পদত্যাগ করবেন শ্রীলংকান প্রতিমন্ত্রী অরুন্দিকা ফার্নান্দো

পদত্যাগ করবেন শ্রীলংকান প্রতিমন্ত্রী অরুন্দিকা ফার্নান্দো

শ্রীলংকান প্রতিমন্ত্রী অরুন্দিকা ফার্নান্দো মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। এসএলপিপি সংসদ সদস্যর ছেলে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের কারণে রাগামাতে মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের ছাত্রদের উপর হামলার পরিপেক্ষিতে তিনি পদত্যাগ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২৩ বছর বয়সী প্রতিমন্ত্রী অরুন্দিকা ফার্নান্দোর পুত্র আবিন্দা রান্ডিলা জেহান ফার্নান্দো গতকাল আইনজীবীর মাধ্যমে পুলিশের কাছে  আত্মসমর্পণ করেন।  হামলার ব্যবহৃত আবিন্দা ফার্নান্দোর বিএমডব্লিউ গাড়িটি কালুবোবিলা এলাকায় পুলিশ হিফাযতে নেয়া হয়েছে। হামলার ঘটনার সাথে সন্দেহভাজন জড়িত মোট  সাতজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তাদের হামলা, মারামারি, জোরপূর্বক প্রবেশ, হামলা পরিকল্পনা, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের গাড়ির অপব্যবহার এবং বেআইনি সমাবেশ জনিত কারণে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল রাতেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হোস্টেলে ঢুকেই কলেজের দারোয়ানের উপর ককর্ষ ভাষায় গালাগাল করে পরে এক পর্যায়ে মারধর করতে থাকে। এরই মধ্যে তাদের কয়েক জন হোস্টেলে ঢুকে মেডিসিন বিভাগের রুমের ভিতর লাটি ও স্ট্যাম্প নিয়ে ছাত্রদের উপর মারধর শুরু করে। এরমধ্যে চার জনেরই মাথা ফেটে যায়। পরে হোস্টেলের বাকি ছাত্ররা জাগ্রত হলে তারাও তাদের বন্ধুদের বাঁচাতে এগিয়ে আসে। পরে হামলাকারীদের উপরেই আঘাত আসার সম্ববনা আসবে বলে তারা পালিয়ে যায়। পরে ছাত্ররা ঐখানেই ১ টি গাড়ি জব্দ করে এবং আরেকটি পালিয়ে যায়। হামলাকারীদের তিন জন সেখানেই ধরা পরে। ছাত্রদের মারধর থেকে বাঁচাতে পরে টিচাররা এসে পুলিশ দের ফোন দেয়। পুলিশ এসে ধরা পড়া হামলাকারীদের নিয়ে যায়। ছাত্রদের মধ্যে একজন গুরুত্বর আহত ছিল তাকে নেগম্বো জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। 

প্রতিমন্ত্রীর ছেলেসহ আসামিদের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে ওয়াটতলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। যা ৭ ই ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত বহাল থাকবে। সেখানেই তাদের সনাক্ত করে আরো কেউ বাকি আছে কিনা এবং হামলার পরিকল্পনার উদ্দেশ্য কি ছিল তা সম্পকে প্রশ্ন করা হবে। এখন পর্যন্ত জানা গেছে যে তারা ১০-১৫ জন বহিরাগত লোক রাত ২ টা থেকে ৩ টার মধ্যে রাগামার কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের হোস্টেল ছাত্রদের উপর জোরপূর্বক প্রবেশ করে তাদের উপর হামলা করে। 

পুলিশের তথ্যমতে হোস্টেলের চার জন ছাত্রকে গুরুতরো আহত অবস্থায় রাগামার কলম্বো নর্থ টিচিং হাসপাতালে প্রাথমিক ভাবে ভর্তি করা করা হয়েছিল। পরে আরেকজনের অবস্থা আশঙ্গা জনক খারাপ হলে তাকে নেগম্বো হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হামলাকারীরা হামলার সময় দুইটি গাড়ি ব্যবহৃত করা হয়েছিল, একটি গাড়ি পালিয়ে গেলেও প্রতিমন্ত্রী অরুন্দিকা ফার্নান্দোর ব্যক্তিগত গাড়িটি ধরা পরে যায়। গাড়ির ভিতরে প্রতিমন্ত্রীর দেহ রক্ষাকারীর আইডি কার্ড পাওয়া যায়। তাতে পুলিশের সন্দেহ রয়েছে যে দেহ রক্ষী এই হামলার সাথে জড়িত। তাই ঘটনার ভোরই পুলিশ  প্রতিমন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশি করে। 

প্রতিমন্ত্রীকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান হামলার সাথে যেই জড়িত থাকুক না কেন সকলকেই শাস্তিমূলক ব্যবস্তা দেওয়া হবে। তাছাড়া কেউ যদি প্রমান করতে পারি এই হামলার সাথে আমি জড়িত ছিলাম তাহলে আমিও পদত্যাগ করবো। সাংবাদিকদের প্রশ্নটি ছিল এরূপ যে, আপনার ছেলে ঘটনার সাথে সরা সরি জড়িত এবং আপনার দেহ রাখিয়ও সন্দেহের তালিকায় রয়েছে তাই আপনার নির্দেশ মোতাবেক কি তারা হামলা চালিয়েছে? প্রতিমন্ত্রী আরো বলেছিলেন আমি দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে আমরা ছেলে এই হামলার সাথে জড়িত। আমার ছেলে হোক আর যেই হোক এর বিচার অবসই সুষ্ট ভাবে হবে। আইনের কাছে কাউকেই এক বিন্দু ছার দেওয়া হবে না।  আমি নিজেও এর সুষ্ট বিচার চাই। এই ঘটনার পরথেকেই ছাত্রদের মিছিল চলছে রাস্তা ঘাট বন্ধ করে রেখেছে। সারা রাজ্যের মানুষ প্রতিমন্ত্রী অরুন্দিকা ফার্নান্দোর উপর খুবই ক্ষুদ্দ হয়ে আছে। তাছাড়া প্রতিমন্ত্রীর নিজ দেহ রক্ষী পলাতক অবস্থায় রয়েছে। তাকে পুলিশ এখনও খুঁজে পাইনি।