ডিপ্লোমার পর বিএসসি করতে কোন কোন দেশে যাওয়া যায় | ডিপ্লোমা করে বিদেশে স্কলারশিপ

29 Jun, 2025

ডিপ্লোমার পর বিএসসি করতে কোন কোন দেশে যাওয়া যায় | ডিপ্লোমা করে বিদেশে স্কলারশিপ

ভূমিকা: ডিপ্লোমার পর বিদেশে পড়াশোনার চাহিদা

বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক ডিপ্লোমা পাশ করা শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ খুঁজছেন। গ্লোবাল মানের শিক্ষা, আধুনিক টেকনোলজি, স্কলারশিপ সুবিধা ও আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা এ চাহিদা তৈরি করেছে। এছাড়া ক্যারিয়ার গড়ার জন্য উন্নত দেশের শিক্ষাব্যবস্থা অনেক বেশি সুযোগ করে দেয়, যা দেশে সীমিত।


কেন ডিপ্লোমার পর বিএসসি করা প্রয়োজন?

ডিপ্লোমা একটি টেকনিক্যাল ডিগ্রি হলেও, অনেক চাকরি ও উচ্চশিক্ষা প্রোগ্রামের জন্য ব্যাচেলর ডিগ্রি (BSc) অপরিহার্য। বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করলে—

  • ক্যারিয়ার গ্রোথ বাড়ে

  • উচ্চশিক্ষার দরজা খুলে যায় (মাস্টার্স, স্কলারশিপ প্রোগ্রাম)

  • দেশি ও আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে মূল্য বাড়ে

  • ডিপ্লোমার লার্নিংকে আরও গভীরভাবে একাডেমিকভাবে শিখা যায়


বিদেশে বিএসসি করার প্রধান সুবিধাগুলো

  • আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ডিগ্রি: বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ

  • আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতি: প্র্যাকটিক্যাল ও প্রজেক্ট-ভিত্তিক লার্নিং

  • স্কলারশিপ সুবিধা: টিউশন ফি কমানো বা পুরোপুরি মওকুফ

  • পার্টটাইম জব সুযোগ: পড়ার পাশাপাশি ইনকাম

  •  স্থায়ী হওয়ার সুযোগ: অনেক দেশে স্টাডি শেষে PR এর সুবিধা

  • আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক: বিশ্বজুড়ে কানেকশন ও ক্যারিয়ার গাইডেন্স


কোন কোন দেশে ডিপ্লোমা পর বিএসসি করা যায়?

কানাডা: ডিপ্লোমার পর বিএসসি করার সুযোগ

কেন পড়বেন কানাডায়?
কানাডার শিক্ষা ব্যবস্থা টেকনিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ডকে অনেক গুরুত্ব দেয়। ডিপ্লোমা করা শিক্ষার্থীরা সহজেই ক্রেডিট ট্রান্সফার করে ব্যাচেলর প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারে।

 জনপ্রিয় ইউনিভার্সিটি/কলেজ:

  • University of Toronto

  • University of British Columbia

  • Ryerson University

  • Centennial College

  • George Brown College

প্রয়োজনীয়তা:

  • IELTS: মিনিমাম 6.0–6.5

  • ভালো একাডেমিক রেজাল্ট (ডিপ্লোমায় মিনিমাম GPA 2.5 বা 60%)

  • SOP ও রেফারেন্স লেটার

  • কিছু প্রোগ্রামে ক্রেডিট ট্রান্সফার সম্ভব

খরচ:

  • টিউশন ফি: প্রতি বছর CAD $15,000 – $25,000

  • থাকা ও খাওয়া: CAD $800 – $1200/মাস

কাজের সুযোগ:

  • স্টাডির সময় সপ্তাহে 20 ঘণ্টা পার্টটাইম কাজ

  • পড়াশোনা শেষে 3 বছর পর্যন্ত Work Permit


অস্ট্রেলিয়া: ডিপ্লোমার পর ব্যাচেলর প্রোগ্রামে সুযোগ

 কেন পড়বেন অস্ট্রেলিয়ায়?
অস্ট্রেলিয়ায় অনেক ইউনিভার্সিটি “Recognition of Prior Learning (RPL)” এর মাধ্যমে ডিপ্লোমা শেষ করা শিক্ষার্থীদের বিএসসি কোর্সে সরাসরি দ্বিতীয় বছরে ভর্তি নেয়।

 জনপ্রিয় ইউনিভার্সিটি:

  • University of Melbourne

  • University of Sydney

  • RMIT University

  • Deakin University

  • TAFE Institutes (Vocational route থেকে ব্যাচেলর পর্যন্ত)

প্রয়োজনীয়তা:

  • IELTS: মিনিমাম 6.0–6.5

  • ডিপ্লোমা GPA বা গ্রেড মিনিমাম 60–70%

  • SOP, Academic Transcript, Resume

  • কিছু ক্ষেত্রে RPL Certificate প্রয়োজন

খরচ:

  • টিউশন ফি: প্রতি বছর AUD $20,000 – $35,000

  • থাকার খরচ: AUD $1000 – $1500/মাস

কাজের সুযোগ:

  • স্টুডেন্ট ভিসায় 24 ঘণ্টা/সপ্তাহ কাজের সুযোগ

  • পড়াশোনার পর 2–4 বছরের Work Visa


জার্মানি: ডিপ্লোমার পর ব্যাচেলর ডিগ্রি করার সুযোগ

কেন জার্মানি?
জার্মানির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক প্রোগ্রামে টিউশন ফি নেই বা খুবই কম। প্রযুক্তি ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিশেষভাবে উন্নত। ডিপ্লোমা স্টুডেন্টদের জন্য ব্যাচেলর প্রোগ্রামে সুযোগ পাওয়া সম্ভব।

জনপ্রিয় ইউনিভার্সিটি:

  • RWTH Aachen University

  • TU Munich

  • University of Stuttgart

  • FH Aachen (University of Applied Sciences)

  • Hochschule Bonn-Rhein-Sieg

প্রয়োজনীয়তা:

  • IELTS: মিনিমাম 6.0

  • জার্মান ভাষা: অনেক ক্ষেত্রে B1/B2 লেভেল (জার্মান ভাষায় পড়লে)

  • ডিপ্লোমা রেজাল্ট ভালো হতে হবে

  • কিছু ইউনিভার্সিটিতে স্টাডি কোর্স বা Studienkolleg দরকার হতে পারে

খরচ:

  • টিউশন ফি: পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে প্রায় ফ্রি (Semester fee: €200–€500)

  • থাকা ও খাওয়া: €700 – €1000/মাস

কাজের সুযোগ:

  • স্টুডেন্ট হিসেবে বছরে 120 দিন ফুল-টাইম বা 240 দিন হাফ-টাইম কাজের সুযোগ

  • পড়াশোনার পর 18 মাস পর্যন্ত জব খোঁজার সুযোগ (Job-Seeking Visa)


যুক্তরাজ্য (UK): ডিপ্লোমার পর ব্যাচেলর ডিগ্রি করার সুযোগ

কেন যুক্তরাজ্য?
ইউকে ডিগ্রি আন্তর্জাতিকভাবে অত্যন্ত স্বীকৃত। অনেক ইউনিভার্সিটি ডিপ্লোমা ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থীদের জন্য "Top-Up Degree" বা "Direct Entry" অফার করে।

জনপ্রিয় ইউনিভার্সিটি:

  • University of Hertfordshire

  • Coventry University

  • University of Portsmouth

  • London South Bank University

  • University of West London

প্রয়োজনীয়তা:

  • IELTS: মিনিমাম 6.0 (একেক কোর্সে ভিন্ন হতে পারে)

  • ডিপ্লোমায় মিনিমাম 2.5 GPA বা সমমান

  • SOP, Academic Transcript, Reference Letter

  • কিছু ক্ষেত্রে Foundation Year করতে হতে পারে

খরচ:

  • টিউশন ফি: প্রতি বছর £11,000 – £20,000

  • থাকা ও অন্যান্য খরচ: £800 – £1200/মাস

কাজের সুযোগ:

  • স্টুডেন্ট ভিসায় সপ্তাহে 20 ঘণ্টা কাজের সুযোগ

  • ডিগ্রি শেষ করে 2 বছর পর্যন্ত Graduate Work Visa (PSW)


আমেরিকা (USA): ডিপ্লোমার পর ব্যাচেলর ডিগ্রির সুযোগ

কেন পড়বেন USA-তে?
USA তে ডিপ্লোমা করা শিক্ষার্থীরা Community College থেকে Bachelor Program-এ “Transfer” অপশন নিতে পারে। মেধা ও আগ্রহ থাকলে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সুযোগ পাওয়া যায়।

জনপ্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:

  • Arizona State University

  • University of South Florida

  • California State University

  • Houston Community College → University Transfer Pathway

প্রয়োজনীয়তা:

  • IELTS: মিনিমাম 6.0 বা TOEFL

  • ডিপ্লোমা GPA: মিনিমাম 2.5 বা 60%

  • SAT অনেক ইউনিভার্সিটিতে অপশনাল

  • Statement of Purpose, Recommendation Letter

খরচ:

  • টিউশন ফি: প্রতি বছর USD $15,000 – $30,000

  • থাকা ও খাওয়া: $800 – $1200/মাস

কাজের সুযোগ:

  • অন-ক্যাম্পাস পার্টটাইম কাজ

  • ডিগ্রি শেষ করে OPT (Optional Practical Training) এর মাধ্যমে 1–3 বছরের চাকরির সুযোগ


মালয়েশিয়া: কম খরচে ভালো মানের ব্যাচেলর ডিগ্রি

কেন পড়বেন মালয়েশিয়ায়?
কম খরচে ভালো মানের ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা, মুসলিম-ফ্রেন্ডলি পরিবেশ, এবং সহজ ভিসা প্রসেস—এই তিনটি কারণে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের জন্য মালয়েশিয়া একটি আদর্শ দেশ।

জনপ্রিয় ইউনিভার্সিটি:

  • University of Malaya (UM)

  • Multimedia University (MMU)

  • Asia Pacific University (APU)

  • UCSI University

  • INTI International University

প্রয়োজনীয়তা:

  • IELTS: 5.5 – 6.0 (অনেক প্রোগ্রামে ভিন্নতা থাকতে পারে)

  • ডিপ্লোমা GPA: 2.0+

  • English proficiency certificate (MOI) অনেক সময় গ্রহণযোগ্য

খরচ:

  • টিউশন ফি: প্রতি বছর RM 15,000 – 30,000 (৳৩–৬ লাখ)

  • থাকা ও খাওয়া: RM 1000 – 1500/মাস

কাজের সুযোগ:

  • ক্যাম্পাসে পার্টটাইম কাজের সুযোগ (বিশেষ অনুমতির মাধ্যমে)

  • সাশ্রয়ী খরচে জীবনযাপন


ফিনল্যান্ড: ইউরোপের মধ্যে ফ্রি টিউশন বা স্কলারশিপে সুযোগ

 কেন পড়বেন ফিনল্যান্ডে?
ইউরোপের অন্যতম উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, অনেক ইউনিভার্সিটি ডিপ্লোমা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে শিক্ষার্থী গ্রহণ করে। কিছু প্রোগ্রামে পুরো স্কলারশিপ বা আংশিক ছাড় মেলে।

জনপ্রিয় ইউনিভার্সিটি:

  • Tampere University of Applied Sciences

  • Metropolia University

  • LAB University of Applied Sciences

  • Helsinki Metropolia UAS

প্রয়োজনীয়তা:

  • IELTS: 6.0+

  • ডিপ্লোমা GPA: ভালো থাকতে হবে (60%+)

  • Admission Test/Entrance Exam হতে পারে

  • কিছু ক্ষেত্রে Interview ও Assignment

খরচ:

  • টিউশন ফি: প্রতি বছর €6,000 – €12,000

  • থাকা ও খাওয়া: €600 – €900/মাস

  • স্কলারশিপ: 50% – 100% পর্যন্ত পাওয়ার সুযোগ

কাজের সুযোগ:

  • স্টুডেন্ট ভিসায় সপ্তাহে 30 ঘণ্টা কাজের অনুমতি

  • পড়ালেখা শেষে 1–2 বছরের Work Search Visa


নেদারল্যান্ডস (Netherlands): ইউরোপে ইনোভেটিভ শিক্ষা ব্যবস্থার দেশ

 কেন পড়বেন নেদারল্যান্ডসে?
ইংরেজি ভাষায় 2,000+ কোর্স, স্কলারশিপ সুবিধা, এবং দক্ষ টেকনোলজি বেসড শিক্ষা নেদারল্যান্ডসকে ইউরোপে জনপ্রিয় গন্তব্য করেছে। ডিপ্লোমা করা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন Applied Science ইউনিভার্সিটিতে ব্যাচেলর প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারে।

জনপ্রিয় ইউনিভার্সিটি:

  • HAN University of Applied Sciences

  • Fontys University

  • Saxion University

  • NHL Stenden University

  • The Hague University

প্রয়োজনীয়তা:

  • IELTS: মিনিমাম 6.0

  • ডিপ্লোমা GPA: 2.5 বা 60%+

  • Motivation Letter, Reference Letter

  • কিছু প্রোগ্রামে Interview

খরচ:

  • টিউশন ফি: €7,000 – €12,000 / বছরে

  • থাকা ও খাওয়া: €800 – €1000 / মাস

  • স্কলারশিপ: Holland Scholarship (50% ছাড় পর্যন্ত)

কাজের সুযোগ:

  • স্টুডেন্ট হিসেবে সপ্তাহে 16 ঘণ্টা কাজের সুযোগ

  • ডিগ্রি শেষে 1 বছরের “Orientation Year Visa” (জব খোঁজার সময়)


সাইপ্রাস: কম খরচে ইউরোপিয়ান ব্যাচেলর ডিগ্রি

কেন পড়বেন সাইপ্রাসে?
সাইপ্রাসে ইউরোপিয়ান মানের শিক্ষা কম খরচে পাওয়া যায়। অনেক ইউনিভার্সিটি ডিপ্লোমা ব্যাকগ্রাউন্ডের স্টুডেন্টদের ব্যাচেলর প্রোগ্রামে সরাসরি ভর্তি নেয়।

জনপ্রিয় ইউনিভার্সিটি:

  • University of Nicosia

  • European University Cyprus

  • Near East University

  • Cyprus International University

প্রয়োজনীয়তা:

  • IELTS: 5.5 – 6.0 বা MOI (Medium of Instruction) গ্রহণযোগ্য

  • ডিপ্লোমা GPA: মিনিমাম 2.0

  • কিছু ক্ষেত্রে Interview বা SOP প্রয়োজন

খরচ:

  • টিউশন ফি: €4,000 – €7,000 / বছরে

  • থাকা ও খাওয়া: €300 – €600 / মাস

  • স্কলারশিপ: 50% পর্যন্ত (Academic merit অনুযায়ী)

কাজের সুযোগ:

  • স্টুডেন্ট ভিসায় সপ্তাহে 20 ঘণ্টা কাজ

  • কম খরচে থাকা ও পড়াশোনার সুযোগ


তুরস্ক: মুসলিম ফ্রেন্ডলি পরিবেশে উন্নত শিক্ষা

কেন পড়বেন তুরস্কে?
তুরস্কে ডিপ্লোমা স্টুডেন্টদের জন্য অনেক সরকারি ও বেসরকারি ইউনিভার্সিটিতে ব্যাচেলর ডিগ্রির সুযোগ রয়েছে। কম খরচ, স্কলারশিপ ও ইংরেজি-মাধ্যম কোর্সের জন্য জনপ্রিয়।

জনপ্রিয় ইউনিভার্সিটি:

  • Istanbul University

  • Ankara University

  • Istanbul Aydin University

  • Yeditepe University

  • Bahçeşehir University

প্রয়োজনীয়তা:

  • IELTS: 5.5 – 6.0 (বা TOEFL / MOI)

  • ডিপ্লোমা GPA: 2.0+

  • কিছু প্রোগ্রামে YOS পরীক্ষার স্কোর লাগতে পারে

খরচ:

  • টিউশন ফি: $2,000 – $8,000 / বছরে

  • থাকা ও খাওয়া: $300 – $600 / মাস

  • স্কলারশিপ: সরকারি Türkiye Burslari স্কলারশিপ (ফুল ফ্রি)

কাজের সুযোগ:

  • স্টুডেন্ট ভিসায় নির্দিষ্ট নিয়মে কাজের সুযোগ

  • পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ওয়ার্ক পারমিট সীমিত


প্রতিটি দেশের জন্য অ্যাডমিশন রিকোয়ারমেন্টস


কানাডা

IELTS/TOEFL স্কোর:

  • IELTS: 6.0 – 6.5

  • TOEFL iBT: 80 – 90

শিক্ষাগত যোগ্যতা:

  • ডিপ্লোমায় মিনিমাম GPA 2.5 বা 60%

  • ক্রেডিট ট্রান্সফার করা গেলে দ্বিতীয় বর্ষে সরাসরি ভর্তি সম্ভব

আবেদন প্রক্রিয়া:

  1. ইউনিভার্সিটি ওয়েবসাইটে আবেদন

  2. Educational Credential Assessment (WES, ICAS ইত্যাদি)

  3. SOP, LOR, পাসপোর্ট, ট্রান্সক্রিপ্ট, IELTS স্কোর

  4. অফার লেটার পাওয়ার পর ভিসার আবেদন


অস্ট্রেলিয়া

IELTS/TOEFL স্কোর:

  • IELTS: 6.0 – 6.5

  • TOEFL iBT: 79 – 90

 শিক্ষাগত যোগ্যতা:

  • ডিপ্লোমা GPA 2.5 বা 60–70%

  • RPL (Recognition of Prior Learning) থাকলে 1 বছর বাদ দিতে পারেন

আবেদন প্রক্রিয়া:

  1. ইউনিভার্সিটিতে সরাসরি বা এজেন্টের মাধ্যমে আবেদন

  2. SOP, Academic Transcript, IELTS/TOEFL, পাসপোর্ট

  3. অফার লেটার → মেডিকেল → ভিসা


জার্মানি

IELTS/TOEFL স্কোর:

  • IELTS: মিনিমাম 6.0

  • TOEFL iBT: 80+

শিক্ষাগত যোগ্যতা:

  • ডিপ্লোমা রেজাল্ট ভালো (GPA 3.0+ হলে ভালো)

  • কিছু ক্ষেত্রে Studienkolleg (প্রিপারেটরি কোর্স) দরকার হতে পারে

  • জার্মান ভাষা প্রয়োজন হলে B1/B2 সার্টিফিকেট

আবেদন প্রক্রিয়া:

  1. UniAssist বা সরাসরি আবেদন

  2. ট্রান্সক্রিপ্ট, IELTS/TOEFL, SOP

  3. ব্লকড অ্যাকাউন্ট খুলে ভিসা আবেদন


যুক্তরাজ্য (UK)

IELTS/TOEFL স্কোর:

  • IELTS: 6.0 – 6.5

  • TOEFL iBT: 80 – 90

শিক্ষাগত যোগ্যতা:

  • ডিপ্লোমা GPA 2.5 বা তার বেশি

  • Foundation Year বা Top-Up Degree অপশন অনেক প্রোগ্রামে

আবেদন প্রক্রিয়া:

  1. UCAS বা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন

  2. SOP, Reference Letter, Academic Docs

  3. অফার লেটার → ভিসা → কাস লেটার (CAS)


আমেরিকা (USA)

IELTS/TOEFL স্কোর:

  • IELTS: 6.0+

  • TOEFL iBT: 80+

শিক্ষাগত যোগ্যতা:

  • ডিপ্লোমা GPA 2.5+

  • SAT অনেক জায়গায় অপশনাল

  • ক্রেডিট ট্রান্সফার করলে সময় কমে যেতে পারে

আবেদন প্রক্রিয়া:

  1. অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন

  2. SOP, ট্রান্সক্রিপ্ট, IELTS/TOEFL, ফাইনান্সিয়াল ডকুমেন্ট

  3. I-20 পাওয়ার পর ভিসা ইন্টারভিউ


মালয়েশিয়া

IELTS/TOEFL স্কোর:

  • IELTS: 5.5 – 6.0 (MOI থাকলেও চলে)

  • TOEFL: প্রয়োজন পড়ে না অনেক ক্ষেত্রে

শিক্ষাগত যোগ্যতা:

  • GPA 2.0+

  • ডিপ্লোমা থেকে ব্যাচেলর সরাসরি সম্ভব

আবেদন প্রক্রিয়া:

  • ইউনিভার্সিটিতে সরাসরি আবেদন

  • স্ক্যান কপি জমা দিলেই অফার লেটার

  • ভিসা প্রসেস খুবই সহজ


ফিনল্যান্ড

IELTS/TOEFL স্কোর:

  • IELTS: মিনিমাম 6.0

  • TOEFL iBT: 79+

শিক্ষাগত যোগ্যতা:

  • ডিপ্লোমায় 60%+

  • কিছু প্রোগ্রামে Entrance Exam / Interview

আবেদন প্রক্রিয়া:

  • Joint Application System এর মাধ্যমে আবেদন

  • IELTS, ট্রান্সক্রিপ্ট, CV, SOP

  • Admission Test / Interview → ভিসা


নেদারল্যান্ডস

IELTS/TOEFL স্কোর:

  • IELTS: 6.0+

  • TOEFL iBT: 80+

শিক্ষাগত যোগ্যতা:

  • ডিপ্লোমা GPA 2.5 বা তার বেশি

  • কিছু ক্ষেত্রে Foundation Year লাগতে পারে

আবেদন প্রক্রিয়া:

  • ইউনিভার্সিটি ওয়েবসাইটে আবেদন
  • SOP, IELTS, Academic Docs
  • Interview → অফার লেটার → ভিসা

সাইপ্রাস

IELTS/TOEFL স্কোর:

  • IELTS: 5.5 – 6.0

  • TOEFL: প্রয়োজন হয় না প্রায়

শিক্ষাগত যোগ্যতা:

  • ডিপ্লোমায় 2.0+ GPA

  • ইংরেজিতে শিক্ষার প্রমাণ থাকলেই সহজে ভর্তি

 আবেদন প্রক্রিয়া:

  • সরাসরি আবেদন (স্ক্যান কপি দিলেই অফার লেটার)

  • Admission Fee → ভিসা প্রসেস শুরু


তুরস্ক

IELTS/TOEFL স্কোর:

  • IELTS: 5.5 – 6.0 (বা MOI)

  • TOEFL iBT: 65+

 শিক্ষাগত যোগ্যতা:

  • GPA 2.0+

  • কিছু সরকারি ইউনিভার্সিটিতে YOS এক্সাম প্রয়োজন

 আবেদন প্রক্রিয়া:

  • সরকারি বা বেসরকারি ইউনিভার্সিটিতে আবেদন

  • ট্রান্সক্রিপ্ট, IELTS/MOI, পাসপোর্ট

  • অফার লেটার → ভিসা


স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ ও খরচ প্রতিটি দেশে


কানাডা

স্কলারশিপ সুযোগ:

  • Partial scholarship: CAD $1,000 – $10,000

  • Entry-level merit-based scholarships

  • Need-based bursary (some institutions)

  • Example: Lester B. Pearson Scholarship (Full)

মোট খরচ:

  • টিউশন ফি: CAD $15,000 – $25,000/বছর

  • থাকা-খাওয়া: CAD $800 – $1200/মাস

  • মোট বার্ষিক খরচ: ~CAD $25,000 – $35,000


অস্ট্রেলিয়া

স্কলারশিপ সুযোগ:

  • Australia Awards Scholarships (Govt.)

  • University merit-based waivers (25%–50%)

  • Destination Australia Scholarship

  • RPL থাকলে কিছু কোর্সে সময় ও খরচ কমে যায়

মোট খরচ:

  • টিউশন ফি: AUD $20,000 – $35,000/বছর

  • থাকা-খাওয়া: AUD $1000 – $1500/মাস

  • মোট বার্ষিক খরচ: ~AUD $30,000 – $45,000


জার্মানি

স্কলারশিপ সুযোগ:

  • DAAD Scholarships (Partial to Full)

  • অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি নেই

  • Need-based/merit-based সুযোগ

মোট খরচ:

  • টিউশন ফি: প্রায় ফ্রি (Semester fee: €200 – €500)

  • থাকা-খাওয়া: €700 – €1000/মাস

  • মোট বার্ষিক খরচ: ~€8,000 – €12,000


যুক্তরাজ্য (UK)

স্কলারশিপ সুযোগ:

  • Chevening (Masters only)

  • University-specific undergraduate waivers (10–50%)

  • Commonwealth scholarships (rare for BSc)

মোট খরচ:

  • টিউশন ফি: £11,000 – £20,000/বছর

  • থাকা-খাওয়া: £800 – £1200/মাস

  • মোট বার্ষিক খরচ: ~£20,000 – £30,000


আমেরিকা (USA)

স্কলারশিপ সুযোগ:

  • University funded scholarships (Partial to Full)

  • Community colleges offer fee waivers

  • Need & merit-based options available

  • Example: Global Undergraduate Exchange Program (UGRAD)

মোট খরচ:

  • টিউশন ফি: USD $15,000 – $30,000/বছর

  • থাকা-খাওয়া: $800 – $1200/মাস

  • মোট বার্ষিক খরচ: ~$25,000 – $40,000


মালয়েশিয়া

স্কলারশিপ সুযোগ:

  • University-specific (25%–50%)

  • Merit-based discounts

  • অনেক সময় এপ্লাই করলেই 30% ছাড় পাওয়া যায়

মোট খরচ:

  • টিউশন ফি: RM 15,000 – 30,000/বছর (৳৩–৬ লাখ)

  • থাকা-খাওয়া: RM 1000 – 1500/মাস

  • মোট বার্ষিক খরচ: ~RM 25,000 – 40,000


ফিনল্যান্ড

স্কলারশিপ সুযোগ:

  • Tuition Fee Waivers: 50% – 100%

  • University Entrance Exam/Performance-based

  • Example: Finland Scholarship for 1st year full coverage + €5,000

মোট খরচ:

  • টিউশন ফি: €6,000 – €12,000/বছর

  • থাকা-খাওয়া: €600 – €900/মাস

  • মোট বার্ষিক খরচ: ~€12,000 – €18,000


নেদারল্যান্ডস

স্কলারশিপ সুযোগ:

  • Holland Scholarship (€5,000)

  • University-specific partial waivers

  • Merit-based 25% – 50% ছাড়

মোট খরচ:

  • টিউশন ফি: €7,000 – €12,000/বছর

  • থাকা-খাওয়া: €800 – €1000/মাস

  • মোট বার্ষিক খরচ: ~€14,000 – €20,000


সাইপ্রাস

স্কলারশিপ সুযোগ:

  • Admission এর সাথে 30% – 50% waiver

  • Merit-based স্কলারশিপ

  • MOI থাকলে অতিরিক্ত ছাড় মেলে

মোট খরচ:

  • টিউশন ফি: €4,000 – €7,000/বছর

  • থাকা-খাওয়া: €300 – €600/মাস

  • মোট বার্ষিক খরচ: ~€7,000 – €10,000


তুরস্ক

স্কলারশিপ সুযোগ:

  • Türkiye Burslari (Govt. – Full Scholarship with stipend)

  • Private university scholarships (25% – 100%)

  • Erasmus+ Program (within EU partnership)

মোট খরচ:

  • টিউশন ফি: $2,000 – $8,000/বছর

  • থাকা-খাওয়া: $300 – $600/মাস

  • মোট বার্ষিক খরচ: ~$6,000 – $10,000


কাজ করার সুযোগ (স্টুডেন্ট পার্টটাইম জব)

দেশ স্টুডেন্ট পার্টটাইম কাজ পোস্ট-স্টাডি ওয়ার্ক পারমিট
কানাডা সপ্তাহে 20 ঘণ্টা (অফ-ক্যাম্পাস অনুমোদিত) 3 বছরের Post-Graduation Work Permit (PGWP)
অস্ট্রেলিয়া সপ্তাহে 24 ঘণ্টা (সেশন চলাকালীন) 2–4 বছর depending on course/location
জার্মানি বছরে 120 দিন ফুল-টাইম বা 240 দিন পার্টটাইম 18 মাসের জব সার্চ ভিসা
যুক্তরাজ্য সপ্তাহে 20 ঘণ্টা 2 বছরের Graduate Route (PSW)
আমেরিকা শুধুমাত্র অন-ক্যাম্পাস (বাইরে CPT/OPT দরকার) OPT: 1–3 বছর depending on course
মালয়েশিয়া নির্দিষ্ট অনুমতির মাধ্যমে, ক্যাম্পাসের ভিতরে সীমিত পোস্ট-স্টাডি সুযোগ
ফিনল্যান্ড সপ্তাহে 30 ঘণ্টা পর্যন্ত 1–2 বছরের Work Search Visa
নেদারল্যান্ডস সপ্তাহে 16 ঘণ্টা বা ফুল-টাইম (ছুটিতে) 1 বছরের “Orientation Year” Visa
সাইপ্রাস সপ্তাহে 20 ঘণ্টা (2ম সেমিস্টার থেকে) সীমিত, কিন্তু EU দেশগুলোতে যাওয়া সহজ
তুরস্ক সীমিত কাজের অনুমতি পোস্ট-স্টাডি কাজের সুযোগ সীমিত

কোন দেশটি আপনার জন্য সেরা হতে পারে?

সেরা দেশ নির্ভর করে আপনার লক্ষ্য, বাজেট ও যোগ্যতার উপর। নিচে সংক্ষেপে দিচ্ছি:

আপনার চাহিদা সেরা দেশ
কম খরচে পড়াশোনা + স্কলারশিপ জার্মানি, সাইপ্রাস, তুরস্ক
ভালো পার্টটাইম ইনকাম + ওয়ার্ক পারমিট কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য
স্কলারশিপসহ ইউরোপিয়ান ডিগ্রি ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস
ইংরেজি মিডিয়ামে সাশ্রয়ী শিক্ষা মালয়েশিয়া
ভবিষ্যতে স্থায়ী হওয়ার ইচ্ছা থাকলে কানাডা (PR Friendly), অস্ট্রেলিয়া
তরুণদের জন্য আধুনিক টেকনোলজি ও স্টার্টআপ সুযোগ জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, আমেরিকা

পরামর্শ:

  • যদি আপনার বাজেট কম হয় এবং ইউরোপিয়ান ডিগ্রি চান >  জার্মানি বা  সাইপ্রাস

  • ভালো ইনকাম ও PR চান >  কানাডা বা  অস্ট্রেলিয়া

  • ইংরেজি মাধ্যমে সহজ ভিসা চান >  মালয়েশিয়া

  • স্কলারশিপ ও উন্নত ক্যাম্পাস চান >  ফিনল্যান্ড বা  UK


পরামর্শ ও প্রস্তুতির ধাপ (Tips & Preparation Steps)

  • নিজের লক্ষ্য ঠিক করুন: আপনি কী চান—ভালো জব, PR, স্কলারশিপ না কি বিশ্বমানের ডিগ্রি?

  • দেশ নির্বাচন করুন: খরচ, ভাষা, কাজের সুযোগ, আবহাওয়া—সব মিলিয়ে নিজের উপযোগী দেশ বেছে নিন।

  • ইউনিভার্সিটি ও কোর্স বাছাই করুন: Course content, duration, ranking ভালোভাবে যাচাই করে পছন্দ করুন।

  • IELTS বা TOEFL প্রস্তুতি নিন:

    • IELTS 6.0–6.5 অনেক জায়গায় দরকার

    • ভালো স্কোরে স্কলারশিপের সম্ভাবনা বাড়ে

  • ডকুমেন্ট তৈরি করুন:

    • Academic Transcript

    • Passport

    • SOP (Statement of Purpose)

    • LOR (Letter of Recommendation)

    • CV / Resume

  • সময়মতো আবেদন করুন:

    • আবেদন শুরু করুন কোর্স শুরুর 6–12 মাস আগে

    • ভর্তি ও ভিসার সময় ধাপে ধাপে প্রস্তুতি নিন

  • স্কলারশিপ খুঁজে আবেদন করুন:

    • University website, DAAD, Studyportals ইত্যাদি ব্যবহার করুন

  • ভিসা প্রসেস বুঝে রাখুন:

    • ফান্ডিং প্রমাণ, মেডিকেল, ইন্স্যুরেন্স প্রস্তুত রাখুন


উপসংহার: সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে যে বিষয়গুলো ভাবা উচিত

  •  আপনার লক্ষ্য কী?

      পড়াশোনার পর দেশে ফিরবেন, নাকি বিদেশে থাকতে চান?

  • আপনার বাজেট কতটুকু?

       ফ্রি বা কম খরচে পড়তে চাইলে ইউরোপ, বেশি বাজেট থাকলে কানাডা/অস্ট্রেলিয়া ভালো।

  •  ভাষাগত দক্ষতা আছে কি?

      IELTS/TOEFL ভালো না থাকলে Malaysia বা Cyprus ট্রাই করুন।

  • কোর্সটি আপনার ভবিষ্যতের সাথে মেলে কি না?

       টেকনিক্যাল, বিজনেস, মেডিকেল, বা আইটি—সব বিষয়ের জন্য আলাদা আলাদা দেশ সেরা।

  •  পরিবার বা জীবনধারার সাথে মানাবে কি না?

      আবহাওয়া, ধর্মীয় পরিবেশ, খাদ্য ব্যবস্থা বিবেচনায় নিন।

  •  পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করা যাবে কি না?

      কানাডা, UK, অস্ট্রেলিয়া এ দিক থেকে বেশি সহায়ক।

চূড়ান্ত পরামর্শ:
নিজেকে সময় দিন। গবেষণা করুন। অভিজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলুন। মনে রাখবেন, বিদেশে পড়াশোনা জীবনের বড় একটা সিদ্ধান্ত—সঠিক তথ্য নিয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগোনোই বুদ্ধিমানের কাজ।