কোন ক্লাস থেকে স্কলারশিপ পাওয়া যায়? জানুন বিস্তারিত

23 Jun, 2025

কোন ক্লাস থেকে স্কলারশিপ পাওয়া যায়? জানুন বিস্তারিত

কোন ক্লাস থেকে স্কলারশিপ পাওয়া যায়?

বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের মেধা ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করার জন্য বিভিন্ন ধাপে স্কলারশিপ বা বৃত্তির সুযোগ রয়েছে। অনেকেই জানতে চান – কোন ক্লাস থেকে স্কলারশিপ পাওয়া যায়? এই প্রশ্নের উত্তর নিচে শ্রেণিভিত্তিকভাবে দেওয়া হলো:


১ম শ্রেণি থেকে শুরু

  • প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা (PSC Scholarship):

  • সাধারণত ৫ম শ্রেণি পাশ করার পর শিক্ষার্থীরা বৃত্তির জন্য মনোনীত হয়।
  • এটি সরকারি উদ্যোগে নেওয়া হয় এবং মেধা ও সাধারণ গ্রেডের ভিত্তিতে প্রদান করা হয়।

১ম শ্রেণি থেকে শুরু — প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা (PSC Scholarship) বিস্তারিত

বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে উৎসাহ দেওয়ার জন্য সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে বৃত্তি প্রদান করে থাকে। যদিও বৃত্তি সরাসরি ১ম শ্রেণি থেকে দেওয়া হয় না, তবুও ১ম শ্রেণি থেকেই একটি শিক্ষার্থীকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে হয় এই বৃত্তির জন্য।

 বৃত্তি কোন শ্রেণিতে হয়?

  • প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার (PECE) পর, অর্থাৎ ৫ম শ্রেণি পাশ করার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা ভালো ফলাফল করে, তারা এই বৃত্তি পেয়ে থাকে।

 পরীক্ষার ধরন ও মূল্যায়ন

  • আগে এই পরীক্ষাকে বলা হতো PSC পরীক্ষা, এখন এটি পরিচিত PECE (Primary Education Completion Examination) নামে।

  • শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, প্রাথমিক বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিষয়গুলোতে ভালো পারফরম্যান্স করতে হয়।

  • বৃত্তি মূলত দুটি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয়:

    1. মেধা ভিত্তিক (Talent Pool Scholarship)

    2. সাধারণ গ্রেড ভিত্তিক (General Grade Scholarship)

 বৃত্তির পরিমাণ ও সুবিধা

ক্যাটাগরি মাসিক ভাতা মেয়াদ
মেধা ভিত্তিক ৩০০ টাকা ৩ বছর (৬ষ্ঠ-৮ম শ্রেণি পর্যন্ত)
সাধারণ গ্রেড ২২৫ টাকা ৩ বছর (৬ষ্ঠ-৮ম শ্রেণি পর্যন্ত)
  • শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর এই টাকার সাথে বার্ষিক এককালীন অনুদানও পেতে পারে।

  • এটি সরকারি উদ্যোগে পরিচালিত হয় এবং কোনোরূপ ফি ছাড়াই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

কে এই বৃত্তি পায়?

  • যেসব শিক্ষার্থী ৫ম শ্রেণি পরীক্ষায় উচ্চ ফলাফল করে।

  • যারা সরকার নির্ধারিত নির্দিষ্ট নম্বরের ওপরে অর্জন করে।

  • মেধার পাশাপাশি উপস্থিতি, শৃঙ্খলা, এবং শিক্ষক দ্বারা সুপারিশও বিবেচনায় নেওয়া হয়।

 কখন দেওয়া হয়?

  • সাধারণত, ৫ম শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশের ২-৩ মাস পর, বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।

এই বৃত্তির প্রভাব কী?

  • এটি শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শিক্ষাজীবনে উদ্দীপনা ও আত্মবিশ্বাস তৈরি করে।

  • অনেক দরিদ্র পরিবারের শিশু এই বৃত্তির মাধ্যমে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে নিতে পারে।

  • বিদ্যালয় ও অভিভাবকরাও শিক্ষার্থীদের আরও মনোযোগী করতে উৎসাহ পান।


পরামর্শ:

যদিও বৃত্তি সরাসরি ১ম শ্রেণি থেকে দেওয়া হয় না, তবে ১ম শ্রেণি থেকেই শিশুদেরকে ভালোভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা উচিত। নিয়মিত পড়ালেখা, সময়ানুবর্তিতা, এবং পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সাধারণ জ্ঞান অর্জন – এসবই ৫ম শ্রেণির বৃত্তি পাওয়ার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় আবেদন প্রক্রিয়া (PSC Scholarship Application Process) :

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা (PSC Scholarship) এর জন্য শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে আবেদন করতে হয় না। এটি একটি সরকারি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার (PECE) ফলাফলের ভিত্তিতে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করা হয়।

তবে নিচে ধাপে ধাপে PSC Scholarship-এ কিভাবে সুযোগ পাওয়া যায় এবং কীভাবে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় তা বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:

 প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় আবেদন প্রক্রিয়া (PSC Scholarship Application Process)

 ধাপ ১: স্কুলে নিয়মিত পড়াশোনা ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ

  • শিক্ষার্থীকে অবশ্যই সরকারি বা রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র হতে হবে।

  • ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

 ধাপ ২: প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় (PECE) ভালো ফলাফল

  • PSC বা PECE পরীক্ষার রেজাল্ট এর উপর ভিত্তি করেই বৃত্তির তালিকা তৈরি হয়।

  • উচ্চ নম্বর প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা মেধা তালিকা (Talent Pool) ও কিছু শিক্ষার্থী সাধারণ গ্রেড (General Grade) এ বৃত্তির জন্য মনোনীত হয়।

 আলাদাভাবে অনলাইন বা অফলাইনে আবেদন করতে হয় না

  • শিক্ষার্থীদের কোনো আলাদা form fill-up বা application submission করতে হয় না।

  • শিক্ষা অধিদপ্তর নিজেই ফলাফলের উপর ভিত্তি করে বৃত্তিপ্রাপ্তদের তালিকা তৈরি করে।


 বৃত্তিপ্রাপ্তদের তালিকা কোথায় পাওয়া যায়?

  • প্রতিটি উপজেলা শিক্ষা অফিসে এবং সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা পাঠানো হয়।

  • এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (https://www.dpe.gov.bd/) বৃত্তির ফলাফল প্রকাশ করা হয়।


কখন প্রকাশ হয়?

  • সাধারণত ৫ম শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের ২-৩ মাস পর বৃত্তির তালিকা প্রকাশ করা হয়।


 বৃত্তির টাকা কীভাবে দেওয়া হয়?

  • বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নামে ব্যাংক একাউন্ট খুলে দেওয়া হয়

  • প্রতি মাসে সরাসরি সেই একাউন্টে টাকা পাঠানো হয়।

  • ব্যাংক হিসেবে সাধারণত সোনালী ব্যাংক বা অগ্রণী ব্যাংক ব্যবহৃত হয়।


 সংক্ষেপে:

বিষয় তথ্য
আবেদন করতে হয় কি? না, প্রক্রিয়াটি স্বয়ংক্রিয়
ভিত্তি কী? ৫ম শ্রেণির PECE পরীক্ষার ফলাফল
কোথায় ফল জানা যাবে? DPE ওয়েবসাইট, উপজেলা শিক্ষা অফিস, নিজ বিদ্যালয়
টাকা কিভাবে দেওয়া হয়? ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মাসিক

টিপস:

  • বৃত্তির জন্য শিশুদের ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে।

  • অভিভাবকদের উচিত নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিতি, হোমওয়ার্ক এবং পাঠ্যবইয়ের অগ্রগতির দিকে খেয়াল রাখা।

 

 ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি

  • এই স্তরে সাধারণত সরকারি কোনো বৃত্তি নেই, তবে কিছু NGO বা প্রাইভেট সংস্থা শিক্ষার্থীদের বিশেষ অর্জনের ভিত্তিতে স্কলারশিপ দিয়ে থাকে।
    যেমন:

  • ব্র্যাক, JAAGO Foundation, SAJIDA Foundation

 ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি: এনজিও/প্রাইভেট স্কলারশিপে কীভাবে আবেদন করবেন

যদিও এই স্তরে সরকারিভাবে নিয়মিত কোনো বৃত্তি নেই, তবে ব্র্যাক, JAAGO Foundation, SAJIDA Foundation-এর মতো কিছু বিশ্বস্ত এনজিও ও সংস্থা শিক্ষার্থীদের বিশেষ অর্জন, দরিদ্রতা, কিংবা এলাকার ভিত্তিতে বৃত্তি বা শিক্ষাসাহায্য দিয়ে থাকে।

নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ও আবেদন প্রক্রিয়া দেওয়া হলো:


 ১. ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি (BRAC Education Program)

 কী অফার করে?

  • দরিদ্র ও প্রান্তিক পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলিং সাপোর্ট, বই, ইউনিফর্ম ও মাঝে মাঝে মাসিক উপবৃত্তি প্রদান।

কারা আবেদন করতে পারবে?

  • যাদের পরিবার অতিদরিদ্র (সাধারণত BRAC-এর “Ultra Poor Graduation” তালিকাভুক্ত)।

  • যারা নিয়মিত স্কুলে যায় এবং ভালো ফলাফল করে।

 কীভাবে আবেদন করবেন?

  • সরাসরি BRAC এর স্থানীয় অফিস বা শাখা অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

  • বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বা স্থানীয় BRAC কর্মী আপনাকে সহায়তা করতে পারে।

 ওয়েবসাইট: https://www.brac.net


 ২. JAAGO Foundation Scholarship

 কী অফার করে?

  • সম্পূর্ণ ফ্রি পড়াশোনার সুযোগ (JAAGO School), বই, ইউনিফর্ম ও অন্যান্য শিক্ষাসামগ্রী।

  • কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনলাইন শিক্ষার সুযোগও দেয়।

কারা আবেদন করতে পারবে?

  • অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থী যারা ঢাকার আশেপাশে বা JAAGO এর কার্যকর এলাকায় থাকে।

কীভাবে আবেদন করবেন?

  • সরাসরি JAAGO Foundation-এ যোগাযোগ করে আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করতে হয়।

  • সাধারণত বছর শুরুর আগে ভর্তির সুযোগ দেয়।

 ওয়েবসাইট: https://www.jaago.com.bd
 ইমেইল: info@jaago.com.bd


 ৩. SAJIDA Foundation Scholarship Program

 কী অফার করে?

  • দরিদ্র ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের জন্য মাসিক ভিত্তিতে টিউশন ফি সহায়তা, বই ও শিক্ষাসামগ্রী।

  • কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষা উপকরণ বা অতিরিক্ত কোচিং সাপোর্টও দিয়ে থাকে।

 কারা পাবে?

  • যারা SAJIDA Foundation এর স্বাস্থ্য বা সামাজিক সেবা প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত পরিবারের সদস্য।

 কীভাবে আবেদন করবেন?

  • স্থানীয় SAJIDA অফিস বা কর্মীর মাধ্যমে ফর্ম সংগ্রহ করতে হয়।

  • শিক্ষার্থীর ফলাফল, পরিবারের আর্থিক অবস্থা যাচাই করে বৃত্তি দেওয়া হয়।

 ওয়েবসাইট: https://sajidafoundation.org


 আবেদনের জন্য সাধারণত যা যা লাগে:

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট বিস্তারিত
শিক্ষার্থীর ছবি পাসপোর্ট সাইজ
জন্ম সনদ/জাতীয় পরিচয় শিক্ষার্থীর জন্মসনদ
স্কুল থেকে প্রত্যয়নপত্র শিক্ষার্থীর বর্তমান শ্রেণি ও রেজাল্ট উল্লেখ করে
অভিভাবকের আয় সনদ স্থানীয় চেয়ারম্যান/কমিশনার কর্তৃক সত্যায়িত
আগের বছরের মার্কশিট ভাল ফলাফলের প্রমাণ হিসেবে

 গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:

  • প্রতিটি সংস্থা বছরের নির্দিষ্ট সময়ে আবেদন গ্রহণ করে, তাই সময়মতো তাদের ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজ দেখে আপডেট থাকতে হবে।

  • প্রয়োজনে স্থানীয় এনজিও কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করলে সহায়তা পাওয়া যায়।

  • ভালো রেজাল্ট বজায় রাখলে স্কলারশিপ দীর্ঘমেয়াদেও হতে পারে।


 উপসংহার:

৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য যদিও সরাসরি সরকারি বৃত্তির সুযোগ কম, তবুও দেশব্যাপী অনেক NGO ও ফাউন্ডেশন আছে যারা দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তা করে। সময়মতো তথ্য সংগ্রহ ও সঠিকভাবে আবেদন করলেই আপনি বা আপনার সন্তান এসব স্কলারশিপ সুবিধা পেতে পারেন।

 

 ৯ম ও ১০ম শ্রেণি (জেএসসি/জেডিসি এর পর)

  • জেএসসি/জেডিসি স্কলারশিপ (JSC/JDC Scholarship):

  • জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থীরা সরকারি বৃত্তি পায়।
  • এই বৃত্তি মাসিক নির্দিষ্ট অর্থ দিয়ে সহায়তা করে।

 ৯ম ও ১০ম শ্রেণি: জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষার পর কীভাবে বৃত্তির জন্য আবেদন করবেন?

 কী বৃত্তি পাওয়া যায়?

জেএসসি (JSC) বা জেডিসি (JDC) পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের সরকারি মেধাবৃত্তি দেওয়া হয়। এই বৃত্তি প্রদান করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড


 আবেদন করতে হয় কি?

 না।
জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সরকার স্বয়ংক্রিয়ভাবে শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করে এবং বৃত্তিপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করে।

 অর্থাৎ:

আলাদাভাবে অনলাইন বা অফলাইনে আবেদন করতে হয় না।
শুধু ভালো রেজাল্ট করতে হয় এবং সঠিকভাবে বিদ্যালয়ের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়।


 কীভাবে নির্বাচন করা হয়?

ক্যাটাগরি বিবরণ
 মেধা তালিকা (Talent Pool Scholarship) যারা জেএসসি পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি নম্বর অর্জন করে
 সাধারণ গ্রেড (General Grade Scholarship) অপেক্ষাকৃত ভালো রেজাল্ট করলেও তালিকায় নিচের দিকের শিক্ষার্থীদের জন্য

 বৃত্তির পরিমাণ ও সময়কাল:

ক্যাটাগরি মাসিক ভাতা মেয়াদ
Talent Pool ৪০০ টাকা ২ বছর (৯ম ও ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত)
General Grade ২২৫ টাকা ২ বছর (৯ম ও ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত)
  • এর সঙ্গে বার্ষিক এককালীন অনুদান (Books & Supplies)-ও দেওয়া হয়।


 কখন দেওয়া হয়?

  • জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের ৩-৫ মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড বৃত্তির ফলাফল প্রকাশ করে।


বৃত্তির ফলাফল কোথায় পাওয়া যায়?

  • সংশ্লিষ্ট মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে

  • নিজ বিদ্যালয়ে যোগাযোগ করে

  • জেলা বা উপজেলা শিক্ষা অফিসে তালিকা প্রকাশ হয়

উদাহরণ:


 বৃত্তির টাকা কীভাবে পাওয়া যায়?

  • শিক্ষার্থীদের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়, বিশেষ করে:

    • সোনালী ব্যাংক

    • অগ্রণী ব্যাংক

  • মাসিক বৃত্তির টাকা ইএফটিএন (EFTN) মাধ্যমে সরাসরি একাউন্টে জমা হয়।

  • বিদ্যালয় ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় অ্যাকাউন্ট খোলা ও যাচাই সম্পন্ন হয়।


কী কী ডকুমেন্ট লাগে (অ্যাকাউন্ট খোলার সময়)?

ডকুমেন্ট প্রয়োজন
শিক্ষার্থীর জন্ম সনদ বাধ্যতামূলক
জেএসসি মার্কশিট / ফলাফল যাচাইয়ের জন্য
অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক
পাসপোর্ট সাইজ ছবি ১-২ কপি
বিদ্যালয়ের প্রত্যয়নপত্র কখনো কখনো প্রয়োজন হয়

 গুরুত্বপূর্ণ টিপস:

  1. জেএসসি পরীক্ষার সময় সঠিক রোল নম্বর ও তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করুন।

  2. ফলাফল প্রকাশের পর আপনার নাম বৃত্তি তালিকায় আছে কিনা, তা স্কুল অথবা বোর্ডের ওয়েবসাইটে খুঁজে দেখুন

  3. বৃত্তিপ্রাপ্ত হলে বিদ্যালয়ের সহায়তায় ব্যাংক একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন


 সংক্ষেপে:

বিষয় তথ্য
আবেদন করতে হয় কি? x না
কীভাবে নির্বাচন হয়? জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষার রেজাল্ট ভিত্তিতে
কবে পাওয়া যায়? ফল প্রকাশের ৩-৫ মাসের মধ্যে
টাকা কিভাবে দেওয়া হয়? শিক্ষার্থীর ব্যাংক একাউন্টে মাসিক EFT এর মাধ্যমে
কত বছর পর্যন্ত দেওয়া হয়? ৯ম ও ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত (২ বছর)
 

এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার পর

  • মেধা ভিত্তিক সরকারি স্কলারশিপ:

    • এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা মাসিক ভিত্তিতে বৃত্তি পেয়ে থাকে।

    • উচ্চ শিক্ষার জন্য এটি সহায়ক।

  • প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকেও আবেদন করে অর্থ সহায়তা পাওয়া যায়।

 এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার পর: কীভাবে বৃত্তির জন্য আবেদন করবেন?

এসএসসি (SSC) ও এইচএসসি (HSC) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের সরকারি ও বেসরকারি স্কলারশিপ পেতে পারে। এই বৃত্তিগুলোর মধ্যে কিছু অটোমেটিক (ফলাফলের ভিত্তিতে) প্রদান করা হয়, আবার কিছু আবেদন করে পেতে হয়।


১. সরকারি মেধা বৃত্তি (Merit Scholarship)

কাদের দেওয়া হয়?

  • যারা এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ সহ ভালো নম্বর পায়।

 আবেদন করতে হয় কি?

 না।
এই বৃত্তি বোর্ড স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদান করে, ফলাফলের ভিত্তিতে। আলাদা কোনো আবেদন লাগে না।

 কত টাকা দেওয়া হয়?

ক্যাটাগরি মাসিক ভাতা মেয়াদ
Talent Pool ৪০০-৫০০ টাকা ২ বছর পর্যন্ত
General Grade ২২৫-২৫০ টাকা ২ বছর পর্যন্ত

 কোথায় পাওয়া যায়?

  • শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে বৃত্তিপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ হয়।

  • বিদ্যালয় বা কলেজ থেকেও জানা যায়।


 ২. ডাচ্‌বাংলা ব্যাংক (DBBL) স্কলারশিপ

 কাদের জন্য?

  • দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য, যারা এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে

 কীভাবে আবেদন করবেন?

 আবেদন অনলাইনে করতে হয়:

  • ওয়েবসাইট: app.dutchbanglabank.com/DBBLScholarship

  • আবেদনপত্র পূরণ করে ছবি, মার্কশিট, জন্ম সনদ, এবং অভিভাবকের আয় সনদ স্ক্যান করে সাবমিট করতে হয়।

 সময়সীমা:

  • ফলাফল প্রকাশের ১-২ মাসের মধ্যে আবেদন নিতে শুরু হয়।

 বৃত্তির সুবিধা:

  • মাসিক ২০০০ টাকা, বই ও এককালীন ড্রেস ভাতা সহ।


 ৩. প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট (PMEST)

 লক্ষ্য:

  • দরিদ্র ও অনগ্রসর শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান।

 কীভাবে আবেদন করবেন?

  1. প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ওয়েবসাইটে (https://est.gov.bd) গিয়ে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ফর্ম পূরণ করুন।

  2. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে আপলোড করতে হয়:

    • মার্কশিট

    • ইনকাম সার্টিফিকেট

    • সুপারিশপত্র (স্কুল/কলেজ থেকে)

    • পাসপোর্ট সাইজ ছবি

 সহায়তা:

  • মাসিক ভাতা, বই ক্রয় ও ভর্তি ফি বাবদ সহায়তা।


 ৪. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি (NU Scholarship)

যারা HSC পাশ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, তারা UGC Merit Scholarship বা PM Scholarship-এ আবেদন করতে পারে।

 আবেদন:

  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী আবেদন করতে হয়।


 প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (প্রায় সব বৃত্তির জন্য):

কাগজপত্র প্রয়োজনীয়তা
মার্কশিট (SSC/HSC) বাধ্যতামূলক
পাসপোর্ট সাইজ ছবি ১-২ কপি
জন্ম সনদ/জাতীয় পরিচয়পত্র শিক্ষার্থীর পরিচয় প্রমাণ
ইনকাম সার্টিফিকেট দরিদ্রতা যাচাইয়ের জন্য
সুপারিশপত্র (স্কুল/কলেজ থেকে) কিছু স্কলারশিপে আবশ্যক
ব্যাংক একাউন্ট বৃত্তির টাকা পেতে

 কখন আবেদন করবেন?

বৃত্তির নাম আবেদনের সময়সীমা
DBBL Scholarship ফল প্রকাশের ১-২ মাসের মধ্যে
PM Education Trust প্রতিবছর জানুয়ারি-এপ্রিল (ভিন্ন হতে পারে)
NU Scholarship ভর্তি শেষের পর
সরকারি Merit ফলাফলের ৩-৫ মাস পরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে

 সংক্ষেপে:

বৃত্তির নাম আবেদন লাগে? মাসিক টাকা মেয়াদ
সরকারি মেধা বৃত্তি x না ৪০০-৫০০ টাকা ২ বছর
DBBL স্কলারশিপ হ্যাঁ ২০০০ টাকা ২-৫ বছর
PM শিক্ষা সহায়তা  হ্যাঁ পরিবর্তনশীল ১-৪ বছর
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়  হ্যাঁ ২০০০-৩২০০ টাকা ১-২ বছর


 


 বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে

  • সরকারি ও বেসরকারি স্কলারশিপ:

    • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারে।

  • যেমন: ICT Division Scholarship, DBBL Scholarship, PM Trust, UGC Merit Scholarship ইত্যাদি।

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে স্কলারশিপ আবেদন প্রক্রিয়া বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক ধরনের সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক স্কলারশিপ রয়েছে। এসব স্কলারশিপের মাধ্যমে তারা তাদের পড়াশোনার খরচ মেটাতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে পড়াশোনার সুযোগও পায় বিদেশে।

১. সরকারি স্কলারশিপ (UGC/PM Scholarship)

বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (NU), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (DU), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (CU), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (RU), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (KU) প্রভৃতি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় বিভিন্ন সরকারি স্কলারশিপ পাওয়া যায়।


১.১. UGC স্কলারশিপ (University Grants Commission Scholarship)

UGC স্কলারশিপ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে। এটি মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রদান করা হয়।

 কীভাবে আবেদন করবেন?
  1. এনরোলমেন্ট (Enrolment): বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর, আপনাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনরোলমেন্ট (নথিভুক্তি) করা হয়।

  2. ফলাফল অনুযায়ী বৃত্তি নির্বাচন: ফলাফল দেখে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হয়। উচ্চ ফলাফল, মেধা এবং দরিদ্রতার ভিত্তিতে এ বৃত্তি প্রদান করা হয়।

  3. অ্যাপ্লিকেশন প্রক্রিয়া: যাদের জন্য বৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, তাদের কাছ থেকে কোনো আলাদা আবেদন গ্রহণ করা হয় না।

  4. বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ঘোষণা করা হয় কিভাবে এবং কখন আবেদন করতে হবে।

বৃত্তির পরিমাণ:
  • মাসিক ভাতা: ৩,০০০ টাকা - ৫,০০০ টাকা

  • ১ বছর মেয়াদি বৃত্তি (বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক বা স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের জন্য)


১.২. প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট (PM Education Trust)

এটি প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি ট্রাস্ট, যা দরিদ্র, মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার জন্য সহায়তা প্রদান করে।

 কীভাবে আবেদন করবেন?
  1. ওয়েবসাইট: PM Education Trust এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হয়।

  2. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট:

    • শিক্ষার্থীর ফলাফল এবং ইনকাম সার্টিফিকেট

    • বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রত্যয়নপত্র (অফিশিয়াল সিল এবং স্বাক্ষরসহ)।

  3. ফর্ম সাবমিট: আবেদন ফর্ম ও কাগজপত্র সাবমিট করার পর, শিক্ষার্থীকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

 বৃত্তির পরিমাণ:
  • সাধারণত, ১০,০০০ টাকা - ২০,০০০ টাকা প্রতি মাসে দেওয়া হয়।

  • বৃত্তি বর্ষে ১ বার প্রদান করা হয়।


২. বেসরকারি স্কলারশিপ (Private Scholarship Programs)

বাংলাদেশে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এবং ব্যাংক শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ প্রোগ্রাম প্রদান করে থাকে। এই স্কলারশিপগুলোর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা অব্যাহত রাখতে সহায়তা পায়।


২.১. ডাচ্ বাংলা ব্যাংক স্কলারশিপ (DBBL Scholarship)

ডাচ্ বাংলা ব্যাংক (DBBL) একাধিক স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে, বিশেষ করে মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য।

 কীভাবে আবেদন করবেন?
  1. ওয়েবসাইট: DBBL-এর ওয়েবসাইটে গিয়ে স্কলারশিপ আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে।

  2. আবেদন ফর্ম সাবমিট: নিজের মার্কশিট, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট সাইজ ছবি এবং অন্যান্য ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হয়।

  3. আবেদন প্রক্রিয়া: আবেদন ফর্ম জমা দেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের একটি সাক্ষাৎকার নেওয়া হতে পারে।

 বৃত্তির পরিমাণ:
  • ২০০০ টাকা মাসিক ভাতা প্রদান করা হয়।

  • সাধারণত ৪ বছর বা মেয়াদ শেষে স্কলারশিপ রিনিউ করা যেতে পারে।


২.২. ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ (BRAC University Scholarship)

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ রয়েছে।

 কীভাবে আবেদন করবেন?
  1. বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (https://www.bracu.ac.bd) গিয়ে Scholarships Section এ গিয়ে আবেদন করতে হবে।

  2. পূরক ডকুমেন্টস:

    • এসএসসি, এইচএসসি মার্কশিট।

    • জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম সনদ।

    • আর্থিক অবস্থার প্রমাণ (অভিভাবকের আয় সনদ)।

 বৃত্তির পরিমাণ:
  • স্কলারশিপের মাধ্যমে টিউশন ফি মওকুফ হতে পারে, কিংবা ২৫% - ১০০% ফি প্রদান করা হয়।


৩. বিদেশী স্কলারশিপ (International Scholarships)

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়াশোনা করতে চাইলে বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারে। কিছু জনপ্রিয় স্কলারশিপ প্রোগ্রাম হলো:

  • Chevening Scholarship (UK)

  • Fulbright Scholarship (USA)

  • DAAD Scholarship (Germany)

  • Erasmus Mundus Scholarship (EU)


 কীভাবে আবেদন করবেন?

  1. প্রথমে আবেদনকারীকে সংশ্লিষ্ট স্কলারশিপের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন প্রক্রিয়া জানতে হবে।

  2. আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হয় এবং প্রাসঙ্গিক ডকুমেন্টস যোগ করতে হয়:

    • শিক্ষাগত যোগ্যতা

    • ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার প্রমাণ (IELTS, TOEFL)

    • প্রাসঙ্গিক গবেষণা বা অভিজ্ঞতা

  3. কিছু স্কলারশিপে সাক্ষাৎকার এবং লিখিত পরীক্ষা নেয়া হতে পারে।


 প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

ডকুমেন্ট প্রয়োজনীয়তা
শিক্ষাগত মার্কশিট (SSC/HSC/বিশ্ববিদ্যালয়ের) বাধ্যতামূলক
পাসপোর্ট সাইজ ছবি ১-২ কপি
জন্ম সনদ বা জাতীয় পরিচয়পত্র শিক্ষার্থীর পরিচয় প্রমাণ
ব্যাংক স্টেটমেন্ট দরিদ্রতার প্রমাণ হিসেবে (বিশেষ কিছু স্কলারশিপে)
ইংরেজি ভাষার দক্ষতা IELTS/TOEFL স্কোর (বিদেশি স্কলারশিপে)

 সংক্ষেপে:

বৃত্তির নাম আবেদন প্রক্রিয়া মাসিক টাকা মেয়াদ
UGC স্কলারশিপ স্বয়ংক্রিয় ৩,০০০-৫,০০০ টাকা ১-২ বছর
PM Education Trust ওয়েবসাইটে আবেদন ১০,০০০-২০,০০০ টাকা ১ বছর
DBBL স্কলারশিপ অনলাইনে আবেদন ২০০০ টাকা ৪ বছর
BRAC University অনলাইনে আবেদন টিউশন ফি মওকুফ ১-৪ বছর
 

 বিদেশে পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপ

  • সাধারণত এইচএসসি পাশ করার পর বিদেশি স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা যায়।

    • যেমন:

  • DAAD (Germany)
  • Commonwealth Scholarship
  • Chevening (UK)
  • Fulbright (USA)

 

নিচে ধাপে ধাপে বিদেশে পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপে কীভাবে আবেদন করতে হয় — তা বিস্তারিতভাবে এবং সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করা হলো, যাতে একজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এসএসসি/এইচএসসি বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পর নিজে নিজেই আবেদন করতে পারেন:


 বিদেশে পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপ: বিস্তারিত আবেদন পদ্ধতি

 কোন পর্যায়ে স্কলারশিপ পাওয়া যায়?

পর্যায় আবেদনের সুযোগ
HSC পাশের পর Bachelor's (Undergraduate) স্কলারশিপ
গ্র্যাজুয়েশন শেষের পর Master's / Postgraduate স্কলারশিপ
মাস্টার্স শেষের পর PhD স্কলারশিপ
শিক্ষক/গবেষক Postdoctoral Fellowships

 Step-by-Step আবেদন গাইড:

 ১. লক্ষ্য নির্ধারণ করুন:

প্রথমেই ঠিক করুন:

  • আপনি কোন দেশে পড়তে চান? (UK, USA, Canada, Australia, Germany, Japan, etc.)

  • কোন বিষয়ে পড়তে চান? (Engineering, Business, Public Health, Computer Science, etc.)

  • কোন ডিগ্রি পর্যায়? (Bachelor’s, Master’s, PhD)


 ২. স্কলারশিপ খুঁজুন (Scholarship Search):

দেশ জনপ্রিয় স্কলারশিপ
 UK Chevening, Commonwealth, GREAT Scholarship
 USA Fulbright, Hubert H. Humphrey, Stanford Knight-Hennessy
Canada Vanier, Lester B. Pearson, Trudeau Foundation
 Australia Australia Awards, Destination Australia
 Germany DAAD (German Academic Exchange Service)
 EU Erasmus Mundus Joint Master Degree (EMJMD)

 কোথায় খুঁজবেন?


 ৩. প্রয়োজনীয় যোগ্যতা যাচাই করুন:

প্রতিটি স্কলারশিপের জন্য আলাদা যোগ্যতা (Eligibility Criteria) থাকে, যেমন:

  • GPA/CGPA (HSC/Graduation)

  • IELTS/TOEFL স্কোর (English Proficiency)

  • Statement of Purpose (SOP)/Motivation Letter

  • Recommendation Letter

  • Research Proposal (PhD-এর জন্য)


 ৪. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রস্তুত করুন:

ডকুমেন্ট উদ্দেশ্য
Academic Transcript & Certificate পূর্ববর্তী শিক্ষার প্রমাণ
IELTS/TOEFL স্কোর ইংরেজি ভাষার দক্ষতার প্রমাণ
পাসপোর্ট আন্তর্জাতিক আবেদন
Recommendation Letter শিক্ষকের কাছ থেকে ২টি
Statement of Purpose (SOP) কেন এই কোর্স, কেন এই ইউনিভার্সিটি
CV/Resume একাডেমিক ও অভিজ্ঞতা

 ৫. অনলাইনে আবেদন করুন:

 আবেদন করার সময় যা করতে হয়:

  1. Scholarship বা University Website-এ গিয়ে Online Application ফর্ম পূরণ করুন।

  2. প্রয়োজনীয় ফাইল (PDF) আকারে আপলোড করুন।

  3. কিছু স্কলারশিপে Application Fee লাগে না।

  4. আবেদনের পর Confirmation Mail বা Tracking ID সংগ্রহ করুন।


 ৬. সাক্ষাৎকার ও ফলাফল:

  • অনেক স্কলারশিপে অনলাইন বা ফোনে সাক্ষাৎকার (Interview) হয়।

  • Shortlisted হলে ইমেইল বা পোর্টালের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়।


কখন আবেদন করবেন?

দেশ সময়সীমা
UK (Chevening, Commonwealth) জুলাই - নভেম্বর
USA (Fulbright) ফেব্রুয়ারি - মে
Canada অক্টোবর - জানুয়ারি
Germany (DAAD) জুন - অক্টোবর
Erasmus Mundus অক্টোবর - জানুয়ারি

 স্কলারশিপে কী কী সুবিধা থাকে?

সুবিধা ব্যাখ্যা
পূর্ণ টিউশন ফি পুরো কোর্স ফি ১০০% মওকুফ
মাসিক ভাতা জীবনযাপনের জন্য প্রতি মাসে নির্দিষ্ট অর্থ
ভ্রমণ ব্যয় প্লেন টিকিট ফ্রি
স্বাস্থ্যবীমা মেডিকেল ইন্স্যুরেন্স ফ্রি
আবাসন সুবিধা হোস্টেলে থাকার সুযোগ / বাড়ি ভাড়া সহায়তা

 SOP লিখার টিপস:

  • আপনি কেন এই বিষয়ে পড়তে চান?

  • কেন ওই দেশের ওই বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিয়েছেন?

  • ভবিষ্যতের লক্ষ্য কী?

  • আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতা কীভাবে সহায়ক?

সততা ও স্বচ্ছতা বজায় রেখে ৫০০–৮০০ শব্দে লিখুন।


অতিরিক্ত টিপস:

  • Google এ লিখে খুঁজুন: "Fully Funded Scholarship for Bangladeshi Students 2025 site:.edu"

  • প্রতিটি স্কলারশিপের পুরোনো সফল প্রার্থী (Alumni)-দের SOP বা টিপস পড়ুন।

  • নিজে নিজেই আবেদন করতে শিখুন। দালালের মাধ্যমে নয়।


 সংক্ষেপে:

ধাপ করণীয়
দেশ ও কোর্স ঠিক করুন
স্কলারশিপ খুঁজুন
যোগ্যতা মিলিয়ে নিন
IELTS, SOP, Docs তৈরি করুন
অনলাইনে আবেদন করুন
Interview/Result এর জন্য অপেক্ষা করুন

 সংক্ষেপে — কোন ক্লাস থেকে স্কলারশিপ পাওয়া যায়?

ক্লাস / স্তর স্কলারশিপের ধরন প্রদানকারী
৫ম শ্রেণি প্রাথমিক বৃত্তি সরকার
৮ম শ্রেণি জেএসসি/জেডিসি বৃত্তি সরকার
১০ম শ্রেণি এসএসসি পরবর্তী বৃত্তি সরকার
১২শ শ্রেণি এইচএসসি পরবর্তী বৃত্তি সরকার/প্রাইভেট
বিশ্ববিদ্যালয় মেধা ও আর্থিক ভিত্তিক স্কলারশিপ সরকার/NGO/ব্যাংক
এইচএসসি পাশ বিদেশি স্কলারশিপ আন্তর্জাতিক সংস্থা

 উপসংহার:

ছোটবেলা থেকেই বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্তরে স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ পায়। শুধু ভালো ফলাফল নয়, অনেক সময় আর্থিক অবস্থা, প্রতিবন্ধকতা, কিংবা বিশেষ অর্জনের ভিত্তিতেও বৃত্তি পাওয়া যায়। তাই নিয়মিত বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রোগ্রামের খোঁজ রাখা এবং সময়মতো আবেদন করাই সঠিক পথ।