জাভা ভাষা আবিষ্কারের কারণ  - Origin of Java language in bangle

জাভা ভাষা আবিষ্কারের কারণ - Origin of Java language in bangle

জাভা সুগঠিত, সহজ সরল এবং মানুষের বস্তু-ভিত্তিক ভাষা। এটি যে কেউ খুব দ্রুত আয়ত্ত করতে পারে। কারণ এতে প্রচুর লাইব্রেরি আছে যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে। জাভা ক্রস-প্ল্যাটফর্ম ভাষা। জাভা উইন্ডোজের জন্য অপরিহার্য অংশ নয়, জাভা ছাড়াই উইন্ডোজ স্বয়ং সক্রিয়। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের জাভার প্রয়োজন হয়না যতক্ষণ না আপনি জাভা পিসিতে ইনস্টল করেন। জাভার কার্যকারিতা কারণে এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্টের জন্য জাভা ব্যাপক জনপ্রিয়। জাভা কম্পাইলারটি প্রথম দিকে সান মাইক্রোসিস্টেম দ্বারা তৈরি হয়েছিল এবং এটি সি ল্যাংগুয়েজ দিয়ে তৈরী করা হয়েছিল ও সি++ এর কিছু লাইব্রেরিও এর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু আজকে জাভা শুধু জাভা দিয়েই লেখা হয় কিন্তু জেআরই লেখা হয় সি ধারা। রেডিও, টেলিভিশন, ভিসিআর প্রভাতি ইস্ট্রেনিক যথাংশে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সান মাইক্রোসিস্টেম ১৯৯০ সালে একটি প্রোগ্রাম ভাষা উজানের পরিকল্পনা নেয়। সে লক্ষ্যে গ্রীন প্রজেক্ট (Geen Project) নামে একটি বিশেষ প্রকল্পের আওতায় জেমস গসলিং (James Gosling) এর নেতৃত্বে একদল বিশেষজ্ঞর প্রেট্রিক নউটন (Petrick NaughtOn), ক্রিস ওয়ার্দ (chris Warth), এডওয়ার্ড ফ্রাঙ্ক ( Ed Frank) ও মাইক শেরিডান (Mike Sheridan) র্দীঘ ১৮ মাসের সম্মিলিত গবেষণার ফলে ১৯৯১ সালের শেষের দিকে ওক (Oak) নামে একটি নতুন প্রোগ্রাম ভাষা উদ্ভাবিত হয়। 

গ্রীন প্রজেক্টের প্রধান জেমস গসলিং এর জানালার ধারে একটি ওক গাছ ছিল বলেই হয়তো এর এরূপ নামকরণ করা হয়। ওক ভাষা মূলত কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাথে রেডিও, টেলিভিশন, ভিসিআর, টেলিফোন ইত্যাদি ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের সংযোগ সাধনের উদ্দেশ্যে উদ্ভাবিত হয়। এজন্য সেটি খুব ছোট পরিসরে, অল্প মেমরিতে ব্যবহারের উপযোগী ছিল। আবার বিভিন্ন কোম্পানির তৈরি বিভিন্ন সিপিইউ কর্তৃক ব্যবহারের উপযোগী হওয়ায় তা প্লাটফরম অনির্ভরশীল (Platform Independent) হওয়া আবশ্যক ছিল। তবে সেই সময় ওক নামে আরও একটি প্রোগ্রাম ভাষা চালু থাকায় পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালের দিকে এর নাম পরিবর্তন করে জাভা রাখা হয়। পরবর্তীতে জাভা উন্নয়নে অনেকেই অনেক অবদান রাখেন। তবে গ্রীন প্রজেক্টের প্রধান জেমস গসলিং কে জাভার জনক বলা হয়। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত জাভা তেমন পরিচিত ছিল না এবং এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সান মাইক্রোসিস্টেমস এর আশা অনেকটা ছেড়েই দিয়েছিল। সে সময়ে ইন্টারনেট ও ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের ব্যবহার ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করায় সান মাইক্রোসিস্টেমস-এর প্রোগ্রামারগণ একটি ওয়েব ব্রাউজার নির্মাণের পরিকল্পনা নেন এবং জাত ভাষায় হটজাভা (HotJava) নামক একটি ব্রাউজার নির্মাণে সফল হন। হটজাভা-য় এপলেট প্রোগ্রাম ব্যবহারের সুবিধাসহ জাভা ভার্চুয়াল মেশিন (Java Vertua Mechine-JVM) এর ব্যবহারে জাভার প্রকৃত ক্ষমতা প্রদর্শিত হয়। আর তার পর থেকেই জাভার উত্থান শুরু। জাভা ভাষার জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পায় যখন ১৯৯৫ সনে নেটস্কেপ তাদের নেটস্কেপ ব্রাউজারে JVM সংযুক্ত হয়। এর পর পরই আইবিএম সহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান সান মাইক্রোসিস্টেমসের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে তাদের ওয়েব ব্রাউজারে জাভা সংযুক্ত করে। এমনকি মাইক্রোসফট ও তাদের ব্রাউজার ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে জাভার ব্যবহার অনুমোদন করে। জাভা ভাষায় সি এবং সি++ এর বিঘ্ন সৃষ্টিকারী বৈশিষ্ট্যাবলী বাদ দিয়ে নতুন অনেক বৈশিষ্ট্যের সমন্বয় ঘটান হয়, ফলে জাভা সত্যিকার অর্থে একটি সহজ-সাবলীল, বিশ্বস্ত ও সুবহনীয় প্রোগ্রাম ভাষায় পরিণত হয়। জাভা ভাষার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল প্রাটফর্ম অনির্ভরশীলতা। জাভাই প্রথম অবজেক্ট অরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ভাষা যা নিদিষ্ট কিছু হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ফলে এক কম্পিউটার কিংবা অপারেটিং সিস্টেমে লেখা জাভা প্রোগ্রাম ভিন্ন কমিপউটার কিংবা অপারেটিং সিস্টেমে রান করান সম্ভব হয়। বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্ক প্রোগ্রামিং-এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্ণাঙ্গ অবজেক্ট অরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ভাষা হিসেবে জাভা অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং আগামীতে এর পরিধি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হয়।