পদার্থবিজ্ঞানের ভৌত আলোক বিজ্ঞান অনুশীলনীর গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবন প্রশ্নোত্তর পর্ব ৪

পদার্থবিজ্ঞানের ভৌত আলোক বিজ্ঞান অনুশীলনীর গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবন প্রশ্নোত্তর পর্ব ৪

পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র ভৌত আলোকবিজ্ঞান HSC সৃজনশীল প্রশ্ন ও গাণিতিক সমস্যা সূত্র সমাধানের জন্য অনুধাবন প্রশ্নোত্তর
পদার্থবিজ্ঞানের ভৌত আলোক বিজ্ঞান অনুশীলনীর গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবন প্রশ্নোত্তর পর্ব ৪


প্রশ্নঃ ফ্রনহফার শ্রেনীর অপবর্তন বলতে কী বুঝায়?
উত্তর: ফ্রনহফার শ্রেণীর অপবর্তন : যখন উৎস এবং পর্দা তাদের মধ্যবর্তী বাধা হতে অসীম দূরত্বের মধ্যে অবস্থান করে তখন ঐ বাধার দরুন পর্দায় আলোকের যে অপবর্তন সৃষ্টি হয় তাকে ফ্রনহফার শ্রেনীর অপবর্তন বলে। 



প্রশ্নঃ ফ্রনহফার শ্রেণীর অপবর্তন কিভাবে পাওয়া যায় ? 
উত্তর: কোন উত্তল লেন্সের ফোকাসতলে একটি আলোক উৎস স্থাপন করলে লেন্সে প্রতিসরণের পর সমান্তরাল আলোক রশ্মিশুচ্ছ সেগুলোকে কোন প্রতিবন্ধক বা চিরের উপর আপতিত করে ফ্রনহফার শ্রেনীর অপবর্তন পাওয়া যায়। একক বা দ্বি চির অপবর্তন গ্রেটিং প্রভৃতির সাহায্যে ফ্রনহফার শ্রেণীর অপবর্তন পাওয়া যায়। 



প্রশ্নঃ আলোক তরঙ্গের পোলারায়ন হয় কিন্তু শব্দ তরঙ্গের পোলারায়ন হয় না কেন? 
উত্তর: আলোর সমবর্তনের টুরমালিন পরীক্ষায় কেলাসদ্বয়কে একই অক্ষরেখায় কিন্তু পরস্পর সমকোণে রাখলে দ্বিতীয় কেলাস থেকে কোনো আলো নির্গত হবে না। দ্বিতীয় কেলাসটি সরিয়ে প্রথমটি ঘুরালে আলোর তীব্রতার কোন তারতাম্য ঘটে না কারণ তখন কোনো না কোনো তরঙ্গের কম্পনতল কেলাসের অক্ষের সমান্তরাল হয় ফলে সেগুলো কেলাস অতিক্রম করতে পারে অন্যরা আটকে পড়ে। সুতরাং আলোকের সমবর্তন বা পোলারায়ন ধর্ম সুনিশ্চিতভাবে প্রমান করে যে, আলো এক প্রকার অনুপ্রস্থ তরঙ্গ। অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের সমবর্তন হয় না, কারন অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের ক্ষেত্রে মাধ্যমের অনুগুলোর কম্পনের দিক তরঙ্গের বেগের দিকের সমান্তরালে হয়। শব্দ এক প্রকার অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ বলে এর পোলারায়ন ঘটে না।



প্রশ্নঃ একক রেখা চিত্রে ফেনল ও ফ্রনহফার অপবর্তন ঝালরের মধ্যে কোন পার্থক্য আছে কী? 
উত্তর: একক রেখাচিত্রে ফ্রনহফার অপবর্তন ঝালরে কেন্দ্রীয় পট্টি সর্বদা উজ্জ্বল। কিন্তু ফ্রেনেল অপবর্তন ঝালরের কেন্দ্রীয় পট্টি উজ্জ্বল কিংবা অন্ধকার হতে পারে। যা নির্ভর করে একক রেখাচিত্রে অর্ধ পর্যায়কাল অঞ্চলের সংখ্যার উপর। 



প্রশ্ন : অপবর্তনের চরম ও অবমের শর্ত লিখ ? অথবা, একক রেখাছিদ দ্বারা সৃষ্ট ফ্রনহফার শ্রেণীর অপবর্তন ঝালরের চরম ও অবম বিন্দুর শর্ত কী? 
উত্তর: একক রেখাছিদ্র দ্বারা সৃষ্ট ফ্রনহফার শ্রেণীর অপবর্তন ঝালরের চরম ও অবম বিন্দুর শর্ত গুলো নিম্নরূপ :- 
কোন চিরের বেধ a, আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য λ এবং অপবর্তন কোন  হলে কেন্দ্রিয় উজ্জ্বল পট্রির উভয় দিকে গৌণ চরম বিন্দুগুলির ক্ষেত্রে পথপার্থক্য aSin = (2n+1)   হবে। যেখানে, n = 1, 2, 3 ...... ইত্যাদি। অর্থাৎ পথপার্থক্য   এর বিজোড় গুণিতক হলে উক্ত বিন্দু গুলো হবে চরম। 
আবার, অবম বিন্দুগুলির ক্ষেত্রে পথপার্থক্য, aSin = nλ হবে। যেখানে, n = 1,2,3,ইত্যাদি অর্থাৎ পথপার্থক্য  ​​​​​​​ এর জোড় গুণিতক হলে উক্ত বিন্দু গুলো হবে অবম। 




প্রশ্নঃ দ্বৈত প্রতিসরণ ব্যাখ্যা কর। 
উত্তর: এমন কতকগুলো কেলাস আছে যাদের মধ্যদিয়ে আলোক রশ্মি গমন করলে এটি দুটি প্রতিসৃত রশ্মিতে বিভক্ত হয়। এই পদ্ধতিকে দ্বৈত প্রতিসরণ বলে। রশ্মি দুটির একটি প্রতিসরনের সূত্র মেনে চলে এবং অপরটি মেনে চলে না। প্রতিসরনের সূত্র মেনে চলা রশ্মির নাম সাধারণ রশ্মি এবং মেনে না চলা রশ্মির নাম অসাধারণ রশ্মি। 



প্রশ্নঃ ব্যতিচার ও অপবর্তনের মধ্যে পার্থক্য লিখ। 
উত্তর: ব্যতিচার ও অপবর্তনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরুপ- 
 

ব্যতিচার  অপবর্তন
১. ব্যতিচার সজ্জায় সাধারনত পট্টিগুলোর অপবর্তন বেধ সমান থাকে।  ১. অপবর্তন সজ্জায় পট্টিগুলোর বেধ কখনো সমান থাকে না। 
২. ব্যতিচারের ক্ষেত্রে অন্ধকার পট্টিতে কোন আলো থাকে না।  ২. অপবর্তনের ক্ষেত্রে অন্ধকার পট্টিতেও সামান্য কিছু আলো থাকে। 




প্রশ্নঃ প্রকৃতিতে কোন উৎসই সুসংগত নয়। ব্যাখ্যা কর। 
উত্তর: দুটি উৎস থেকে সমদশায় বা কোনো নির্দিষ্ট দশা পার্থক্যের একই তরঙ্গদৈর্ঘ্যের দুটি আলোক তরঙ্গ নিঃসৃত হলে তাদেরকে সুসংগত উৎস বলে। সাধারনভাবে দুটি আলাদা আলোক উৎসকে সুসংগত উৎস হিসেবে গণ্য করা যায় না, কেননা যেকোনো একটি উৎসের পরমাণু কর্তৃক নিঃসৃত আলোক তরঙ্গ অন্য উৎসের ওপর কোনো ভাবেই নির্ভর করে না। তাই দুটি ভিন্ন উৎস থেকে নির্গত দুটি আলাদা আলোক তরঙ্গ একটি নির্দিষ্ট দশা পার্থক্য বজায় রাখতে পারে না। ফলে উৎস দুটি হতে নির্গত তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ও  বিস্তারে বেশ পার্থক্য দেখা যায়। তাই প্রকৃতিতে কোনো উৎসই সুসংগত নয়।