
অর্থ : 'হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে।' (বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত)
- اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكِ عَمَّنْ سِوَاكَ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাকফিনি বিহালালিকা আন হারামিকা ওয়া আগনিনী বিফাদ্বলিকা আম্মান সিওয়াক।
অর্থ : 'হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আপনার হালালের সাহায্যে হারাম থেকে বাঁচান। এবং আপনার অনুগ্রহ দ্বারা আপনি ব্যতিত অন্যের মুখাপেক্ষিতা থেকে বাঁচান।' (তিরমিজি, মিশকাত)
দোয়া করলে আমাদের মনে শান্তি আসে, আশার আলো জ্বলে ওঠে এবং আল্লাহ তাআলা আমাদের সাহায্য করেন এমন পথ থেকে যেখান থেকে আমরা ধারণাও করি না।
দোয়ার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সাহায্য লাভের জন্য আহ্বান জানাই। ঋণমুক্তি ও রিজিক বৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দোয়া করা মানে হচ্ছে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখা ও তার অনুগ্রহ কামনা করা।
ঋণ একটি ভয়াবহ মানসিক ও আর্থিক বোঝা। ইসলাম ঋণ পরিশোধকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে এবং আল্লাহর সাহায্য চাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কিছু দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন। রাসূল (সা.) নিজেও ঋণ থেকে মুক্তির জন্য নিয়মিত দোয়া করতেন এবং সাহাবীদেরও তা শিক্ষা দিতেন।
এটি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো একটি দোয়া, যা তিনি এক সাহাবীকে ঋণমুক্তির জন্য প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় পড়তে বলেছিলেন:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَالْبُخْلِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدَّيْنِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ
উচ্চারণ:
Allahumma inni a’udhu bika minal-hammi wal-hazan, wa a’udhu bika minal-‘ajzi wal-kasal, wa a’udhu bika minal-jubni wal-bukhl, wa a’udhu bika min ghalabatid-dayni wa qahrir-rijal.
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল-আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল-বুখলি ওয়াল-জুবনি, ওয়া আউজুবিকা মিন দ্বালায়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’
বাংলা অর্থ:
“হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই দুঃখ ও চিন্তা থেকে, অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, কাপুরুষতা ও কৃপণতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষের জুলুম থেকে।”
[সহীহ বুখারী, হাদিস: ২৮৯৩]
সাহাবীরা দুঃসময়ে রাসূল (সা.)-এর শেখানো দোয়া পাঠ করতেন। একবার এক সাহাবী দারিদ্র্যে পড়ে যান, তখন তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গিয়ে দোয়ার পরামর্শ চান। রাসূল (সা.) তাঁকে এই দোয়া শিখিয়ে দেন:
اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
উচ্চারণ:
Allahummakfini bihalalika ‘an haramika, wa aghnini bifadlika ‘amman siwak.
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাকফিনি বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক।
বাংলা অর্থ:
“হে আল্লাহ! তুমি আমাকে হালাল উপায়ে এতটাই সংযুক্ত করে দাও যেন হারাম থেকে দূরে থাকতে পারি এবং তোমার অনুগ্রহের মাধ্যমে যেন কারো মুখাপেক্ষী না হই।”
তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৬৩]
এই ছোট দোয়াটি অনেক সহজ, কিন্তু অত্যন্ত অর্থবহ। এটি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠ করতেন:
رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنْزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
উচ্চারণ:
Rabbi inni lima anzalta ilayya min khayrin faqir.
বাংলা উচ্চারণ-রব্বি ইন্নী লিমা আনযালতা ইলাইয়্যা মিন খাইরিন ফাকীর
বাংলা অর্থ:
“হে আমার পালনকর্তা! আপনি আমার প্রতি যে কল্যাণ পাঠাবেন, আমি তারই মুখাপেক্ষী।”
[সূরা কাসাস, আয়াত: ২৪]
এটি হজরত মূসা (আ.)-এর দোয়া, যখন তিনি একাকী ও নিরুপায় হয়ে মাদিয়ান নগরে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
পাঠকের করণীয়:
রিজিক বা জীবিকা আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। তবে তিনি আমাদের চেষ্টা, দোয়া ও তাকওয়ার মাধ্যমে রিজিক বাড়িয়ে দেন। ইসলাম আমাদের এমন কিছু দোয়া ও আমলের শিক্ষা দিয়েছে যা নিয়মিত পাঠ করলে হালাল রিজিকের দরজা খুলে যায়, বরকত আসে জীবনে, ও দারিদ্র্য দূর হয়।
কোরআনে এমন বহু দোয়া রয়েছে, যা রিজিক ও কল্যাণের জন্য উপযোগী। নিচে একটি বিশেষ দোয়া দেওয়া হলো:
وَارْزُقْنَا وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ
উচ্চারণ:
Warzuqna wa anta khayrur-raziqeen.
ওয়ায্কুরনা ওয়া আংতা খাইরুর রাযিক্বীন
বাংলা অর্থ:
“আমাদের রিজিক দাও, আর তুমিই উত্তম রিজিকদাতা।”
[সূরা আল-মায়িদা: ১১৪]
এটি হজরত ঈসা (আ.)-এর দোয়া, যা তিনি আল্লাহর কাছে খাবার চেয়ে করেছিলেন। এটি হালাল রিজিক চাওয়ার জন্য খুব শক্তিশালী দোয়া।
নবী করিম (সা.) নিজেও হালাল রিজিক ও বরকতের জন্য আল্লাহর কাছে বিশেষ দোয়া করতেন। নিচে একটি সহিহ হাদিসের দোয়া:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا، وَرِزْقًا طَيِّبًا، وَعَمَلًا مُتَقَبَّلًا
উচ্চারণ:
Allahumma inni as'aluka ‘ilman nafi‘an, wa rizqan tayyiban, wa ‘amalan mutaqabbalan.
আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিয়া, ওয়া রিজকান তাইয়িবা, ওয়া আমালান মুতাকাব্বালা
বাংলা অর্থ:
“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে উপকারি জ্ঞান, পবিত্র রিজিক ও কবুলযোগ্য আমল প্রার্থনা করি।”
[ইবনে মাজাহ: ৯২৫]
এই দোয়াটি সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর পড়ার জন্য বিশেষভাবে সুপারিশকৃত।
নিম্নের ছোট দোয়াগুলো প্রতিদিন পড়া খুব সহজ এবং এগুলোতে বরকত ও রিজিকের দরজা খুলে দেয়:
اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
(আল্লা-হুম্মাকফিনী বিহালা-লিকা ‘আন হারা-মিকা ওয়া আগনিনী বিফাদ্বলিকা ‘আম্মান সিওয়া-ক)।
১৩৬-(১) “হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আপনার হালাল দ্বারা পরিতুষ্ট করে আপনার হারাম থেকে ফিরিয়ে রাখুন এবং আপনার অনুগ্রহ দ্বারা আপনি ছাড়া অন্য সকলের থেকে আমাকে অমুখাপেক্ষী করে দিন।”[1]
(উপরের “ঋণমুক্তির দোয়া”-তেও দেওয়া আছে, কিন্তু রিজিক বৃদ্ধির জন্যও কার্যকর)
اللَّهُمَّ بَارِكْ لِي فِي رِزْقِي
উচ্চারণ:
Allahumma barik li fi rizqi
আল্লাহুম্মা বারিক লী ফী রিজ্কী
বাংলা অর্থ:
“হে আল্লাহ! আপনি আমার রিজিকে বরকত দান করুন।”
اللَّهُمَّ ارْزُقْنِي مِنْ حَيْثُ لَا أَحْتَسِبُ
উচ্চারণ:
Allahummarzuqni min haythu la ahtasib.
আল্লাহুম্মার জুক্বনী মিন হাইছু লা আখতাসিব
বাংলা অর্থ:
“হে আল্লাহ! আপনি আমাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দিন, যা আমি কল্পনাও করতে পারি না।”
পাঠকের করণীয়:
ঋণ ও আর্থিক সংকট অনেকের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। শুধু দোয়া করাই নয়, ইসলাম আমাদের কিছু নিয়মিত আমল ও আচরণ শিক্ষা দিয়েছে যা অভাব থেকে মুক্তি ও রিজিকে বরকতের পথ খুলে দেয়। এ অংশে সেই গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।
আযকার ও তাসবিহ:
প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় নির্দিষ্ট কিছু দোয়া ও তাসবিহ পড়া সুন্নাহ। এতে আল্লাহর সাহায্য ও নিরাপত্তা লাভ হয়, আর রিজিকেও বরকত আসে।
রাসূল (সা.) বলেছেন:
"যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তিগফার করে, আল্লাহ তাকে প্রতিটি সংকট থেকে উত্তরণের পথ দেখান এবং এমন উৎস থেকে রিজিক দেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।"
[আবু দাউদ, হাদিস: ১৫১৮]
প্রতিদিন ১০০ বার “সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি”
এতে পাপ মোচন হয় এবং রিজিক বাড়ে।
[সহীহ মুসলিম]
এটি হজরত ইউনুস (আ.)-এর দোয়া, দুঃসময়ে পাঠ করলে বিপদ দূর হয়।
“লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন।”
‘হে আল্লাহ তুমি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তুমি পবিত্র মহান, আমি তো সীমালঙ্ঘনকারী।’
(সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৮৭ )
কিছু নির্দিষ্ট কোরআনি সুরা রয়েছে, যেগুলোর নিয়মিত পাঠ রিজিকে বরকত দেয় এবং অভাব থেকে রক্ষা করে:
রাসূল (সা.) বলেছেন:
“সূরা ওয়াকিয়ার নিয়মিত পাঠকারী কখনো অভাবে পড়বে না।”
[ইবনে আসাকির]
পাঠের সময়: প্রতিদিন রাতের নামাজের পর।
রাত্রিকালীন সময়ে পাঠ করলে রিজিক ও নিরাপত্তা অর্জিত হয়।
পাঠের সময়: ঘুমানোর আগে।
এটি দুঃসময় ও মানসিক সংকট থেকে মুক্তির জন্য উপকারী।
ঋণ ও অভাবের সময়ে সবচেয়ে বড় শিক্ষা হচ্ছে – তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রাখা।
-> আল্লাহ বলেন:
"যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।"
[সূরা আত-তালাক: ৩]
-> সাহাবীদের শিক্ষা:
অসহায় অবস্থায় তারা দোয়ার পাশাপাশি ধৈর্য ধরতেন এবং কোনোরকম হতাশা প্রকাশ করতেন না।
তাদের ধারণা ছিল:
“আমার রিজিক আমি পাবই, যতক্ষণ না আমি নিজেই হালাল পথ ছেড়ে হারাম পথে যাই।”
-> নিয়মিত দান করার অভ্যাস:
“দান করলে সম্পদ কমে না, বরং বাড়ে।”
[সহীহ মুসলিম]
বাস্তবিক করণীয়:
ইসলামে রিজিক শুধু দোয়া বা সৌভাগ্যের ফল নয়, বরং একজন মানুষের বিশ্বাস, চরিত্র ও কর্মের ফলও। আল্লাহ তাআলা রিজিকের সংস্থান নির্ধারণ করে রাখলেও আমাদের ওপর দায়িত্ব হলো – হালাল পথে চেষ্টা করা, তাকওয়া অবলম্বন করা এবং দানশীল হওয়া। নিচে কিছু কার্যকর ইসলামিক পন্থা তুলে ধরা হলো:
তাকওয়া মানে আল্লাহভীতি ও তার বিধান মেনে চলা।
তাওয়াক্কুল মানে পূর্ণ বিশ্বাস ও নির্ভরতা শুধুমাত্র আল্লাহর ওপর রাখা।
আল্লাহ বলেন:
"যে আল্লাহকে ভয় করে (তাকওয়া অবলম্বন করে), তিনি তার জন্য মুক্তির পথ সৃষ্টি করেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেন যা সে ধারণাও করে না।"
– সূরা আত-তালাক: ২-৩
যারা গুনাহ থেকে বিরত থাকে এবং হালাল-হারামের পার্থক্য বোঝে, আল্লাহ তাদের জন্য রিজিকের পথ উন্মুক্ত করে দেন।
শুধু চেষ্টা করলেই হবে না, চেষ্টা করতে হবে ঈমান ও আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রেখে।
ইসলামে বারবার বলা হয়েছে – দান করলে সম্পদ কমে না, বরং বৃদ্ধি পায়।
রাসূল (সা.) বলেছেন:
“দান করা সম্পদকে কখনো কমায় না।”
– সহীহ মুসলিম
যাকাত, ফিতরা এবং সাধারণ সদকা – এগুলো শুধু গরিবদের সাহায্যই করে না, বরং দানকারীর রিজিকেও বরকত আনে।
অভাব থাকা অবস্থায়ও সামান্য কিছু দান করায় অসীম ফজিলত রয়েছে।
যে ব্যক্তি গোপনে দান করে, তার রিজিকের দরজা এমনভাবে খুলে যায় – যা সে নিজেই টের পায় না।
আল্লাহর কাছে দোয়া ও ভরসা করার পাশাপাশি নিজ হাতে কাজ করাও ফরজ দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
রাসূল (সা.) নিজে ব্যবসা করতেন এবং সাহাবীরাও পরিশ্রম করে উপার্জন করতেন।
হাদিস:
“হালাল রুজি অর্জন করা ফরজ ইবাদতের পর।”
– বায়হাকী
কোনো কাজ ছোট বা তুচ্ছ নয় যদি তা হালাল হয়।
প্রতিদিনের জীবনে নিয়মিত পরিশ্রম ও নিষ্ঠা সহকারে কাজ করলে আল্লাহ তাতে বরকত দেন।
অন্যের উপর নির্ভর না করে নিজে কিছু করাই ইসলামের দৃষ্টিতে সম্মানজনক।
বাস্তবিক করণীয়:
গুনাহ থেকে বাঁচার চেষ্টা করুন (তাকওয়া)
চেষ্টা করে ফল আল্লাহর উপর ছেড়ে দিন (তাওয়াক্কুল)
সামান্য হলেও নিয়মিত দান করুন
হালাল পথে উপার্জনের চেষ্টা করুন
আলস্য ও হতাশা পরিহার করুন
ইসলামে কিছু নির্দিষ্ট দিন ও রাতকে আল্লাহ তাআলা বিশেষ ফজিলতপূর্ণ করেছেন। এ দিনগুলোতে ইবাদত, দোয়া ও আমলের মাধ্যমে রিজিকের দরজা খুলে যায়, ঋণ মুক্তির আশাবাদ তৈরি হয় এবং আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়। নিচে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিন ও আমলের তালিকা তুলে ধরা হলো:
জুমার দিন মুসলমানদের জন্য সাপ্তাহিক ঈদ। এ দিনে দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ মুহূর্ত থাকে।
রাসূল (সা.) বলেছেন:
“জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যখন কোনো মুসলমান তা পায় এবং সে যদি দোয়া করে, তাহলে তা অবশ্যই কবুল হয়।”
– সহীহ বুখারী ও মুসলিম
শুক্রবারের আমলসমূহ:
সূরা কাহফ পাঠ করা (সূরা ১৮)
বেশি বেশি দরুদ শরীফ পাঠ করা
জুমার খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা
নামাজের পর দোয়া ও ইস্তেগফার করা
“আল্লাহুম্মাগফিরলি” বা “রাব্বানার আতিনা...” বারবার পাঠ
রোজা রাখলে আগের বছরের গুনাহ মাফ হয়
দোয়া ও ইস্তেগফার বেশি বেশি করা
পরিবার-পরিজনকে ভালো খাবার খাওয়ানো
রিজিক বৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া করা
কোরআন তিলাওয়াত ও রাতভর ইবাদত
দরুদ, ইস্তেগফার ও রিজিক বৃদ্ধির দোয়া
রাসূল (সা.)-এর শেখানো দোয়া পাঠ:
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ العَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
-আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি।
“হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, তাই আমাকে ক্ষমা করুন।”
রোজা রাখা (না হজ পালনকারীরা)
দোয়া কবুলের দিন, বিশেষ করে রিজিক, গুনাহ মাফ, ঋণমুক্তির জন্য দোয়া
রাসূল (সা.) বলেন:
“আরাফার দিনে সর্বোত্তম দোয়া হলো, 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু আহাদান সামাদান লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইয়ুলাদ ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।'”
– তিরমিজি
করণীয় উপসংহার:
আধুনিক জীবনে অনেকে দোয়া, রিজিক ও ঋণ সম্পর্কিত বিষয়ে কিছু ভুল ধারণা পোষণ করে থাকেন, যা তাদের জীবনে ব্যর্থতা, হতাশা বা বিভ্রান্তি তৈরি করে। ইসলামের আলোকে এসব ভুল ধারণার সংশোধন খুবই জরুরি।
অনেকেই মনে করেন, শুধু দোয়া করলেই আল্লাহ টাকা পাঠিয়ে দেবেন বা ঋণ পরিশোধ হয়ে যাবে। বাস্তবে, ইসলাম দোয়ার পাশাপাশি চেষ্টা, পরিশ্রম ও হালাল পথে উপার্জন করার ওপরও জোর দেয়।
আল্লাহ বলেন:
"মানুষের জন্য কিছুই নেই, সে যা চেষ্টা করে তার ফল ব্যতীত।"
– সূরা আন-নাজম: ৩৯
সংশোধনীয় দৃষ্টিভঙ্গি:
দোয়া হল সাহায্য চাওয়া, কিন্তু ফল পেতে হলে কাজও করতে হয়
সাহাবীরা দোয়া করতেন, আবার যুদ্ধ, ব্যবসা ও কৃষিকাজেও অংশ নিতেন
দোয়ার মাধ্যমে মানসিক শক্তি ও সঠিক দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়, কিন্তু বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে রিজিক আসে না
স্মরণীয় কথা:
“দোয়া হলো আত্মিক জ্বালানি, আর পরিশ্রম হলো রিজিক অর্জনের বাহন।”
অনেকেই মনে করেন, “আমার রুজি তো আল্লাহ ঠিক করে রেখেছেন, তাই যেভাবেই আসুক, নিলেই চলবে।”
এই ধারণা ইসলামের মূলনীতির সম্পূর্ণ বিপরীত। ইসলাম হালাল রুজিকে বাধ্যতামূলক করেছে এবং হারাম রুজিকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে।
রাসূল (সা.) বলেছেন:
“কিয়ামতের দিন মানুষকে চারটি বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে, তার মধ্যে একটি – সে কীভাবে অর্থ উপার্জন করেছে এবং কোথায় ব্যয় করেছে।”
– তিরমিজি
সংশোধনীয় দৃষ্টিভঙ্গি:
রুজি নির্ধারিত হলেও, তা হালাল পথে কামাই করা আমাদের দায়িত্ব
ঘুষ, সুদ, চুরি, প্রতারণা বা অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে আসা অর্থ রিজিক নয় – বরং পরীক্ষার উপকরণ
হালাল রুজি শুধু খাদ্য নয়, বরং আত্মার প্রশান্তি ও জীবনে বরকতের উৎস
হাদিস:
“হালাল রুজি অর্জন ফরজ ইবাদতের পর।”
– বায়হাকী
মূল শিক্ষা:
ঋণমুক্তি ও রিজিক বৃদ্ধির জন্য দোয়া, আমল ও বিশ্বাস—এই তিনটি বিষয় একসাথে কাজ করে। ইসলাম আমাদের শুধু দোয়া করতে বলে না, বরং সঠিক পথে চলা, হালাল রুজি অর্জনের জন্য চেষ্টা করা এবং আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রাখার শিক্ষা দেয়। জীবনের যে পর্যায়েই থাকুন না কেন, আশা হারাবেন না। আল্লাহ সব সময় বান্দার পাশে থাকেন।
১. সময়মতো নামাজ পড়ুন: নামাজ রিজিকের চাবিকাঠি। যারা নামাজ ঠিকভাবে পড়ে, তাদের জন্য আল্লাহ বিশেষ রিজিকের দরজা খুলে দেন।
২. হালাল ও সৎ উপার্জনের চেষ্টা করুন: নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী যেকোনো হালাল কাজ করুন, কাজ ছোট না বড় তা মুখ্য নয়, বরং হালাল হওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ।
৩. বাজেট ও ঋণ নিয়ন্ত্রণ করুন: খরচের পরিকল্পনা করুন। অহেতুক খরচ থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজন ছাড়া ঋণ না নেওয়াই উত্তম।
৪. দান ও সদকা অভ্যাস করুন: সামর্থ্য অনুযায়ী সদকা করুন, কারণ সদকা রিজিক বাড়ায় এবং বিপদ দূর করে।
৫. আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখুন: আল্লাহর সাহায্যে কখন কীভাবে রিজিক আসবে, আপনি জানেন না—তাই সবসময় প্রস্তুত ও ইতিবাচক থাকুন।
আল্লাহর উপর ভরসা করা মানে কেবল বসে থাকা নয়, বরং নিজের দায়িত্ব পালনের পর ফলাফলের ব্যাপারে আল্লাহর উপর নির্ভর করা।
সব দোয়া হয়তো সাথে সাথেই কবুল হবে না, কিন্তু ধৈর্য ধরে সঠিক পথে থাকলে তা অবশ্যই ফল দেবে।
আল্লাহ বলেন:
“নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদেরকে তাদের প্রতিদান পরিপূর্ণভাবে দেওয়া হবে, বিনা হিসাবে।”
– সূরা যুমার: ১০
এক দরজা বন্ধ হয়ে গেলে আল্লাহ অন্য দরজা খুলে দেন—এই বিশ্বাসে থাকুন।
সারাংশ:
ঋণ ও রিজিক – এই দুই বিষয়ে সফলতা পেতে হলে চাই দোয়া, বাস্তব চেষ্টা, ধৈর্য ও আল্লাহর প্রতি দৃঢ় আস্থা। আপনি যদি এসব গুণ বজায় রাখেন, তবে ইনশাআল্লাহ জীবনের প্রতিটি দুঃসময় কাটিয়ে আশার আলো দেখতে পাবেন।
যে দোয়া আল্লাহর কাছে সত্যিকারের মন থেকে করা হয় এবং বিশ্বাসের সাথে পড়া হয়, তা সবচেয়ে কার্যকর। বিশেষ করে ঋণ মুক্তি ও রিজিক বৃদ্ধির জন্য যেসব দোয়া উল্লেখ করা হয়েছে, তা অতিমাত্রায় কার্যকর।
দোয়ার সংখ্যা নির্দিষ্ট না হলেও, আপনি যেকোনো দোয়া যতো বেশি সময় এবং নিয়মিত পাঠ করবেন, ততোই ফলপ্রসূ হবে। সাধারণভাবে, যেকোনো দোয়া দিনে অন্তত ৩-৫ বার পাঠ করা যেতে পারে।
দোয়া অবশ্যই সাহায্য করে, তবে ঋণ মুক্তির জন্য দোয়া ও সঠিক পথে কাজ করা একসাথে করতে হবে। দোয়া ও হালাল পথে উপার্জন করার পরিণাম হিসেবে আল্লাহ ঋণ মুক্তি দেন।
ঋণ মুক্তির দোয়া:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ
আল্লাহুম্মা ইন্নি আ'উযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযান
"হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে দুঃখ ও চিন্তা থেকে আশ্রয় চাই।"
সূরা ওয়াকিয়া (সূরা ৫৬) এবং সূরা আল-ইনশিরাহ (সূরা ৯৪) রিজিক বৃদ্ধি এবং দৈনন্দিন জীবনের সমৃদ্ধির জন্য বিশেষভাবে পাঠযোগ্য।
সূরা ওয়াকিয়া নিয়মিত পড়লে অভাব দূর হয়।
ধনী হওয়ার জন্য একটি সুন্দর দোয়া হলো:
اللَّهُمَّ اغْنِنِي بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ
"হে আল্লাহ! আপনি আমাকে হালাল উপায়ে এতটাই সমৃদ্ধ করুন যেন আমি হারাম থেকে দূরে থাকতে পারি।"
আয়াতুল কুরসি (সূরা আল-বাকারাহ, ২৫۵ আয়াত) সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া হিসেবে পরিচিত, যেটি আল্লাহর অসীম ক্ষমতা ও আর্শীবাদ জানায়।
অর্থ:
"হে আল্লাহ! আপনি আমাকে হালাল উপায়ে এতটাই পূর্ণাঙ্গ করে দিন যে আমি হারাম থেকে বাঁচতে পারি।"
যদি কেউ ঋণগ্রস্ত হন এবং তার কাছে কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত সম্পদ না থাকে, তাহলে তার উপর কোরবানি ওয়াজিব হবে না। তবে, যদি ঋণ পরিশোধ করার পরেও নেসাব পরিমাণ (নির্দিষ্ট পরিমাণ) সম্পদ অবশিষ্ট থাকে, তাহলে তার উপর কোরবানি করা ওয়াজিব।
সংক্ষেপে, ঋণ থাকলে কোরবানি দেওয়া যাবে কি না, তা নির্ভর করে ঋণ পরিশোধের পর আপনার কাছে কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ অবশিষ্ট থাকে কিনা তার উপর।
সূরা ওয়াকিয়া নিয়মিত পাঠ
দানে সদকা করা
নামাজের পর দোয়া করা
ধৈর্য ধারণ করা এবং তাওয়াক্কুল করা
প্রত্যেক দোয়া যদি সত্যিকারের হৃদয় থেকে, বিশেষত তাওয়াক্কুল এবং আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রেখে করা হয়, তবে তা অবশ্যই কবুল হবে। রোজার দিন ও বিশেষ রাতগুলোতে দোয়া বেশি কবুল হয়।
اللَّهُمَّ بَارِكْ لِي فِي رِزْقِي
আল্লাহুম্মা বারিক লী ফী রিজকী
"হে আল্লাহ! আপনি আমার রিজিকে বরকত দিন।"
اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ النَّاجِحِينَ
"হে আল্লাহ! আমাকে সফল ও উন্নত জীবনের অধিকারী করুন।"
ইয়া রাফিউ মানে “হে উত্তোলনকারী!”
এই নামটি আল্লাহর জন্য, যিনি বান্দার মর্যাদা ও অবস্থান উন্নীত করেন।
“ইয়া রায্জাকু” (হে রিজিকদাতা) পড়লে রিজিকের ফোরাত ও সমৃদ্ধি আসে। এটি ধনী হওয়ার দিকেও সহায়ক।
হালাল উপার্জন করা
সৎ পথে কাজ করা
নির্দিষ্ট আমল: যেমন, সুন্দর চরিত্র ও মুসলিম নীতি অনুসরণ
দান করা: যেকোনো পরিমাণ হলেও।
ফজরের পর দোয়া
সূরা ওয়াকিয়া নিয়মিত পাঠ করা
তাসবিহ ও জিকির করা
আল-কুরআন তিলাওয়াত করা
اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنْ أَهْلِ الْغِنَى وَالْحَمْدِ
"হে আল্লাহ! আমাকে ধনী ও সন্তুষ্টির অধিকারী বানাও!"
ইস্তেগফার (অনেকবার “আস্তাগফিরুল্লাহ” বলা)
হালাল রুজির পথে কাজ করা
সদকা ও দান করা
তাকওয়া ও তাওয়াক্কুল পালন করুন
হালাল রুজি উপার্জন করুন
ঋণ মুক্তি ও রিজিক বৃদ্ধির দোয়া, রিজিক বৃদ্ধির সুরা, রিজিক নিয়ে কোরআনের আয়াত, রিজিক বৃদ্ধির আমল, হালাল রিজিক বৃদ্ধির দোয়া, রিজিক বৃদ্ধির দোয়া আরবি, ঋণ মুক্তির দোয়া, রিজিক বৃদ্ধির দোয়া ছবি, রিজিক সম্পর্কে কোরআনের আয়াত, রিজিক বৃদ্ধির জিকির, পাহাড় সমান ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া, দুশ্চিন্তা ও ঋণ থেকে মুক্তি লাভের দোয়া, ঋণ থেকে মুক্তির উপায়, ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া আরবি, ঋণ থেকে মুক্তির নামাজ, ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া, ঋণ থেকে মুক্তি এবং কোটিপতি হওয়ার কোরআনী আমল, ঋণ থেকে মুক্তির আমল, স্বামীর রিজিক বৃদ্ধির দোয়া, সম্পদ ও রিজিক বৃদ্ধির দোয়া, Rijik baranor amol, টাকা পয়সা বৃদ্ধির আমল, Rizik er dua bangla, ঋণ থেকে মুক্তির উপায় কি, ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া বাংলা