03 Jul, 2025
বর্তমান সময়ে বিদ্যুৎ বা গ্যাস সংযোগের জন্য নতুন মিটারের আবেদন করা আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে। আগে যেখানে দিনের পর দিন অফিসে ঘুরতে হতো, এখন তা ঘরে বসেই করা যাচ্ছে অনলাইনে। এই প্রক্রিয়া শুধু সময় বাঁচায় না, বরং ঝামেলামুক্ত এবং স্বচ্ছ একটি অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
নতুন বাড়ি বা দোকান নির্মাণের পর বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য
পুরাতন মিটার নষ্ট হয়ে গেলে
বাড়তি লোড ব্যবহারের জন্য আলাদা মিটার চাওয়া
ভাড়াটিয়া বা সাবলেটের জন্য নতুন মিটার প্রয়োজন
ঘরে বসেই আবেদন করার সুবিধা
লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই
ডকুমেন্ট অনলাইনে আপলোড করে সাবমিট করা যায়
আবেদন স্ট্যাটাস অনলাইনে ট্র্যাক করা যায়
দুর্নীতির সুযোগ কমে এবং প্রক্রিয়া হয় স্বচ্ছ
যিনি বৈধভাবে একটি বাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন
যাঁর নাম বা ঠিকানার সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে
১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী বাংলাদেশি নাগরিক
সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানির সেবা এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের জন্য
যেমন:
DPDC (Dhaka Power Distribution Company)
DESCO (Dhaka Electric Supply Company)
REB (Rural Electrification Board)
PGCB, BPDB, ইত্যাদি
আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (সামনে ও পেছনের স্ক্যান কপি)
জমির দলিল / নামজারি কাগজ
হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ
হাউজ বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদন কপি (যদি থাকে)
পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি
আবেদনকারীর স্বাক্ষর স্ক্যান
বিদ্যমান যদি কোনো বিদ্যুৎ বিল থাকে (পূর্ব সংযোগ থাকলে)
প্রথমে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির ওয়েবসাইটে যান, যেমন:
DPDC: https://dpdc.org.bd
DESCO: https://www.desco.org.bd
BREB: https://www.reb.gov.bd
নতুন হলে “Register” অপশনে গিয়ে আপনার নাম, NID, মোবাইল নম্বর ইত্যাদি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন।
পুরনো অ্যাকাউন্ট থাকলে "Login" করুন ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে।
নতুন মিটারের জন্য নির্ধারিত আবেদন ফর্ম পূরণ করুন
যেমনঃ আবেদনকারীর নাম, ঠিকানা, মিটার টাইপ (single/three phase), প্রয়োজনীয় লোড (KW) ইত্যাদি।
এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (NID, দলিল, ছবি ইত্যাদি) স্ক্যান করে আপলোড করুন।
সব তথ্য ঠিকভাবে পূরণ হলে “Submit” বাটনে ক্লিক করে আবেদন পাঠিয়ে দিন।
সাবমিশনের পর আপনি একটি Tracking Number পাবেন, যার মাধ্যমে আপনি আপনার আবেদন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি ট্র্যাক করতে পারবেন।
মিটার ও সংযোগ টাইপ অনুযায়ী খরচ ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত:
সিঙ্গেল ফেইজ সংযোগ: ৫০০-২০০০ টাকা
থ্রি ফেইজ সংযোগ: ৩৫০০-৫০০০ টাকা
(এটি প্রতি কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে)
অনলাইনে আবেদন ফি পেমেন্ট করা যায়ঃ
Bkash / Nagad / Rocket
Debit/Credit Card (Visa, Mastercard)
Online Banking (Dutch Bangla, Brac, etc.)
পেমেন্ট সফল হলে কনফার্মেশন রশিদ পাওয়া যাবে।
আবেদন সাবমিট ও পেমেন্ট হওয়ার পর বিদ্যুৎ অফিস থেকে আপনার দেওয়া তথ্য ও ডকুমেন্ট যাচাই করা হবে।
কেউ কেউ টেলিফোন বা সরাসরি এসে ভেরিফাই করে (বিশেষ করে ঠিকানা ও মালিকানা)।
ভেরিফিকেশন ও অনুমোদনের পর সাধারণত ৭-১৫ কার্যদিবসের মধ্যে মিটার সংযোগ হয়ে যায়।
তবে এলাকা ও কোম্পানি অনুযায়ী সময় কম-বেশি হতে পারে।
প্রশ্ন ১: নতুন মিটার নিতে কী আমি নিজেই অনলাইনে আবেদন করতে পারি?
হ্যাঁ, আপনি নিজেই সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন।
প্রশ্ন ২: অনলাইনে আবেদন করতে কি কোনো অতিরিক্ত চার্জ লাগে?
না, সরকারি নির্ধারিত ফি ছাড়া কোনো বাড়তি চার্জ নেই।
প্রশ্ন ৩: আমি কি আমার ফোন দিয়েই আবেদন করতে পারবো?
হ্যাঁ, স্মার্টফোন দিয়ে ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করা যায়।
প্রশ্ন ৪: কতদিনে মিটার সংযোগ হয়?
সাধারণত ৭–১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সংযোগ দেওয়া হয়।
প্রশ্ন ৫: আবেদন না হলে কী করবো?
আবেদন স্ট্যাটাস চেক করুন। সমস্যা থাকলে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করুন।
কেউ যদি বলে “বাড়তি টাকা দিলে দ্রুত মিটার পাবে”—এমন প্রলোভনে ভুলবেন না।
কোনো অপরিচিত ব্যক্তিকে NID, ছবি বা অর্থ দেবেন না।
শুধুমাত্র সরকারি কোম্পানির ওয়েবসাইটেই আবেদন করুন।
উদাহরণ:
অবশ্যই। আগে যেখানে দিনের পর দিন লাইনে দাঁড়িয়ে আবেদন করতে হতো, এখন তা ১০-১৫ মিনিটেই ঘরে বসে করা যাচ্ছে। এটি সময় সাশ্রয়ী, নিরাপদ এবং ঝামেলামুক্ত।
সব ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আগে থেকেই প্রস্তুত রাখুন
আবেদন ফর্ম পূরণ করার সময় সতর্ক থাকুন
মোবাইল নম্বর ও ইমেইল সঠিক দিন
আবেদন সাবমিট করার পর কনফার্মেশন নম্বর সংরক্ষণ করুন
প্রয়োজনে সরাসরি বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিন বা ই-মেইলে যোগাযোগ করুন
সব ধরনের মিটারের জন্য আবেদন একই রকম নিচে পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটারের জন্য অনলাইন আবেদন দেখানো হচ্ছে।
ওয়েবসাইট লিংক:
https://connection.reb.gov.bd
এটি পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ আবেদন পোর্টাল।
নতুন হলে “নতুন অ্যাকাউন্ট খুলুন” বাটনে ক্লিক করুন
প্রয়োজনীয় তথ্য দিনঃ
নাম
মোবাইল নম্বর
ইমেইল (ঐচ্ছিক)
জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর
পাসওয়ার্ড তৈরি করুন
OTP ভেরিফিকেশন দিয়ে অ্যাকাউন্ট নিশ্চিত করুন
পূর্বে অ্যাকাউন্ট থাকলে সরাসরি লগইন করুন
ড্যাশবোর্ডে গিয়ে “নতুন আবেদন করুন” বা Apply for New Connection বাটনে ক্লিক করুন
আবেদন ফর্ম পূরণ করুনঃ
আবেদনকারীর নাম
ঠিকানা
বিদ্যুৎ লোড (KW)
মিটার টাইপ (Single/Three Phase)
মালিকানা তথ্য
ডিজিটাল কপি (স্ক্যান বা ছবি) ফরম্যাটে নিচের কাগজপত্র দিনঃ
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
জমির দলিল বা বাড়ির মালিকানা কাগজ
পাসপোর্ট সাইজ ছবি
অনাপত্তি সনদ (NOC) – যদি আবেদনকারী ভাড়াটিয়া হন
হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ (যদি থাকে)
সব তথ্য ঠিকভাবে পূরণ হলে আবেদন সাবমিট করুন
সফলভাবে সাবমিটের পর আপনি একটি Tracking ID পাবেন
পরে আপনি "আবেদন ট্র্যাক করুন" অপশন থেকে এই ID দিয়ে অগ্রগতি দেখতে পারবেন
অনলাইনে পেমেন্ট করতে পারবেনঃ
Nagad / bKash / Rocket
Bank Payment (চালান)
সাধারণতঃ ৫০০ – ২০০০ টাকা পর্যন্ত আবেদন ফি হয় (লোড ও মিটার টাইপ অনুযায়ী)
সফল পেমেন্ট হলে একটি পেমেন্ট রিসিট পাবেন
BREB কর্মকর্তারা আপনার ঠিকানা ও কাগজপত্র যাচাই করবেন
যাচাইয়ের পর নির্ধারিত সময়ে আপনার বাড়িতে মিটার সংযোগ দেওয়া হবে
সাধারণত ৭-১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সংযোগ সম্পন্ন হয়
আবেদনের সময় ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সঠিক দিন
ডকুমেন্ট স্পষ্টভাবে স্ক্যান/ছবি তুলে আপলোড করুন
প্রয়োজনে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করুন
যদি আপনি অনলাইনে আবেদন না করে সরাসরি আবেদন করতে চান আপনাকে আবেদন পত্র লিখতে হবে। নিচে নমুনা দেওয়া হলো।
পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটার সংযোগের জন্য আবেদন পত্র অনেক সময় প্রয়োজন হতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি সরাসরি অফিসে আবেদন করেন বা অনলাইনের পাশাপাশি হার্ডকপি জমা দিতে হয়।
অনলাইন আবেদন করলে সাধারণত আলাদা করে আবেদনপত্র লিখতে হয় না, কারণ ফর্ম পূরণটাই আবেদন হিসেবে ধরা হয়।
তবে অনেক পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এখনো ম্যানুয়াল আবেদনপত্র (Hardcopy) চায় — বিশেষ করে নিচের পরিস্থিতিতে:
অনলাইনে আবেদন করে রিসিটসহ অফিসে জমা দিতে বললে
কাগজপত্র যাচাইয়ের সময় আবেদনপত্র জমা দিতে হলে
ভাড়াটিয়া বা তৃতীয় পক্ষের পক্ষে কেউ আবেদন করলে
তারিখঃ ০৩ জুলাই ২০২৫
বরাবর,
ব্যবস্থাপক
[আপনার এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নাম]
[ঠিকানা]
বিষয়: নতুন মিটার সংযোগের জন্য আবেদন।
জনাব,
আমি আপনার এলাকার একজন স্থায়ী বাসিন্দা। আমি আমার বসতবাড়ির জন্য একটি নতুন বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। সংযোগ প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করা হলো।
অতএব, আমার বাসায় একটি বৈধ বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
**আবেদনকারীর নাম:** মোঃ [আপনার নাম]
**ঠিকানা:** [সম্পূর্ণ ঠিকানা]
**মোবাইল নম্বর:** [আপনার নম্বর]
**জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর:** [NID নম্বর]
**প্রয়োজনীয় লোড:** [যেমনঃ ১ কিলোওয়াট]
**মিটার টাইপ:** সিঙ্গেল ফেইজ / থ্রি ফেইজ
সংযুক্তি:
১। জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
২। জমির মালিকানা কাগজ
৩। ছবি – ১ কপি
৪। অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
বিনীত,
স্বাক্ষরঃ ______________
[আপনার নাম]
মিটার টাইপ: সিঙ্গেল ফেইজ / থ্রি ফেইজ মূলত বিদ্যুৎ সংযোগের ধরন বুঝাতে ব্যবহৃত হয়। নিচে সহজভাবে দুইটি মিটার টাইপের পার্থক্য ব্যাখ্যা করা হলো:
সাধারণত বাসাবাড়ি বা ছোট দোকানের জন্য ব্যবহৃত হয়
লোড ক্ষমতা: সাধারণভাবে ১ কিলোওয়াট (KW) থেকে ৫ KW পর্যন্ত
ব্যবহারের উদাহরণ:
ফ্যান, লাইট, টিভি, ফ্রিজ, কম্পিউটার ইত্যাদি
বাসার নরমাল এসি বা ওয়াশিং মেশিন
মিটার চারটি তারে চলে:
১টি লাইভ (L)
১টি নিউট্রাল (N)
এবং কখনো কখনো ১টি আর্থিং (E)
সাধারণত বড় বাসা, ফ্ল্যাট ভবন, ফ্যাক্টরি বা দোকানের জন্য ব্যবহৃত হয়
লোড ক্ষমতা: ৫ KW এর বেশি — যেমন ১০ KW, ১৫ KW বা তার বেশি
ব্যবহারের উদাহরণ:
বড় এসি, পানির পাম্প, হেভি মোটর
অফিস, ওয়ার্কশপ, ফ্যাক্টরি ইত্যাদি
মিটার ছয়টি তারে চলে:
৩টি লাইভ ফেইজ (R, Y, B)
১টি নিউট্রাল (N)
১টি আর্থ (E)
অতিরিক্ত কখনো ১টি কন্ট্রোল তার
আপনার প্রয়োজন | মিটার টাইপ |
---|---|
সাধারণ বাসাবাড়ি | সিঙ্গেল ফেইজ |
বড় ফ্ল্যাট, বাড়ি, মিনি অফিস | থ্রি ফেইজ |
ফ্যাক্টরি, ওয়ার্কশপ | থ্রি ফেইজ |